মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৫৫ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দীর্ঘ প্রতিক্ষায় বঙ্গবন্ধু রেল সেতুতে চলল পরীক্ষামূলক ট্রেন জামিনে বেরিয়ে আবারও গ্রেপ্তার রাজশাহী-৬ আসনে সাবেক এমপি রাহেনুল তানোর-গোদাগাড়ীতে শরিফ উদ্দিনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি বাঘায় দিনমুজুরকে গলা কেটে হত্যা, ভায়রা জেলহাজতে তানোরে সিএনজি বন্ধ করে চালকদের মানববন্ধন, দুর্ভোগে যাত্রীরা পবায় গাঁজাসহ এক দম্পত্তি গ্রেপ্তার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ কর্মীসহ ১৪ জন গ্রেপ্তার নাচোলের কৃতিসন্তান সানাউল্লাহ নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসেবে শপথ গ্রহণে এলাকাবাসীর অভিনন্দন রাজধানীতে প্রেসক্লাবে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক, যান চলাচল বন্ধ একতরফা নির্বাচন গায়ের জোরে করতে চাই না কেউ : নতুন সিইসি গাজীপুরে দুর্ঘটনায় নিহর শিক্ষার্থী সাকিবের লাশ রাজশাহীতে দাফন কম্পিউটার কী বোর্ডের মাধ্যমে রাজশাহীতে পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষার লিখন পঠন কার্যক্রম উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে প্লাজমা ফাউন্ডেশনের ৯ম তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন আমবাগান থেকে বাঘায় দিনমুজুরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার নগরীতে জেলা কৃষকলীগ সভাপতি তাজবুল ইসলামসহ ১৫ জন গ্রেপ্তার নাচোলে মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের ১৪৮তম শাখা উদ্বোধন গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা : সাকি তানোরে আলু বীজে মহাসিন্ডিকেট, দ্বিগুন দামে দিশেহারা চাষীরা! দুর্গাপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রফিক সরকারের দাফন সম্পন্ন দুর্গাপুরে বিএনপি’র আয়োজনে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উদযাপিত
নগরীতে ভুঁইফোড় হাসপাতাল-ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

নগরীতে ভুঁইফোড় হাসপাতাল-ক্লিনিকের ছড়াছড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) ঘিরে রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে নানা নামের ভুঁইফোড় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারি সব শর্ত উপেক্ষা করে গড়ে উঠা এসব হাসপাতাল ক্লিনিকে কখনো ভুল চিকিৎসা আবার কখনো অপচিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন রোগি।

রাজশাহীতে ঠিক কতটা অনিবন্ধিত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে তার হিসেব নেই খোদ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। তবে দেশের সকল অনিবন্ধিত ক্লিনিক-হাসপাতাল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশনার পর নড়েচড়ে উঠেছে রাজশাহীর স্বাস্থ্য দফতর। ইতিমধ্যে রাজশাহীতে অনিবন্ধিত ক্লিনিক-হাসপাতালের তালিকা প্রস্তুতের কার্যক্রম শুরু করেছে রাজশাহী সিভিল সার্জন দফতর।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, রাজশাহী জেলায় অনিবন্ধিত কতটি ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে তার হিসেব তাদের কাছে নেই। তবে তারা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশনার পরপরই রাজশাহী নগর ও উপজেলায় এই সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের জন্য কাজ শুরু করেছেন। তবে তাঁর দাবি, ‘নিবন্ধন না নিয়ে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালাচ্ছে এমন সংখ্যা রাজশাহীতে তেমন নেই’।

সিভিল সার্জন জানান, অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নিবন্ধন নবায়ন করেন নি। অনেকে আবেদন করেছেন। যারা নিবন্ধন নবায়ন করেন নি এবং আবেদনও করেন নি তাদের তালিকা প্রস্তুত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। রাজশাহীতে নিবন্ধিত ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকাও তার কাছে নেই। তিনি জানান পরবর্তীতে এ বিষয়ে জানানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দেশের সব অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ সময়ের মধ্যে ক্লিনিক বন্ধ করা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। প্রয়োজনে অভিযান পরিচালনা করার কথাও বলা হয়েছে।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে গত কয়েক বছরে ব্যাংঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার। দেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্যেশে এসে দালালদের খপ্পরে পড়ে ওইসব ক্লিনিকে ভর্তি হয়েই রোগীরা হরহামেশায় পড়েন বিপাকে। এসব হাসপাতালে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার ছাড়াও নানা ধরনের অপারেশন করা হয়। ফলে রোগী মৃত্যুর মুখে পতিত হয়। মাঝে মাঝেই এসব হাসপাতালে মৃত্যু হচ্ছে নবজাতক কিংবা প্রসূতি মায়ের।

তারপরও এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয় না সিভিল সার্জনের কার্যালয়। অভিযোগ রয়েছে, সিভিল সার্জনের কার্যালয়কেই মাসে মাসে ঘুষ দিয়ে চলে নামসর্বস্ব এসব হাসপাতাল-ক্লিনিক। তাই চোখের সামনে অনুমোদনহীন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক চললেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কেউ কখনও এগুলো পরিদর্শনেও যান না।

সাম্প্রতিক রাজশাহীতে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ঠিক কতজন নবজাতক বা প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে তার হিসাব রাখেনি কেউ। বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের কার্যালয়, সিভিল সার্জনের কার্যালয় এবং থানায় খোঁজ নিয়েও এ তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে পুলিশ বলছে, মাঝে মাঝেই প্রসূতি বা নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে নগরীর লক্ষ্মীপুরের হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে হট্টগোল হয়। কখনও কখনও ভাংচুরও করেন রোগীর বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা। এক সময় রোগীর স্বজনদের সঙ্গে হাসপাতাল-ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সমঝোতা হয়ে যায়।

রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানা পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ‘রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় মাঝে মাঝেই বিক্ষুব্ধ স্বজনেরা লক্ষ্মীপুরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভাঙচুর করে। পুলিশ গিয়ে তখন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। কিন্তু এসব হাসপাতাল-ক্লিনিকের বিরুদ্ধে যাদের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তাঁরা নেন না।’ পুলিশের ভাষ্য, নগরীর ‘লক্ষ্মীপুরে কতটা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিকর সেন্টার আছে তার হিসাব তাঁরা দিতে পারবেন না, যাদের এটা দায়িত্ব।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীতে অনুমোদন পাওয়া বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৬৯টি। এর মধ্যে হাসপাতাল ৫৩টি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১১৬টি। লাইসেন্স না থাকলেও আরও অন্তত শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক চলছে। এগুলোর বেশিরভাগই রাজশাহী শহরের লক্ষ্মীপুর এলাকায়। সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের একেবারেই নাকের ডগায় এসব হাসপাতাল-ক্লিনিক চললেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

ফলে হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোর দালালেরা রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে রোগীরা প্রতারিত হন। ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুও হয়। মাঝে মাঝে পুলিশ এবং র‌্যাব রামেক হাসপাতাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে দালালদের গ্রেফতার করলেও লাভ হয় না। কয়েকদিন পর তাঁরা ছাড়া পেয়ে আবারও একই কাজে জড়িয়ে যান।

রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, ইতিমধ্যে রাজশাহীতে অনিবন্ধিত ক্লিনিক-হাসপাতালের তালিকা প্রস্তুতের কার্যক্রম শুরু করেছে। নির্দেশনা মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র : যুগান্তর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.