সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৫২ pm
ডেস্ক রির্পোট : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব তার ফেরিফাইড ফেসবুক পেজে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে যে কথা লিখেছেন তাতে মনে হচ্ছে- মির্জা ফখরুলকে জিনে ধরেছে। তিনি আকাশ-বাতাস-পাতাল সব খানে শুধু আওয়ামী লীগ দেখতে পাচ্ছেন। সাংবিধানিক পদের লোকজনকেও তিনি আওয়ামী লীগ বলছেন।
রোববার নাটোরের শংকর গোবিন্দ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের কৃষক, শ্রমিক মেহনতি জনতার সংগঠন। এ দেশের সব আন্দোলন সংগ্রাম অর্জনের সঙ্গে এই দলের নাম জড়িত। বঙ্গবন্ধুর আহবানে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। যুদ্ধের সময় গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে এ দেশকে শ্মশানে পরিণত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু সেই অবস্থান থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। ১৯৭৪ সালে দেশ ৯.৫ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল। ১৯৭৫ সালে ১০ হাজার মেট্রিক টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যারা বিশ্বাস করে না তারা এসব সইতে না পেয়ে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। তাকে হত্যার মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের চাকা থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল। দেশ পিছিয়ে গেল।
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসলে মানুষ খুশি হয়েছিল। বাঙালির সব কাজে আন্দোলন সংগ্রামে তিনি ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন। তাকে বারবার হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি কারো সঙ্গে আপস করেননি। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া জামায়াতকে সঙ্গে করে ক্ষমতায় এসে বাংলা ভাই ও শায়েখ আব্দুর রহমানদের সৃষ্টি করেছেন। তারা একযোগে সারা দেশে বোমাবাজি করেছে। তাদের আমলে দেশ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। খালেদা জিয়ার কারণেই ১১ জানুয়ারি দেশে দুই বছরের জন্য জরুরি সরকার এসেছিল। সেই সরকার এসে আমাদের নেত্রীকে আটক করে রাখল। ড. কামাল হোসেন সার্টিফিকেট দিলেন এই সরকার যতদিন খুশি ক্ষমতায় থাকবে। সুজন সম্পাদকও তাই বললেন।
নাম প্রকাশ না করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, একজন প্যান্ট পরতে পারে না, আরেকজন এক চোখে কথা বলে তারাও সেই সরকারের পক্ষে থাকল।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বিএনপি মহাসচিবের জিন ছাড়ানোর ব্যবস্থা করুন।
দেশে করোনায় কেন্দ্রীয় কয়েকজন নেতাসহ কয়েক হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী মারা গেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা তবুও মানুষে পাশে আছেন। বিএনপি মানুষের পাশে থাকেনি। মির্জা ফখরুল, রুহুল কবীর রিজভী, ডা. জাফরুল্লাহ ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন টিকা নেওয়া যাবে না। ভারতের টিকা নিলে সমস্যা হবে। অথচ ওই টিকা ভারতের ছিল না। আমরা আওয়ামী লীগের লোকজন আগে টিকা নিলাম। রিজভী ফখরুলরা পরে গোপনে টিকা নিয়ে চুপ আছেন বিরোধিতা বন্ধ করেছেন। শেখ হাসিনা যেভাবে করোনা মোকাবেলা করেছেন বিশ্ববাসী তার প্রশংসা করেছে।
কাউন্সিলকে সামনে রেখে কার কতো জনপ্রিয়তা সেটা প্রদর্শনের জন্য হাজার হাজার বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড টানানো হয়। বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নাটোর স্টেডিয়াম ও আশপাশের পুরো এলাকা। মহাসড়কের উপরে নির্মাণ করা হয় বেশ কিছু তোরণ।
প্রায় ১৫ দিন আগে থেকে প্রতিদিন চলে মোটরসাইকেল শোডাউন ও মিছিল মিটিং। কাউন্সিলের আগের দিন শনিবার সন্ধ্যায় নাটোর সার্কিট হাউসে কেন্দ্রীয় একাধিক নেতার উপস্থিতিতে জেলার বিবদমান জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফলে পুরো স্টেডিয়ামে কাউন্সিলের সময় সিটি ক্যামেরা স্থাপনের পাশাপাশি ছয়শ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কেন্দ্রীয় নেতারাও কাউন্সিলে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় শক্ত ভূমিকা রাখেন। সূত্র : যুগান্তর