শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:২৬ pm
ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক : বাড়ির পাশে আলুর ক্ষেতে রাজশাহীর তানোরে কৃষিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ডক্টর আব্দুর রাজ্জাককে পেয়ে স্থানীয় (কৃষক) চাষিরা পটাশ (এমওপি) সারের তীব্র সঙ্কট ও বাড়তি দামে বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হন তানোর উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম।
সম্প্রতি শনিবার উপজেলার কামারগাঁ ইউপির ছাঔড় আলুর মাঠে এগ্রিকনসার্ন নামের প্রতিষ্ঠান ২০ জাতের রপ্তানিমুখী আলু উৎপাদনের মাঠ পরিদর্শনে আসেন হাস্যজ্জল বিনয়ী কৃষিমন্ত্রী। এসব জাতের আলু চাষের জন্য চাষীদের মাঝে ব্যাপক ভাবে প্রচারের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহবান জানান তিনি।
এসময় স্হানীয় এক গণমাধ্যম কর্মী পটাশ সার সঙ্কট ও দাম বেশি নেয়ার বিষয়ে মাননীয় মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলামকে কৃষক সার কেন পাচ্ছে না তা জানতে চান।
কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম জানান, পটাশ সার পাওয়া যাচ্ছে। তবে, এই এলাকার কৃষকরা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি ব্যবহার করেন। তিনি আরো বলেন, যেখানে ত্রিশ কেজি পটাশ সারের প্রয়োজন সেখানে অনেক বেশি ব্যবহার করেন এই এলাকার কৃষকরা।
একই সুরে এগ্রিকনসার্ন এর ব্যবস্হাপনা পরিচালক আব্দুল কাদেরও বলেন, আমরা যে ২০ জাতের আলু উৎপাদন করেছি তাতে সামান্য পরিমাণ সার কীটনাশক ব্যবহার করেছি। এই এলাকার কৃষকরা অতিরিক্ত সার কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন।
এসময় কৃষিমন্ত্রী বলেন, যদি অতিরিক্ত সার ব্যবহার করা হয় তাহলে কৃষকদের বোঝাতে হবে। কৃষকরা অযথা কেন বাড়তি খরচ করবেন। অল্প ব্যবহারে ফসল উৎপাদন হলে কৃষক কেন বেশি সার ব্যবহার করবেন। আর অতিরিক্ত লাগলে সে মোতাবেক প্রয়োজনে বরাদ্দ বাড়াতে হবে এবং চাষীদের মাঝে সভা, মাঠ দিবস ও সেমিনারসহ তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের নিয়েও প্রচারণা করতে হবে।
জানা গেছে, উপজেলায় এখন বোরো ধানের জন্য পটাশ সারের বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পটাশ সার।
উপজেলার কলমা ইউপির পিপড়া গ্রামের বোরো চাষী ফারুক জানান, পটাশ সার সরকারি মূল্য সাড়ে ৭০০ টাকা। কিন্তু এই দামে কোনভাবেই মিলছে না পটাশ বা এমওপি সার। আবার বাড়তি দাম দিলেই মিলছে। চলতি মৌসুমে ৫ বিঘা জমিতে বোরো ধান রোপন করেছি। কয়েকদিন আগে ১ হাজার ১০০ টাকা বস্তা পটাশ সার কিনেছি। তার কাছে মেমো কিংবা দোকানের নাম জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা বলতে পারব না। তাহলে আর সার পাওয়া যাবে না। অমৃতপুর গ্রামের বোরো চাষী আতাউর জানান, তিনি ৪ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছেন। পটাশ সার কিনতে হয়েছে ১ হাজার ৬০ টাকা দিয়ে।
একাধিক কৃষকরা জানান, এসময় কখনো পটাশ সারের সঙ্কট দেখিনি। কিন্তু কেন এবার সার নিয়ে ছিনিমিনি করে চাষীদের পকেট কাটা হচ্ছে । আর কৃষিদপ্তর এসব বিষয়ে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন না। আলু রোপন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চলছে সার নিয়ে কারসাজি। আমাদের তো মনে হয় ডিলাররা সার না এনে মোকামেই বিক্রি করে দেন। এছাড়াও সার বিতরণে সরকারি কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না বিসিআইসি ডিলাররা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সার ব্যবসায়ী জানান, কামারগাঁ ইউপির বিসিআইসির ডিলার বিকাশ খুদ্র ব্যবসায়ীদের সার দেন না। তিনি বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি দামে সার বিক্রি করেন। আরেক ব্যবসায়ী জানান, আসলেই চাহিদা অনুযায়ী পটাশ সার বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। অনেক ব্যবসায়ী বিভিন্ন এলাকা থেকে বাড়তি দামে পটাশ সার নিয়ে আসার কারনেই বেশি দাম নিচ্ছে ।
তিনি আরো বলেন, আগের চেয়ে অনেক বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। কিন্তু দাম একই আছে। রাশিয়া থেকে পটাশ সার আমদানি হয়। যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে আগামীতে কি হয় কে যানে বলে আশংকা প্রকাশ করেন এই ব্যবসায়ী।
উপজেলা বিসিআইসির ডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বাবু বলেন, চাহিদার তুলনায় পটাশ সার কম পাওয়া গেছে। তবে, অল্প দিনের মধ্যে সঙ্কট কেটে যাবে বলে মনে করছেন এই ব্যবসায়ী। আজকের তানোর