সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৫৮ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে এক মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকার ভঙ্গ করে প্রভাব খাটিয়ে আলাদা তার প্রতিষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীকে ভাগিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ নামক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
এনিয়ে সম্প্রতি গেলো ১১ মে বুধবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রভাষক ইসহাক আলী ও আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে তানোর থানা চত্বরে অবস্থিত মসজিদের পেশ ইমাম প্রতারক মামুনুর রশিদের বিরুদ্ধে তানোর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০১৫ সালের জানুয়ারী মাসে তানোর ব্র্যাক মোড় নামক স্থানে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন প্রভাষক ইসহাক আলী, আবুল কালাম আজাদ ও মামুনুর রশিদ মামুন। ওই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার শুরুতে প্রথমে তাঁরা তিনজনই সমপরিমান অর্থ ব্যয় করেন। তবে, ইসহাক আলী ও আবুল কালাম আজাদ কলেজে চাকুরী করার সুবাদে প্রতিষ্ঠানটির আয়-ব্যয় ও সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মামুনূর রশিদ মামুন। এসুযোগে ছাত্র-ছাত্রীর বেতন-ভাতা ছাড়াও যাবতীয় ফি উত্তোলন করে আত্নসাৎ করেন। এক্ষেত্রে ইসহাক ও কালামকে আজও কোন হিসেব দেয়া হয়নি। এঅবস্থায় করোনাকালে ‘ব্র্যাক মোড়’ থেকে কৌশলে মামুন তানোর কুঠিপাড়ায় নেয় ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র সব আসবাবপত্র।
এরপর থেকে নিজেকে গুটিয়ে ইসহাক ও কালামকে এড়িয়ে চলতে থাকেন মামুন। তার চলাফেরায় সন্দেহের সৃষ্টি হলে আয়-ব্যয়ের হিসেব চাওয়া হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে থানাকালিন সময়ে তিনি কোন হিসেব না দিয়ে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গোপণে ভাগিয়ে নিয়ে পৃথক প্রতিষ্ঠান তৈরীর পরিকল্পনা করে সেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেন তিনি। মামুনের গ্রামের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর সদরে। বর্তমানে বেশ কয়েক বছর ধরে তানোর থানা মসজিদের ঈমামের দায়িত্বে রয়েছে তিনি।
এদিকে, মামুন অব্যাহতি নেয়ার আগে চলতি বছরের ২৮ মার্চ ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দেন তিনি। ওই অঙ্গীকারনামা শর্তে বলা হয়, মামুনুর রশিদ মামুন নতুন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তানোর উপজেলার কোথাও খুলে পরিচালনা করতে পারবেন না। এছাড়াও ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র কোনো শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে প্রলোভন দিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানে নিতে পারবেন না। কিন্তু তিনি এসব প্রতিশ্রুতির তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’র শিক্ষক ও শিক্ষার্থী তার নতুন প্রতিষ্ঠানে নিয়েছেন।
এবিষয়ে প্রভাষক ইসহাক আলী ও আবুল কামাল আজাদ বলেন, আমরা মামুনকে বিশ্বাস করে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলাম। মামুন অঙ্গীকারনামার চুক্তি ভঙ্গ করে কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার নাম ভাঙ্গিয়ে দাপটের সঙ্গে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে তারা জেনেছেন, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখিত অঙ্গীকারনামা ভঙ্গ করা দন্ডনীয় অপরাধ। এজন্য মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিত বলে দাবি করেন তারা।
এনিয়ে তানোর থানা মসজিদের ইমাম মামুনুর রশিদ বলেন, স্ট্যাম্পে অঙ্গিকার করে ‘আল-হেরা ইসলামি একাডেমি’ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। কিন্তু বর্তমানে তাদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। একারণে আমি আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছি, এটা দোষের কিছু নয়। আমাদের মধ্যে একটা ভাল সম্পর্ক ছিল। এখন সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটেছে। তাই বলে কি আমি আলাদা শিক্ষা খুলতে পারি না বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
ব্যাপারে তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, অভিযোগ পেয়ে ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিককে সমাধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আশাকরি, সুষ্ঠু সমাধান হবে।
এবিষয়ে তানোর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিকী জানান, আগামী বুধবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বাদী ও বিবাদীকে নিয়ে বসে সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। আজকের তানোর