শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৫৮ am

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
বদর যুদ্ধ জয়ে মানবিকতার শিক্ষা : শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

বদর যুদ্ধ জয়ে মানবিকতার শিক্ষা : শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

রমজান মাসেই নাজিল হয় পবিত্র কোরআন। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বমানবতার মুক্তিদূত হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর রিসালাত।

প্রিয় নবীজি (সা.) সব সময় সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের দাওয়াত দিয়েছেন অহিংস পন্থায়। তারপরও কুফর-শক্তি শান্তির বাণী প্রচারে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। মুশরিক সম্প্রদায় আল্লাহর হাবিব (সা.)-কে প্রায় তিন বছর ‘শিআবে আবুতালেব’ নামের স্থানে সপরিবার বন্দী করে রাখে। প্রিয় নবী (সা.) দাওয়াতি কাজে তায়েফে গমন করলে তাঁকে পাশবিক নির্যাতনে জর্জরিত করা হয়। মক্কায় ফিরে আসতে চাইলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়।

‘দারুন নাদওয়া’য় তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে। এসব বাধাবিপত্তির মুখে ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে রবিউল আউয়ালে নবুয়তের ১৩তম বছরে আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা শরিফ থেকে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।

আরও পড়ুন

বদর যুদ্ধক্ষেত্রে একটি দিন

বদর যুদ্ধক্ষেত্রে একটি দিন

বদর যুদ্ধের মানবিকতার দৃষ্টান্ত যুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। বদরের বন্দীদের প্রতি হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আদর্শ ব্যবহার দেখালেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা মেলে না। তাঁর আদেশে মদিনায় আনসার ও মুহাজিররা সাধ্যানুসারে বন্দীদের নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে আপন আপন গৃহে স্থান দিলেন এবং আত্মীয়-কুটুমের মতোই তাঁদের সঙ্গে ব্যবহার করলেন।

নিরীহ ও শান্তিকামী মদিনাবাসীরা এতে খুবই প্রীত হয়। খাজরাজ বংশীয় পৌত্তলিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবায় ইবনে সলুলের জন্য নবনির্মিত স্বর্ণমুকুটটি নবীজি (সা.)-এর পদপ্রান্তে উৎসর্গ করে তারা। নবীজি (সা.) সে মুকুট মস্তকে ধারণ না করে, তা বিক্রি করে দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। মুকুট হারানোর বেদনায় প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ওঠে মুনাফিক নেতা আবদুল্লাহ ইবনে উবায়। তারই প্ররোচনায় মুনাফিক চক্রের ষড়যন্ত্রে এবং মদিনার মৈত্রী চুক্তি ভঙ্গকারী ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের গোপন মদদে মক্কার কুরাইশরা হিজরতের দ্বিতীয় বছর ৬২৪ খ্রিষ্টাব্দে রমজান মাসেই মদিনায় আক্রমণ করে।

এ যুদ্ধে কুরাইশ বাহিনীর ছিল ১ হাজার সশস্ত্র সেনা, ১০০টি ঘোড়া, ৭০০টি উট। নেতৃত্বে ছিল উতবা, শায়বা ও ওয়ালিদ। কুরাইশরা ৪৫০ কিলোমিটার দূরে মদিনার উপকণ্ঠে এসে আক্রমণ করল। নবীজি (সা.) মদিনার পবিত্রতা এবং নারী ও শিশুদের হেফাজত করতে মুহাজির ও আনসার সাহাবিদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে মদিনা থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে বদর নামক জায়গায় এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিলেন। এ আত্মরক্ষামূলক প্রতিরোধযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবি ছিলেন মাত্র ৩১৩ জন। তাঁদের সঙ্গে ছিল মাত্র দুটি ঘোড়া ও ৭০টি উট। সাহাবিরা মদিনা থেকে তিন দিনে বদর গিরি প্রান্তরে পৌঁছালেন। নেতৃত্বে ছিলেন নবীজি (সা.)-এর চাচা আবুল ফজল (রা.) ও আরেক চাচা আমির হামজা (রা.)।

মুসলিমরা বদর যুদ্ধে আল্লাহর গায়েবি মদদে অলৌকিকভাবে বিজয় লাভ করেন এবং কাফেররা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। এতে কুরাইশদের ৭০ জন নিহত হন ও ৭০ জন বন্দী হন। মুসলিমদের ১৪ জন শহীদ হন। যখন যুদ্ধ শেষ হলো, নবীজি (সা.) প্রথমে ঘোষণা করলেন, ‘তাদের হত্যা করো না।’ বদরের বন্দীদের সহজ শর্তে মুক্তিও দেওয়া হলো। তাদের অনেকেই ইসলামের অনুপম আদর্শে মুগ্ধ হয়ে মুসলমান হলেন। মুক্তিপণের মূল্য ছিল ২ হাজার দিরহাম থেকে ১২ হাজার দিরহাম। গরিবদের বিনা পণেই মুক্তি দেওয়া হয়। শিক্ষিত বন্দীদের শিক্ষার বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়। একজন বন্দী ১০ জন শিশুকে লেখাপড়া শেখালে তাঁকে মুক্তি দিলেন।

বদর যুদ্ধের মানবিকতার দৃষ্টান্ত যুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য উদাহরণ। বদরের বন্দীদের প্রতি হজরত মুহাম্মদ (সা.) যে আদর্শ ব্যবহার দেখালেন, জগতের ইতিহাসে তার তুলনা মেলে না। তাঁর আদেশে মদিনায় আনসার ও মুহাজিররা সাধ্যানুসারে বন্দীদের নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিয়ে আপন আপন গৃহে স্থান দিলেন এবং আত্মীয়-কুটুমের মতোই তাঁদের সঙ্গে ব্যবহার করলেন। বন্দীদের স্বগতোক্তি ছিল, ‘মদিনাবাসীর ওপর আল্লাহর রহমত নাজিল হোক। তারা আমাদের উটে চড়তে দিয়ে নিজেরা পায়ে হেঁটে গেছে, নিজেরা শুষ্ক খেজুর খেয়ে আমাদের রুটি খেতে দিয়েছে (বিশ্বনবী, গোলাম মুস্তফা, পৃষ্ঠা: ১৬০)।’

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী,  যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি, সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম,  [email protected]

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.