সমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:০৫ am
ক্রীড়া ডেস্ক : শুরুতে ঝড় মাঝে বিপর্যয় এবং শেষে আবারও ঝড়। বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে কুমিল্লার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চট্টগ্রামের ইনিংসটা ছিল এমনই। শেষ পর্যন্ত ৫ বল হাতে রেখে অলআউট হওয়ার আগে আফিফের চট্টগ্রামের সংগ্রহ ১৪৮। বরিশালের বিপক্ষে ফাইনালে মুখোমুখি হতে হলে কুমিল্লাকে করতে হবে ১৪৯ রান।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই ঝড় তোলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দুই ওপেনার উইল জ্যাকস এবং জাকির হোসেন। নাহিদুলের জায়গায় কুমিল্লা একাদশে সুযোগ পাওয়া আবু হায়দার রনি ইনিংসের প্রথম ওভারেই তোপের মুখে পড়লেন । ওভারটির শুরু হয় চার দিয়ে আর শেষও হয় সেই বাউন্ডারিতে। প্রথম ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ১৩ রান।
জ্যাকসদের ব্যাটিং ঝড় থামাতেদ্বিতীয় ওভারে কুমিল্লা অধিনায়ক আস্থা রাখেনদলের সেরা বোলার মুস্তাফিজের ওপর। কাটার মাস্টার প্রতিদানও দিলেন হাতে-নাতে।মাত্র এক চারের মারছাড়া ওভারটিতে টানা চার বল ডট। কি অসাধারণ বোলিং!
তবে তৃতীয় ওভারে মারকুটে জ্যাকসকে আটকাতে পারলেন না ক্যারিবীয় কিংবদন্তী বোলার সুনীল নারিন। চার-ছক্কার অসাধারণ ডিসপ্লেতে চলতি টুর্নামেন্টে ৪১৪ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের আসনে বসেন ইংলিশ এ ব্যাটার। ১১ম্যাচ খেলে ৪৬ গড়ে ৪১৪রান করেছেন। সর্বোচ্চ ইনিংস ৯২। পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস রয়েছে চারটি। ব্যাটিং স্ট্রাইক রেট ১৫৬.২২।
চট্টলার এ ওপেনার আসরের শুরু থেকেই ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায়। তবে সবশেষ ম্যাচে পেটের পীড়ার কারণে টিমের সঙ্গে মাঠে এসেও ভগ্নহৃদয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। খেলতে পারেননি। তবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লার বিপক্ষে একাদশে ফিরেই রেকর্ডটা নিজের করে নিয়েছেন। তবে এরপর ক্রিজে বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি। ৯ বলে ১৬রান করে শহিদুলের বলে কায়েসের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন।
জ্যাকসের বিদায়ের পরই যেন পথ হারিয়ে ফেলে চট্টগ্রাম। আগের ম্যাচে ৮৯ রানের অনবদ্য ইনিংসে দলকে জেতানো চ্যাডউইক ওয়ালটন এদিন খেলতে পারলেন কেবল ৩ বল। রান করেছেন ২। তানভীর ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে গেছেন।
ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারটা আরও দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে চট্টগ্রামের জন্য। অন্যদিকে স্বপ্নের মতো এক ওভার মঈন আলীর জন্য। প্রথম বল ডট দেওয়ার পর পরপর দুই উইকেট। হ্যাটট্রিক না হলেও মেইডেন ডাবল উইকেট পান এ ইংলিশ অলরাউন্ডার।
মজার এক তথ্য, কুমিল্লা পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ছয় জন বোলারকে ব্যবহার করেছে। পাওয়ার প্লে শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেট হারিয়ে ৪৬ রান। শুধু এটাই নয় সবশেষ ১৫ বলে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেয় কুমিল্লার বোলাররা।
চলতি বিপিএলে ছন্দে নেই আফিফ হোসেন ধ্রুব। তারওপর অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব। আরও যেন চাপে পড়ে গেলেন। সামলাতেও পারলেন না। ১০ বলে সমান সংখ্যক রান করে মঈন আলীর তৃতীয় স্বীকার হয়ে ফিরে গেছেন। তবে আফিফের উইকেটটাতে মঈনের চেয়ে বেশি ক্রেডিট প্রাপ্য অসাধারণ ক্যাচটি তালুবন্দী করা তানভীরের।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক। তবে যেন নিজেকে ঠিক মেলে ধরতে পারছেন না। আসরের প্রথমদিকে তো ডাগআউটে বসে বসেই নখ কামড়াতে হয়েছে। তবে আজ নিজেকে চেনালেন। বলা হচ্ছে, আকবর আলীর কথা। কুমিল্লার বোলারদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে যখন চট্টলার সংগ্রহ তিন অঙ্কের কোটা টপকানো নিয়েই সন্দেহ জাগে, ঠিক তখনই দলের হাল ধরলেন। ভয়ডরহীন ব্যাটিংয়ে ২ চার ও ২ ছয়ে মাত্র ২০ বলে সময়োপযোগী ৩৩ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস খেললেন। সাজঘরে ফিরেছেন আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ এন্ড বোল্ড হয়ে।
আকবরের পর ইনিংসে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৩৮ বলে ৪৪ রান করে আউট হয়ে গেছেন মেহেদী মিরাজও। তবে আকবর-মিরাজের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চট্টগ্রাম। মিরাজের পর রনির হাতে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মৃত্যুঞ্জয়ও। তবে আউট হওয়ার আগে এ অলরাউন্ডার টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়েছেন।
কুমিল্লা হয়ে তিনটি করে উইকেট লাভ করেন মঈন আলী এবং শহিদুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট আবু হায়দার রনি, মুস্তাফিজ এবং তানভীর ইসলামের নামের পাশে। আজকের তানোর