সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৩৮ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে থানা মসজিদের ইমামের প্রতারণায় এবার আইনি নোটিশ জারি করা হয়েছে। আজ (২২ মে) রোববার সকালে রাজশাহী জজকোর্টের এ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন তাঁর মক্কেল প্রভাষক ইসহাক আলী ও আবুল কালাম আজাদের পক্ষে এ আইনি নোটিশ জারি করেন তিনি।
নোটিশে বলা হয়, তিনশ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র শিক্ষার্থীদেরকে প্রলোভনে আকৃষ্ট করে তাঁর আলাদা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান করাচ্ছেন মামুনুর রশিদ। এতে করে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চরমভাবে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এনিয়ে সম্প্রতি গেলো মে মাসের ১১ তারিখ বুধবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রভাষক ইসহাক আলী ও আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে তানোর থানা চত্বরে অবস্থিত মসজিদের পেশ ইমাম প্রতারক মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এহেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সুরহার লক্ষ্যে ভাইস চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উভয় পক্ষকে ১২ মে নোটিশ প্রদান করা হয়। নোটিশে ১৮ মে বুধবার বেলা সাড়ে ১১ ঘটিকায় শুনানি ডেট ধার্য্য ছিল। কিন্তু ওই ধার্য্য তারিখে প্রতারক মামুন উপস্থিত হয়নি। ফলে (২২ মে) রোববার বিকেলে তাদের নিযুক্ত এ্যাভোকেটের মাধ্যমে আইনি নোটিশ জারি করেন ইসহাক ও আজাদ।
প্রসঙ্গ, বিগত ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে তানোর ব্র্যাক মোড় নামক স্থানে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন ইসহাক, আজাদ ও মামুন। ওই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার শুরুতে প্রথমে তাঁরা তিনজনই সমপরিমান অর্থ ব্যয় করেন। তবে, ইসহাক ও আজাদ কলেজে চাকুরী করার সুবাদে প্রতিষ্ঠানটির আয়-ব্যয় ও সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মামুন। এসুযোগে ছাত্র-ছাত্রীর বেতন-ভাতা ছাড়াও যাবতীয় ফি উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেন তিনি। এক্ষেত্রে ইসহাক ও আজাদকে আজও কোন হিসেব দেয়া হয়নি। এঅবস্থায় করোনাকালে ‘ব্র্যাক মোড়’ থেকে কৌশলে মামুন তানোর কুঠিপাড়াস্থ মহল্লায় ভাড়া বাসায় ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র সব আসবাবপত্র স্থানান্তর করেন।
এরপর থেকে নিজেকে গুটিয়ে ইসহাক ও আজাদকে এড়িয়ে চলতে থাকেন মামুন। তার চলাফেরায় সন্দেহের সৃষ্টি হলে আয়-ব্যয়ের হিসেব চাওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে থানাকালিন সময়ে তিনি কোন হিসেব না দিয়ে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে পৃথক প্রতিষ্ঠান তৈরীর পরিকল্পনা করে সেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। মামুনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর সদরে। বর্তমানে বেশ কয়েক বছর ধরে তানোর থানা মসজিদের ঈমামের দায়িত্বে রয়েছে তিনি।
এদিকে, মামুন অব্যাহতি নেয়ার আগে চলতি বছরের ২৮ মার্চ ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দেন তিনি। ওই অঙ্গীকারনামা শর্তে বলা হয়, মামুন নতুন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তানোর উপজেলার কোথাও খুলে পরিচালনা করতে পারবেন না। এছাড়াও ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে প্রলোভন দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে নিতে পারবেন না। কিন্তু তিনি এসব প্রতিশ্রুতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থী তার নতুন প্রতিষ্ঠানে নিয়েছেন বলে আইনি নোটিশ দাবি করেন প্রভাষক ইসহাক ও আজাদ। ইসহাকের বাড়ি তানোর পৌর এলাকার জিওল-চাঁদপুর মহল্লায়। আর আজাদের বাড়ি মথুরাপুর মহল্লায়।
এব্যাপারে তানোর থানা মসজিদের ইমাম মামুনুর রশিদ বলেন, স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার করে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। কিন্তু বর্তমানে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। একারণে আমি আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছি। তাঁর ওই প্রতিষ্ঠান বন্ধের জন্য এ্যাডভোকেটের মাধ্যমে আইনি নোটিশ পেয়েছেন তিনি। আজকের তানোর