সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৩৩ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : হাজারও ট্রেনযাত্রীর প্রাণ রক্ষায় রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী-পুঠিয়া সড়কের রেলগেটের অস্থায়ী গেটম্যান লায়েব উদ্দিন পেলেন সাহসিকতার সম্মাননা ক্রেস্ট।
সম্প্রতি মঙ্গলবার বিকালে রেলওয়ের পাকশী বিভাগের পক্ষ থেকে রেলওয়ের ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে এই সাহসিকতার সংবর্ধনা ও সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ আবদুর রহিম বলেন, স্টেশন থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে আড়ানী ১৪ নম্বর ব্রিজের ওপর রেললাইন ১২ ইঞ্চি ভেঙা ছিল। এই ভাঙা দেখে লায়েব উদ্দিন সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। সেই সাহসিকতার প্রতিদান হিসেবে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) অসীম কুমার তালুকদারের নির্দেশে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
লায়েবের ওই সময় ডিউটি না থাকলেও বসেছিলেন গেটে। ওই সময় মালবাহী একটি ট্রেন চলে যাওয়ার পর বিকট একটা শব্দ শুনে দৌড়ে গিয়ে রেললাইন ভাঙা দেখতে পান।
এ বিষয়ে লায়েব উদ্দিন বলেন, আর্থিক দুরবস্থার কারণে লেখাপড়া করতে পারিনি। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। অনেক কষ্ট করে এক মেয়েকে রাজশাহী কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করিয়েছি। আরেক মেয়ে মাস্টার্সে পড়ছে। ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আমাকে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে অস্থায়ী হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমার দুটি মেয়েকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করেছি। মেয়েদের চাকরির একটা ব্যবস্থা করে দিলে রেল কর্মকর্তার ওপর চিরকৃতজ্ঞ থাকব।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক অসীম কুমার তালুকদার বলেন, লায়েব উদ্দিন স্বেচ্ছাশ্রমে দীর্ঘদিন ধরে আড়ানী-পুঠিয়া সড়কের রেলক্রসিংয়ে গেটম্যান হিসেবে কাজ করতেন। নিয়োগ না থাকলেও তিনি মানুষের প্রাণ বাঁচাতে এই কাজ করেছেন। তার বিষয়ে জানতে পেরে গত ১ জানুয়ারি থেকে তাকে অস্থায়ী গেটম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর কয়দিন পরই তার বুদ্ধিমত্তায় একটি ট্রেন দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তার কর্মদক্ষতা মুগ্ধ হয়ে রেলের পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী বড়াল নদীর ব্রিজের ওপর পশ্চিম দিকে রেল ভাঙা দেখতে পায় আড়ানী-পুঠিয়া সড়কের রেলের অস্থায়ী গেটম্যান লায়েব উদ্দিন। বিষয়টি আড়ানী রেলস্টেশন মাস্টারকে অবগত করার আগেই পার্বতীপুর থেকে রাজশাহীগামী উত্তরা এক্সপ্রেস ট্রেন ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টা ৫৩ মিনিটে আড়ানী স্টেশন থেকে ছেড়ে চলে আসে। এ সময় লায়েব উদ্দিনের বুদ্ধিমত্তায় লাল কাপড় উড়িয়ে ট্রেনটি ভাঙা স্থান থেকে ৫০০ মিটার দূরে থামিয়ে দেন।
তার পর থেকে রাজশাহী রুটের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হলে তাৎক্ষণিক রেললাইন মেরামত করে ২ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। গেটম্যান লায়েব উদ্দিন আড়ানী পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কুশাবাড়িয়া গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তিনি আড়ানী-পুঠিয়া সড়কে অস্থায়ী গেটম্যান হিসেবে ১৫ বছর থেকে বিনাপারিশ্রমিকে কাজ করে আসছেন। আজকের তানোর