শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৪৬ am
ডেস্ক রির্পোট : আবাসিক হলগুলোতে সিট বাণিজ্য, হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের হয়রানি, নিপীড়ন এবং শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্য সৃষ্টির প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সোমবার (১৩ জুন) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবন সংলগ্ন প্যারিস রোডে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
অবস্থান কর্মসূচিতে ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল বিভাগের তৃতীয়বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, আমি নিজেই একজন ভুক্তভোগী। হলের বৈধ সিট পেয়েও তিন মাসের মধ্যে উঠতে পারিনি। ছাত্রলীগ আবাসিক হলগুলোতে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বৈধ সিট পাওয়া শিক্ষার্থীদের হল থেকে বের করে দিচ্ছে। আমি জানতে পেরেছি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মদদে তারা এই সাহস পাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি দ্রুত সময়ের মধ্যে এর সমাধান না করে তাহলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো এবং সব হল ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিতে বাধ্য হবো।
আরবি বিভাগের অধ্যাপক ইফতেখারুল আলম মাসউদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মূখ্য উদ্দেশ্য আজকে ধ্বংসের মুখে, যার ফল আমরা ভোগ করছি। বৈধভাবে সিট বরাদ্দ পেয়েও দিনের পর দিন বাইরে থাকতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। হলে অবস্থান না করেও সিট ভাড়া দিতে হচ্ছে তাদের। কোনো শিক্ষার্থী হলে উঠলেও তাদেরকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকী সাংবাদিকরা সত্য তুলে ধরতে গিয়ে মারধর ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। অনেকের ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেও রুম দখল করে আছে এবং ‘প্রচার সেল, প্রকাশনা সেল’ লিখে রুম দখল করে রেখেছে। ফলে একজন হলের মসজিদের ইমামও তার রুম পাচ্ছে না। আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই, যোগ্যতার ভিত্তিতে সিট বণ্টন করুন, না হলে ছাত্র-শিক্ষকের আন্দোলন আরও ভয়াবহ হবে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী মামুন হায়দার বলেন, শুধু আবাসিকতার কথা বললে হবে না। শিক্ষার্থীরা ডাইনিংয়ে কী খায় প্রশাসন কি কখনো খোঁজ-খবর নিয়েছে? নেয়নি। বিশেষ বিশেষ লোকের জন্য বিশেষ বিশেষ রান্না হয় হলে। প্রভোস্টদের প্রত্যেক বেলা ডাইনিংয়ে খাওয়া উচিত। যখন প্রভোস্টরা হলে খেতে যান তখন খাবারের মান পাল্টে যায়। বাংলাদেশ ছাড়া এমন নিকৃষ্টতম কাজ আর অন্য কোনো দেশে হয় কী না আমার জানা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর হোসেন মোল্লা বলেন, আমি আমার মেয়ের কাছে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ভয়াবহতার কথা শুনেছি। মেয়েদের জন্য সান্ধ্য আইন করা হয়েছে, এর পেছনে কারণ কী? এর পেছনে কারণ হলো- বখাটে ছেলেদের হাত থেকে মেয়েদেরকে রক্ষা করা। ক্যাম্পাস তো বখাটে ছেলেদের জন্য নয়। প্রশাসনের আশ্বাসে ছাত্রলীগের অনেক কর্মী বখাটে হয়ে উঠছে। তাদেরকে এখন দমন করতে পারছে না বলে এই সান্ধ্য আইন। এরকম অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। আজকের বাংলাদেশ আমাদেরকে হতাশ করেছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সালেহ আহসান নকিব, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. ইয়ামিন হোসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আখতার মজুমদার, চারুকলা অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুস সালাম, রয়াসন বিভাগের আব্দুল্লাহ শামসহ শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : জাগোনিউজ