সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৩৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোরে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তার (ডিজিএম) বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। গত ২৪ মে মঙ্গলবার তাঁর এমন বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে স্থানীয় কৃষকেরা ডাকযোগে স্থানীয় সাংসদ, বিদ্যুৎ এবং কৃষি মন্ত্রণালয় ও পল্লী বিদ্যুতের জিএম বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় অবৈধভাবে স্থাপন করা ৩হর্স থেকে ৫হর্স পাওয়ারের মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা অর্থবাণিজ্য করছে। এসব অবৈধ মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ায় কর্মকর্তাদের পকেটভারী হলেও বিএমডিএ’র গভীর নলকুপ সেচ প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে।
এতে কৃষকদের মধ্যে তীব্রক্ষোভ ও অসন্তোস ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর গভীর নলকুপ অপারেটর বিজেন কর্মকার বাদি হয়ে অবৈধ মটরের সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী ও তানোর পল্লী বিদ্যুৎ (ডিজিএম) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, কৃষি মন্ত্রণালয় ও সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে জেল নম্বর ৮৫ ও ৮৮ নম্বর দাগে অবস্থিত গভীর নলকুপ স্কীমের ভিতরে (কমান্ড এরিয়ায়) ৫ হর্স পাওয়ারের অবৈধ মটর স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সেচ বাণিজ্যে করছে তানোর শিবতলা গ্রামের বাসিন্দা লুৎফর রহমানের পুত্র গোলাম রাব্বানী ওরফে লেলিন।
এদিকে, ২৪ মে কৃষকদের করা অভিযোগে বলা হয়, উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের (ইউপি) নারায়নপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত আবের গাইনয়ের পুত্র সাবের আলী গ্রামের বটপুকুর মাঠে সেচ নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিএমডিএ’র গভীর নুলকুপের কমান্ড এরিয়ায় ৫ হর্স পাওয়ারের অবৈধ সেচ মটর স্থাপন করেছেন।
অপরদিকে পল্লী বিদ্যুতের কতিপয় কর্মকর্তা কথিত লাইনম্যানের (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান) মাধ্যমে দেড় লাখ টাকা আর্থিক সুবিধা নিয়ে অবৈধ মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে। এতে এলাকার কৃষকদের মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়, বিগত ২০১৪ সালে কৃষি মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করেন। পরিপত্রে বলা হয় বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির সংকট মোকাবেলায় সেচ মটর স্থাপন নিরুৎসাহিত (বন্ধ) করে তা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা সেচ কমিটিকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। অথচ ২২ মে রোববার সেই নির্দেশনা লঙ্ঘন করে অবৈধ সেচ মটর স্থাপন করা হয়েছে। আবার সেই মটরে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে সংযোগ দেয়া হয়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা সেচ কমিটির এক সদস্য বলেন, যেখানে মটর বসানোর সুযোগ নাই, সেখানে মটরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয় কিভাবে?
এবিষয়ে সাবের আলী বলেন, পল্লী বিদ্যুতের পরামর্শে তারা মটর স্থাপন ও বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন, এতে তাদের দেড় লাখ টাকা খরচ হয়েছে। এখানে তো অনিয়মের কিছু নাই।
এবিষয়ে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী মাহাফুজুর রহমান বলেন, গভীর নলকুপের কমান্ড এরিয়ায় সেচ মটর স্থাপনের কোনো সুযোগ নাই। বিদ্যুৎ সংযোগের তো প্রশ্নই উঠে না। তিনি আরও বলেন, অবৈধ মটরগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পল্লী বিদ্যুৎকে বলা হয়েছে। তবে, তারা আমাদের কথার গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
এবিষয়ে পল্লীবিদ্যুৎ তানোরের ডিজিএম জহুরুল ইসলাম বলেন, আপনারা (সাংবাদিক) অভিযোগ দেন, অভিযোগ না পেলে আমরা কি করবো। আর এসব নিয়ে আপনারা অহেতুক বাড়াবাড়ি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, এবিষয়ে তিনি কোনো অভিযোগ পান নাই। তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজকের তানোর