বৃহস্পতিবর, ২১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:২০ pm
ডেস্ক রির্পোট : চায়না ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়াই উদ্ভাবিত বিদেশি জাতের ব্ল্যাক রাইস বা কালো ধান চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকের মাঝে। এ ধান চাষাবাদ পদ্ধতি সাধারণ ধানের মতোই তবে ফলন তুলনামূলক কম। তবে দামের ক্ষেত্রে কালো ধান চাষে লাভ বেশি।
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধি খেতে সুস্বাদু, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ এবং অধিক চাহিদা থাকায় কালো ধান চাষ করছেন অনেক কৃষক। ‘জাকস ফাউন্ডেশন’ নামে স্থানীয় এনজিও এলাকার কৃষকের মাঝে কালো ধান চাষের প্রসার ঘটাতে সার্বিকভাবে কাজ করছেন। এ জাতের ধান বিঘাপ্রতি ১০ থেকে ১১ মণ ফলন হয়। এ ধানের গাছ, পাতা, কাণ্ড, ধান, চাল ও আঠালোযুক্ত ভাত সবকিছুর রং কালো হয়ে থাকে।
উপজেলার ধুরইল গ্রামের কৃষক আলম গত মৌসুমে ১ বিঘা জমিতে কালো ধান চাষ করে সাড়ে ১০ মণ ধান পেয়েছেন বলে জানান। জাকস ফাউন্ডেশন থেকে ১ কেজি কালো ধানের বীজ কিনেছিলেন এবং তার জমিতে উৎপাদিত প্রতিমণ কালো ধান ৮ হাজার টাকা দরে জাকসই আবার কিনে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
উপজেলার পশ্চিম কড়িয়া এলাকার কৃষক মামুন বলেন, সাধারণ ধানের মতোই কালো ধান চাষ করতে হয়। ইরি ধানের চেয়ে সার, কীটনাশক ও পানি খরচ কম। আমিও ১ বিঘা জমিতে কালো ধান চাষ করে ১১ মণ ধান পেয়েছিলাম এবং জাকস এনজিওর কাছে বিক্রয় করে প্রায় ৮৫ হাজার টাকা পেয়েছি। সাধারণ ধান চাষের চেয়ে কালো ধান চাষে অধিক লাভ হয় বলে জানান মামুন।
উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের এনামুল, মিঠু ও নিঝুম নামের কৃষকরা বলেন, ব্ল্যাক রাইস ধান চাষে আমরা অধিক লাভবান হয়েছি। জাকস ফাউন্ডেশন আমাদের কালো ধানের বীজ দেয় আবার আমাদের উৎপাদিত ধানও কিনে নেয়।
জাকস ফাউন্ডেশনের মাঠ কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন বলেন, ব্ল্যাক রাইস ধানের চাল অধিক গুণাগুণ সমৃদ্ধ। মেশিনে চাল মাড়ায় করলে গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যায় এ কারণে ঢেঁকিতে ছাঁটতে হয়। ঢেঁকিছাটা এ চাল ১৬ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রয় করা হয়।
ধুরইল গ্রামে করিমের বাড়িতে ২ ছেলের বউ ববিতা ও মারুফাকে নিয়ে শাশুড়ি পিয়ারা বেগমকে ঢেঁকিতে কালো ধান ভানতে দেখা যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান বলেন, ব্ল্যাক রাইস ধানের চালে অধিক পরিমাণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আছে। এ চালের ভাত নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি শরীরে রক্ত ও যৌনশক্তি বৃদ্ধি করাসহ হার্ট সুস্থ রাখে। এজন্য চালের গুণাগুণ অক্ষুণ্ণ রাখতে ধান থেকে চাল আলাদা করতে মেশিনের পরিবর্তে ঢেঁকি ব্যবহার করাই ভালো। সূত্র : যুগান্তর