সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৫৩ am
ইমরান হোসাইন :
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে পাল্টে যাচ্ছে রাজশাহীর তানোর পৌরসভার চিত্র। বৃদ্ধি পেয়েছে নাগরিক সুবিধা। ফলে অল্পকিছু দিনের মধ্যে তৃতীয় শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত হচ্ছে এই পৌরসভা বলে জানিয়েছেন মেয়র। এজন্য উন্নয়ন ধারা আরও তরান্বিত করতে পৌরবাসীর সার্বিক সহায়তা চেয়েছেন নবনির্বাচিত মেয়র ইমরুল হক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি গেল বছরের ৩০ জানুয়ারী মেয়রপদে নির্বাচিত হন তানোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমরুল হক। তিনি মেয়র নির্বাচিত হয়ে এতো অল্প সময়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হাতে পেয়েছেন। ইতোমধ্যে এই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এরই মধ্যে আবারও নগর উন্নয়ন অবকাঠামো হতে সাড়ে ৩ কোটি টাকার কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে। নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাড়া-মহল্লার অলি-গলি থেকে শুরু করে বেশ কিছু সড়কে লাগছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এছাড়া বেশ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণ ও সড়কবাতি স্থাপনসহ জিওল-চাঁদপুর মোড় হতে আব্দুল গনি মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত ঢালাই রাস্তা নির্মাণ কাজ অল্প কিছুদিনের মধ্যে শুরু করা হবে। আধুনিক পৌরসভায় রূপান্তর করতে যা যা করা দরকার সবই করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র ও পৌর অফিসের সংশ্লিষ্টরা। এছাড়াও এডিপি বরাদ্দের ৭০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ড্রেন, কালভার্ট, স্যানেটারী, প্রটেকশান ওয়াল, আরসিসি রাস্তা, হাট-বাজার সংস্কার ও পুকুরঘাট নির্মাণ চলমান রয়েছে। অপদিকে, জলবায়ু প্রকল্পের ১ কোটি টাকার সোলার ইস্টিক লাইটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এবিষয়ে তানোর পৌর এলাকার ভদ্রখন্ড মহল্লার বাসিন্দা বাবু মন্ডল বলেন,এতো অল্পসময়ে মেয়রের এতোসব উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করতে সুবিধাবাদী মহল ইষান্বিত হয়ে মেয়রের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় সাংবাদিকদের ভুল এবং মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে মেয়র ইমরুল হকসহ সহকারী প্রকৌশলী সরদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে কিছু সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ নগর উন্নয়ন অবকাঠমো প্রকল্প কাজের বিষয়ে ভুল সংবাদ পরিবেশন করা হয়। ওই মহল এতোসব করেও ক্ষান্ত নয়, অনৈতিক সুবিধা আদায়ে পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্প বাধাঁগ্রস্থ করতে আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন সুবিধাবাদী ওই মহল। এটা পৌরবাসী মেনে নেবে না। আমরা ওই সুবিধাবাদী মহলকে ধিক্কার জানাই। এরপরও মেয়র তাঁর আদর্শ ও সততার গতিতে পৌরসভার উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনিসহ বেশ কয়েকজন পৌর নাগরিকরা।
পৌরসভার জিওল মহল্লার বাসিন্দা দুলাল হোসাইন জানান, পৌরসভায় নতুন মেয়র নির্বাচিত হয়ে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। এতে পৌর নাগরিকদের সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন, রাস্তাঘাট, ড্রেন, কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণ, সোন্যাল পালেনের মাধমে সড়কবাতি স্থাপন, বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে আনা, পৌর শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে টারসিয়ারি ড্রেন, সেকেন্ডারি আরসিসি ড্রেন, বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসার সংস্কার ও উন্নয়নসহ সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে প্রতিটি মোড়ে মোড়ে সুপেয় পানি সরবরাহ উন্নয়নে।
পৌরসভার স্বাস্থ্যসহকারী কাজেম উদ্দিন বলেন, পৌরসভার ৫টি দরিদ্র এলাকা চিহ্নিত করে দরিদ্রদের সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য হাট-বাজারে বেশ কয়েকটি পাকা টয়লেট ও সুপেয় পানির জন্য মটর স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও আধুনিক পাবলিক টয়লেট এবং বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি কমিউনিটি পাবলিক টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। নারী-পুরুষ বৈষম্য দূরকরণ, অসচ্ছল নারীদের সেলাই কাজের প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন বিতরণসহ সামাজিক নিরাপত্তামূলক বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করে নাগরিকদের পাশে থাকার চেষ্টা করে চলেছেন মেয়র।
পৌরসভার গেল্লাপাড়া বাজারের চা স্টল ব্যবসায়ী মাইনুল বলেন, আগে সামান্য বৃষ্টিতেই বাজারে হাটু পানি জমে থাকত। মানুষের যাতায়াত ও ব্যবসা-বানিজ্য করতে সমস্যা হতো। এখন বাজারের চারপাশে ইটের রাস্তা ও ড্রেন করায় দুয়েক জায়গা ছাড়া আর পানি জমে না। এছাড়া সড়কে বাতি দেয়ায় চুরি ছিনতাই অনেকটাই কমে গেছে। এই উন্নয়ন ধারা অব্যাহত থাকলে পৌরসভার নাগরিকরা আরো বেশি সেবা ও সুবিধা পাবেন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে মেয়র ইমরুল হক বলেন, পূর্বের মেয়র মিজান দায়িত্বে থাকাকালিন সময়ে ৯ মাসের ৭৫ লক্ষ টাকার উপরে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনভাতা বয়েয়া ছিল। এছাড়া উন্নয়ন কাজের বকেয়াসহ প্রায় অর্ধকোটি টাকা ঋণের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তিনি। বর্তমানে পৌরবাসীর সার্বিক সহযোগীতায় পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে কোন প্রকার অনিয়মের সুযোগ না দিয়ে, অযাচিত ব্যয় কমিয়ে বা ব্যয় সাশ্রয় করে পৌর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা হাল-নাগাদ পরও বর্তমানে পৌরসভার রাজস্ব বৃদ্ধির চেস্টায় কাজ করছেন তিনি। আজকের তানোর