শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৫৪ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : নয়টির মধ্যে ছয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে সম্প্রতি। কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী, চলতি মার্চের মধ্যেই এসব উপজেলায় নতুন কমিটি আসবে। ফলে উপজেলা কমিটিতে পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা তৃণমূলে না গিয়ে দলে দলে ছুটছেন কেন্দ্রে। অনেকেই ব্যাগ ভরে টাকাও নিয়ে যাচ্ছেন সঙ্গে। তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন এসব তথ্য।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা জানান, আগে দলের নতুন কমিটি গঠনে তৃণমূল নেতাকর্মীরাই ছিলেন নেতা নির্বাচনের মূল কারিগর। এখন তাদের মতামতও নেওয়া হচ্ছে না। কয়েক বছর থেকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা শর্টকাট ব্যবস্থায় সম্মেলন ডেকে ওপর থেকে কমিটি চাপিয়ে দিচ্ছেন। ফলে পর্যাপ্ত টাকা-পয়সা দিয়ে এবং কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের ম্যানেজ করে অতি সুবিধাবাদী ও হাইব্রিডরাই চলে আসছে বিভিন্ন কমিটির নেতৃত্বে। রাজশাহীর ছয় উপজেলায় কমিটি গঠনের কাজও এগিয়ে চলেছে সেই শর্টকাট ব্যবস্থাতেই। তাদের অভিযোগ, হাইব্রিডদের দাপটে অনেকদিন ধরে রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় কোণঠাসা হয়ে আছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা।
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেছেন, সম্মেলনের মাধ্যমে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠনের পর উপজেলা কাউন্সিল করা উচিত ছিল। আমি দায়িত্বে থাকাকালে প্রতিটি ইউনিয়নেই কমিটি করা হয়েছিল কাউন্সিলের মাধ্যমে। কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে উপজেলা কমিটি করা হয়েছিল। শুনছি, এবার উপজেলা কমিটিগুলোর নেতৃত্ব ঠিক করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলোতে এভাবে উপর থেকে নেতা বসিয়ে দিলে তৃণমূল নেতাকর্মীরা হতাশায় ডুববে। আবার পদ বণ্টনে মোটা টাকার লেনদেনেরও আভাস পাচ্ছি। এভাবে পদ ও কমিটি বেচাকেনা হলে দলের অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।
তানোর উপজেলা কমিটির সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক মামুন ছুটছেন জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি লুৎফর রশীদ হায়দার ময়না ও সাধারণ সম্পাদক হতে সুজন কেন্দ্রে লাগাতার তদবির করছেন। ছয় উপজেলা কমিটি গঠন প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সম্মেলনের মাধ্যমে এসব উপজেলা কমিটি হবে। দলকে নেতৃত্ব দিতে পারবেন তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে। ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন ছাড়াই উপজেলা কমিটি গঠন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনা মহামারির কারণে ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো গঠন করা সম্ভব হয়নি। উপজেলা কমিটিগুলো হয়ে গেলে পরে নতুন নেতৃত্ব ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটিগুলো করবেন।
৬ মার্চ পবা উপজেলা সম্মেলন। বর্তমান সভাপতি ইয়াসিন আলী ও সাধারণ সম্পাদক মাজদার রহমান আবারও পদে থাকতে চান। তবে পবাতে সভাপতি হতে চান মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ও ফারুক হোসেন ডাবলু। মোহনপুর উপজেলা কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম ও সাধারণ সম্পাদক মফিজ কবিরাজ পদ ধরে রাখতে কেন্দ্র ও জেলা নেতাদের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। তবে মোহনপুরে সভাপতি হতে তদবির করছেন সুলতান ও সাধারণ সম্পাদক হতে ছুটছেন গোলাম মোর্শেদ রঞ্জু। ২০১৩ সালে কাউন্সিলরদের ভোটে এসব কমিটি হয়েছিল।
পুঠিয়া ১৩ মার্চ ও দুর্গাপুর উপজেলায় ১৪ মার্চ সম্মেলনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। পুঠিয়ার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম ও মালেক আবার পদে থাকতে তদবির করছেন। তবে আহসানুল হক মাসুদ ও কণক পুঠিয়ায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। দুর্গাপুরের সভাপতি নজরুল ও সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল তাদের পদ ধরে রাখতে মরিয়া হয়ে ছুটছেন। তবে এখানে রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান নিজেই সভাপতি হতে চেষ্টা করছেন বলে দলীয় নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।
গোদাগাড়ী ও তানোরে সম্মেলন হবে মার্চের শেষে। গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি উপজেলা কমিটিতে পদ পেতে ব্যাপক তদবির চলছে জেলায় ও কেন্দ্রে। পদপ্রত্যাশীরা দলে দলে ছুটছেন ঢাকায়। একদল ফিরছেন তো আরেক দল যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। জানা গেছে, গোদাগাড়ী কমিটির সভাপতি বদিউজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ পদ পেতে ছোটাছুটি করছেন। তবে গোদাগাড়ী কমিটির সভাপতি পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাকনহাট পৌর সভাপতি আব্দুল মজিদ মাস্টার ও উপজেলা চেয়ারম্যান পৌর যুবলীগ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কেন্দ্রীয় নেতাদের পেছনে ছুটছেন।আজকের তানোর