মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:২৬ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রবিন হাসান নামে এক চিকিৎসকের ওপর দুই দফা হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান স্বাধীনের বিরুদ্ধে।
মনিরুজ্জামান তার নিকটাত্মীয় এবং সহযোগীদের নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে এ হামলা চালান। এ সময় ডা. রবিনের মোটরসাইকেল এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এমডির সহযোগীরা।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ডা. রবিন এমডি স্বাধীন, তার আপন ভাই টিটো এবং আরেক ভাই মিঠুর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ডা. রবিন ওই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানটির সার্জারি বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার। আহত ডা. রবিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন আটকে রাখাসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করায় এমডি স্বাধীনের সঙ্গে চিকিৎসক রবিনের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডা. রবিন সার্জারি বিভাগে তার কার্যালয়ে যান। এ সময় এমডি স্বাধীন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এমডি স্বাধীন এ সময় চিকিৎসক রবিনকে দেখে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। একপর্যায়ে চিকিৎসক রবিনকে মারতে স্বাধীনের আপন ভাই টিটো, মিঠু এবং বোনজামাই ডা. মোজাম্মেল হোসেন বেলাল ও কর্মচারী ইনজামাম উল হক তেড়ে আসেন। এ সময় স্বাধীনসহ তার নিকটাত্মীয়রা ডা. রবিনকে কিল-ঘুসি মারতে থাকেন।
এ সময় চিকিৎসক স্বাধীন আত্মরক্ষার্থে মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী খড়খড়ি হাইস্কুল গেটের সামনে আশ্রয় নেন। এমডি স্বাধীনসহ তার সহযোগীরা এ সময় দ্বিতীয় দফায় ডা. রবিনের ওপর হামলা চালান। স্বাধীনসহ তার দুই ভাই এবং বোনজামাই ও সহযোগীরা বাঁশের লাঠি এবং লোহার পাইপ দিয়ে ডা. রবিনকে বেধড়ক পেটান। ফলে ডা. রবিন মুখ, নাক এবং হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এরপর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ডা. রবিন বলেন, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জিম্মি করে রেখেছেন এমডি স্বাধীন। তিনিসহ তার নিকটাত্মীয়রাই এটি নিয়ন্ত্রণ করেন। বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম এবং প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারসহ ও আর্থিক কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ করায় এমডি স্বাধীন আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। এছাড়া আমি বেতন-ভাতার দেড় লাখ টাকা পেতাম। সেটির অর্ধেক দিয়েছেন। বাকিটা চাওয়ার কারণে তিনি তার সহযোগীদের নিয়ে আমার ওপর হামলা চালান।
তিনি বলেন, হামলার সময় এমডি স্বাধীন এবং তার সহযোগীরা আমার মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন। খড়খড়ি হাইস্কুল গেটে যে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা আছে, সেটি দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে যে এমডি স্বাধীন এবং তার নিকটাত্মীয়রা আমার ওপর হামলা চালিয়েছেন। হামলার পরেও এমডি স্বাধীন আমাকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছেন। এ কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এমডি মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, বিভিন্ন সময়ে ডা. রবিনের অসদাচরণের কারণে তাকে শোকজ করা হয়েছিল। এ কারণে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। আমি বা আমার নিকটাত্মীয়রা তার ওপর হামলা চালায়নি। ডা. রবিন বেতন-ভাতা বাবদ প্রতিষ্ঠানের কাছে কোনো টাকা পাবেন না। বরং তাকে ২০ হাজার টাকা বেশি দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান এবং আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই ডা. রাবিন পরিকল্পিতভাবে হামলার নাটক সাজিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মহানগরীর চন্দ্রিমা থানার ওসি এমরান হোসেন বলেন, ডা. রবিনের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ হয়েছে। ছিনিয়ে নেওয়া মোটরসাইকেল তাকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। তবে মোবাইল ফোনটি এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। এরপর প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজকের তানোর