শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:০০ am
আর কে রতন, বিশেষ প্রতিবেদক :
পশ্চিম বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরের চড়কতলা গ্রামে প্রায় সাতশত বছর পূর্ব থেকে চৈত্র সংক্রান্তিতে মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো হয়ে আসছে। এবার হিন্দু ধর্মমতে পঞ্জিকা অনুসারে ৩০ শে চৈত্র (১৪ এপ্রিল) চৈত্র সংকান্তি উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার এ গ্রামে চড়ক পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। চড়ক পূজা উপলক্ষে চড়কতলা গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায় মন্দিরে পূজা অর্চনা ও মানুষের পিঠে বরশি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানোর আয়োজন করা হয়।
শতশত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই চড়ক পূজাকে ঘিরে বিশাল মেলা হয়ে থাকে। আর চড়ক পূজার নাম করণে আদিকাল হতে এই গ্রামের নাম রাখা হয় চড়কতলা।
চড়কতলা গ্রামের বাসিন্দা সাবেক জমিদার পুত্র সত্যেন নিয়োগী জানান, এখানে চড়ক পূজা বহু প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। এ পূজার অপর নাম নীল পূজা, মহাদেব পূজা, গম্ভীরা পূজা বা শিবের গাজন পূজা। শিব- পুরাণ এবং ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে চৈত্র শিব আরাধনা প্রসঙ্গে নৃত্যগীতাদি ও ধর্মীয় নাটক উৎসবের উল্লেখ রয়েছে।
চড়কতলা গ্রামের পূজা আয়োজক কমিটি জানান, বাংলা বছরের সমাপনী মাস চৈত্র। চৈত্রের শেষ দিনটিকে চৈত্র সংক্রান্তি বলা হয়। পঞ্জিকা মতে চৈত্র মাসের শেষ সংকান্তি উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায় নানা পূজা অর্চনা ও আচার অনুষ্ঠান করে থাকে।
বাংলা সনের শেষ মাসের নাম করন করা হয়েছে-চিত্রা-নক্ষত্রের নামনুসারে। আদিগ্রন্থ পুরানে বর্ণিত রয়েছে ২৭টি নক্ষত্র আছে যা রাজা/প্রজাপতির দক্ষের সুন্দরী কন্যার নামানুসারে নামকরন করা হয়। একদিন মহা ধুমধামে চন্দ্রদেবের সংগে বিয়ে হলো দক্ষের ২৭ কন্যার। দক্ষের এক কন্যা চিত্রার নামনুসারে চিত্রানক্ষত্র এবং চিত্রানক্ষত্র থেকে চৈত্র মাসের নামকরন করা হয়। চৈত্র মাসের অন্যতম প্রধান উৎসব চড়ক।
চড়ক পূজায় তান্ত্রিক মন্ত্র পরিচালনাকারি চড়কতলা গ্রামের সন্যাসী মদন বিশ্বাস বলেন, চৈত্র সংকান্তি ঘটস্থাপন পূজা করে পূজার কার্যক্রম শুরু করার পর ফুলভাংগান পূজা, নাগরাকাটা পূজা, কালী পূজা ও ভড়ন খেলা, শ্বশ্মান খেলা, বৃক্ষস্বরী পূজা, মহালদার পূজা, শিতলা পূজা, শিব পূজা সহ পূজা অর্চনা অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ চৈত্র সংকান্তি বৃহস্পতিবার সকালে চড়ক গাছে পূজা করা হয় এবং বিকেল ৪টার সময় লম্বা গাছের খুটিতে বাঁশ বেধে দড়ি ঝুলিয়ে চড়ক গাছ তৈরী করে মানুষের পিঠে বড়শি ফুটিয়ে চড়ক ঘুরানো হবে।
ঐতিহ্যবাহী চড়ক পূজা ও মেলা উপলক্ষে আদমদীঘির চড়কতলা গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে জামাই-মেয়েসহ আন্ত্রীয়স্বজনের ব্যাপক সমাগম ঘটে। আজকের তানোর