মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪০ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে লাইসেন্স ছাড়াই রাজশাহীতে অবৈধভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে সিটিআই কোম্পানীর নামে ফিড। নিম্নমানের এই ফিড নিয়ে প্রতিরিতি হচ্ছেন খামার মালিকরা। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির রাজশাহীর জোনাল অফিসের ইনচার্জ ইস্তিয়াক আহাম্মেদ ডালিমের বিরুদ্ধেও রয়েছে নানা অভিযোগ।
বিভিন্ন মার্কেটিং অফিসার নিয়োগের সময় তাদের কাছে থেকে ব্যাংকের সাদা চেকসহ সরকারি স্ট্যাম্পে লিখিত ডিড নেয়ার অভিযোগ রয়েছে ডালিমের বিরুদ্ধে। সরকারি বিধি বিধান না মেনে ব্যবসা করে সিটিআই ফিড কোম্পানি রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে এবং প্রতারণা করছে বলে মনে করেন ভোক্তারা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ফিড কোম্পানির সাইন বোর্ডে পশুখাদ্য বাজারে সরবরাহ করে আসছে সিটিআই। রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকায় নিয়োগ দিয়েছে একাধিক মার্কেটিং অফিসার। তাদের মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দিয়ে লাইসেন্স ছাড়াই বাজারে প্রাণী খাদ্য সরবরাহ করে আসছে। রাজশাহী জোনাল অফিসের অধীনে ২০ থেকে ৩০ জন মার্কেটিং অফিসার রয়েছে।
কোম্পানির গোপন তথ্য যেন বাইরে কাউকে বলতে না পারে এ জন্য তাদের কাছে থেকে সাদা চেক নিয়ে জিম্মি করে রাখে ডালিম। রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে একাধিক ডিলার। ডিলারদের মাধ্যে এসব অবৈধ পশুখাদ্য বিক্রি করে কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন তিনি।
জানা গেছে, সরকারি অনুমোদন ও ব্যবসার লাইসেন্স ছাড়াই তারা সোনালী স্টার্টার ও সোনালী গ্রোয়ার ফিড নামে সিটিআই ফিড কোম্পানি তৈরী করছে গরু, মাছ ও মুরগির খাবার। অবৈধভাবে সরকারের চোখ ফাঁকি দিয়ে শুধু পশুখাদ্য হিসেবে হাজার হাজার বস্তা ফিড বাজারে সরবরাহ করছে কোম্পানিটি।
দীর্ঘদিন যাবত তারা বিভিন্ন এলাকায় মার্কেটিং অফিসারদের মাধ্যে ডিলার নিয়োগ দিয়ে এসব পশুখাদ্য বাজারজাত করে আসছে। এ প্রতিষ্ঠানের বড় একটি গুদাম রয়েছে মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া হাটে এলাকায়। গুদামসহ বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার বস্তা অবৈধ পশুখাদ্য বিক্রির জন্য গুদামজাত করে মজুদ করে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
কেউ যেন সন্দেহ করতে না পারে সেজন্য এসব পশুখাদ্যের বস্তায় প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেয়া রয়েছে পরিস্কারভাবে। তবে, সরকার অনুমোদিত একটি লাইসেন্স নম্বর থাকার কথা থাকলেও এসব পশুখাদ্যের বস্তায় সেটি নেই। সিটিআই প্রতিষ্ঠানটির ফ্যাক্টরী দেখানো হয়েছে জয়পুরহাট বিসিক শিল্প নগরীতে। হেড অফিসের ঠিকানা দেয়া আছে হাউস নং # ৩২ সোনারগাঁ জনপথ রোড # ০৪, উত্তরা ঢাকা। এছাড়া জোনাল অফিসের ঠিকানা রয়েছে আলমনগর, ছোটবনগ্রাম, চন্দ্রীমা রাজশাহী।
এ বিষয় রাজশাহী বিভাগীয় প্রানিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা নজরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জোনাল অফিসের এমডি ইস্তিয়াক ডালিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আপাতত কম্পানির কার্যক্রম বন্ধ আছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স ছাড়া কোম্পানির ব্যবসা বৈধ কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য সমস্যার কারনে ব্যবসা বন্ধ আছে।
কোম্পানির লাইসেন্স নেই স্বীকার করে ডালিম বলেন, আমাদের নিজস্ব ফার্ম আছে। সেই ফার্মের জন্য আমরা এসব পশুখাদ্য সরবরাহ ও তৈরী করছি।