সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৩০ am
ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোরে ঐতিহ্য বাহী বিল কুমারী বা শীবনদীতে পানি থাকলেও নেই মাছ। ফলে বিল কুমারী এলাকা সংলগ্ন মৎস্য জীবিরা চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আবার মরার উপর খাড়ার ঘা নামক কিস্তি পরিশোধের জন্য কাজের সন্ধানে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় চলে যাচ্ছেন অনেকে বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।
জানা গেছে, তানোর পৌর সদর কুঠিপাড়া, শীতলি পাড়া,গোল্লাপাড়া হলদার পাড়ার বেশিরভাগ জনসাধারণ বিলে মাছ মেরে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই বোরো মৌসুমে বিলে থাকেনা পানি। যার কারনে নিচের খাস জমিও রোপন করে থাকেন। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারেই উল্টো। বিলের জমিতে বোরো রোপনের জন্য বীজতলা তৈরীর সময় পানি কিছুটা কম থাকলেও।হঠাৎ উজান থেকে আসা পানিতে রোপনকৃত ধান ডুবে গেছে ইতিপূর্বেই। আবার বিলে পানি প্রচুর থাকলেও নেই মাছ। যার কারনে এসব এলাকার মৎস্য জীবিরা মাছ পাচ্ছেনা একদিকে যেমন, ওপর দিকে জমিও রোপন করতে না পেরে চরম হতাশা গ্রাস করেছে। বেশির ভাগ মৎস জীবিরা দিন আনে দিন খায় এবং এক সাথে কোন কাজে বেশি টাকা লাগলে দারস্থ হতে হয় বে- সরকারি এনজিওর ঋনের দিকে। প্রায় মৎস্য জীবিরা একাধিক এনজিও থেকে ঋন নেওয়া আছে।
মৎস্য জীবিরা জানান, এমন এক দুঃ সময় আমাদের ঘাড়ের ওপর ভর করেছে যা ভাষার বলা যাবে না। এসময় পরিবার নিয়ে বেঁচে থাকায় চরম কঠিন হয়ে পড়েছে। আবার অনেকে কাজের জন্য পরিবারের মুখে দুমুঠো খাবার তুলে দিতে ছেড়ে যাচ্ছেন পরিবার পরিজন। শীতলীপাড়া গ্রামের বিশু বিলে মাছ পাচ্ছেনা,কোন কাজও নেই,বাধ্য হয়ে চলে গেছেন রাজধানী ঢাকায়। তিনি জানান ভাড়ায় রিকশা চালিয়ে প্রায় ৫/৭ শত টাকা করে থাকে। এতে করে পরিবারের মুখে দুমুঠো ভাতও দেওয়া যাচ্ছে, আবার কিস্তিও দেয়া হচ্ছে। তার গ্রামের অনেকেই গেছেন।অথচ বিলে পানি প্রচুর, তারপরও মিলছে না মাছ।এজন্য কয়েকবার বন্যা ও জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবকেই দায়ী করছেন।তবে বেশকিছু দিন ধরে বিলের পানি কমতে শুরু করেছে।শীতলী পাড়া গ্রামের মৎস্য জীবি আজিমুল, আলমগীর,মোস্তফা, আফজাল,সোনা, তোতাসহ অনেক জানান,গত বারে বিলে পানি কম থাকলেও মাছ পাওয়া গেছে। কিন্তু এবারের চিত্র একেবারে উল্টো পানি থাকলেও মাছ পাওয়া যাচ্ছে না।আমরা বিলের মাছ মেরেই জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। এবারে মাছ পাওয়াই যাচ্ছে না। যার কারনে পরিবার পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকায় কষ্ট কর হয়ে পড়েছে। আবার অনেকে বিলে মাছ না পাওয়ার কারনে বিভিন্ন জেলা বা রাজধানীতে কাজ করতে চলে গেছে। ছোট্ট ছোট্ট শিশু সন্তান রেখে বাধ্য হয়ে চলে যেতে হয়েছে । এসময় মৎসজীবিদের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বয়োজ্যেষ্ঠ মৎস্য জীবি জলিল,শখিন,মফিজ জানান, বিলে মাছ হবে কি করে।বিলের মা মাছসহ যাবতীয় ছোটছোট মাছ মারার কারনেই মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বিলের অনেক জায়গায় অসাধু মৎস্য জীবিরা ঘিরে দিয়ে নিজের আয়ত্তে রেখে মাছ মারছেন। এজন্য মৎস্য দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন প্রবীণ এসব মৎস্য জীবিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু মৎস্য জীবিরা জানান শীতলী পাড়ার উত্তরে বিলের মধ্যে রয়েছে গভীর পুকুর। সেই পুকুর কুঠিপাড়া গ্রামের কলিম নামের এক মৎস জীবি একাই দখল করে বাঁশ কাটা দিয়ে ঘিরে মাছ আহরন করেন। ওই পুকুরে প্রচুর মাছ থাকে বলেও জানান। সেখানে পানি প্রবাহ হলে বিলে মাছ থাকত বলেও অনেকের ধারনা।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফ উদ্দিন জানান, আমি নতুন এসেছি, বিল সম্পর্কে তেমন একটা ধারনা নেই।তবে জলবায়ুর বিরুপ প্রভাব এবং মা মাছ আহরন,ব্যাপক কীটনাশক, অসময়ে বন্যা এসব কারনে মাছ কম থাকতে পারি বলে ধারনা এই কর্মকর্তার। আজকের তানোর