শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩০ pm
ডেস্ক রির্পোট : বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান রেজাউল করিম। বয়স সবেমাত্র ৩৫। ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী ছিলেন। পাশাপাশি এলাকায় ভালো ফুটবলার হিসেবেও পরিচিতি ছিল ব্যাপক। স্বপ্ন ছিল বড় ফুটবলার হওয়ার। তবে ভালো ফুটবলার না হলেও পড়াশোনা শেষ করে অভাবি সংসারের হাল ধরেছিলেন একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি পেয়ে। কিন্তু হঠাৎ করেই হয়ে পড়েন অসুস্থ। চিকিৎসা করাতে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা যায় দুটো কিডনিই নষ্ট রেজাউলের।
দ্রুত সময়রে মধ্যে অন্তত একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে না পারলে বাঁচানো যাবে না পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের পল্লী চিকিৎসক তোরাব আলীর একমাত্র ছেলে রেজাউলকে।
ছেলের এমন পরিস্থিতে মন কাঁদছে মায়ের। ছেলের মুখে হাঁসি দেখতে নিজের কিডনি দিতে প্রস্তুত মা শেফালি খাতুন। তবে অর্থাভাবে কিডনি প্রতিস্থাপন করাতে পারছেন না অসহায় পরিবারটি। জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি রেজাউল।
জানা গেছে, এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট রেজাউল। মায়ের অসুস্থতার কারণে এসএসসি পাশ করার পরই বিয়ে করেন এই যুবক। এদিকে পল্লি চিকিৎসক বাবাও বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়েন। রেজাউল পড়াশোনার পাশাপাশি দিনমজুরি করেছেন একসময়। দিনমজুরি করে স্নাতক পাশ করা রেজাউল ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন বাদ দিয়ে হাল ধরেন সংসারের। একটি ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেন। পাশাপাশি ঋণ করে বাড়িতে গরুর খামার দেন। সবকিছু ভালোই চলছিল। বাবা-মা, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে সুখেই কাটছিল দিন।
কিন্তু ২০১১ সালে হঠাৎ করেই জ্বর বমিসহ নানা উপসর্গ দেখা দেয় রেজাউলের। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক দেখান। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দুটি কিডনিই নষ্ট রেজাউলের- এমনটা জানান চিকিৎসক। দীর্ঘ সময় চিকিৎসা করাতে গিয়ে এখন পর্যন্ত দশ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। গরুর খামার থেকে শুরু করে সবকিছু বিক্রি করে আজ নিঃস্ব পরিবারটি। হয়ে পড়েছেন ঋণগ্রস্ত। বৃদ্ধ বাবার পক্ষে সম্ভব নয় ছেলের চিকিৎসা করানো।
বর্তমানে ঢাকার সিকেডি অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন রেজাউল। কিডনি ডায়ালিসিস করে কোনোমতে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে এই যুবককে। কিন্তু ধীরে ধীরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে রেজাউলের। অনন্ত একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা গেলে প্রাণে বাঁচবে রেজাউল-এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসক।
কিডনি প্রতিস্থাপন থেকে শুরু করে আনুষাঙ্গিক চিকিৎসা ব্যয় হবে প্রায় ১০ লাখ টাকা। এত টাকা পরিবারটির পক্ষে কোনোমতেই জোগাড় করা সম্ভব নয়।
কান্নাজড়িত কন্ঠে মা শেফালী খাতুন যুগান্তরকে বলেন, আমি এক হতভাগিনী মা। কিডনি দিতে চেয়েও শুধুমাত্র প্রতিস্থাপনের খরচ জোগাড় করতে পারছি না। টাকার অভাবে ছেলে আমার এখন মৃত্যু পথযাত্রী। সবার প্রতি অনুরোধ, আমার ছেলেকে বাঁচান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাহার আলী যুগান্তরকে জানান, পরিবারটি খুব অসহায়। জানতে পেরেছি তার (রোজাউল) মা কিডনি দিতে চান। আসলেই তাদের পক্ষে এতো টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। আমি বিষয়টি জানার পর সমাজসেবায় আবেদন করতে বলেছি। রেজাউলকে বাঁচাতে সমাজের সকল বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তিনি।
এই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বারে রেজাউলের চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা করা যেতে পারে। অগ্রহী ব্যাংক, চাটমোহর শাখা। সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর- ০২০০০০৭৪৯৬৩৮৭। সূত্র : যুগান্তর