সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:১৪ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, আদমদীঘি : বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির স্টেশনপাড়া গ্রামের আবু নঈম সরকার লিংকন নামের এক মাতবরের উঠানে কোরবানীর গরু জবাই না করাসহ নানা অভিযোগে একের পর এক তিন পরিবারকে একঘরে (সমাজচ্যুত) করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভুক্তভোগী তিন পরিবারের সদস্য ফেরদৌস হোসেন, মোজাফ্ফর হোসেন ও আব্দুস সামাদ খন্দকার প্রতিকার চেয়ে ইউএনও বরাবর একটি লিখিত আভিযোগ করেছনে। বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগের তিন দিনেও কোনো সুরাহা হয়নি। তবে অভিযুক্ত লিংকন এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবী করেন এবং উল্টো তাদের নামে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে সমাজচ্যুত ভুক্তভোগী পরিবারের একাধীক সদস্যদের সাথে কথা বলে জানাযায়, দীর্ঘদিন যাবৎ উপজেলার ছাতিয়ানগ্রামের স্টেশনপাড়া মহল্লার বাসিন্দারা প্রতি কোরবানি ঈদে সকলের পশু আবু নঈম সরকার লিংকন নামের মাতবরের উঠানে জবাই করতো। কিন্তু গত তিন বছর আগে আব্দুস সামাদ খন্দকার তাদের উঠানে কোরবানীর পশু জবাই না করে নিজ উঠানে করায় লিংকন তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়।
পরবর্তী কোরবানি ঈদে মোজাফ্ফর হোসেন ও ফেরদৌস হোসেন মাতবরের কথা অমান্য করে একই কাজ করেন। এরপর লিংকন তার পক্ষের কয়েকজন মাতবরকে একত্রিত করে একটি বৈঠক বসিয়ে তিন পরিবারকে একঘরে (সমাজচ্যুত) করার সীদ্ধান্ত নেয়। এরপর থেকে একঘরে করা পরিবারের সদস্যদের মহল্লার কোনো দাওয়াতে আমন্ত্রণ এবং তাদের সাথে কাউকে মেলামেশা করতে নিষেধ করছেন।
মোজাফ্ফরের ছেলে মোহাম্মদ বাবু বলেন, সম্প্রতি আমার ছেলের আকিকার জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। সেই অনুষ্ঠানে মহল্লার সকলকে দাওয়াত করি। ওই মাতবরদের অপছন্দের কয়েকজন ব্যাক্তিকে দাওয়াত দেয়ায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। তিনি বলেন সমাজে থাকলে আমার কথা মতো চলতে হবে।
ভুক্তভোগী ফেরদৌস হোসেন বলেন, একঘরে করে রাখার পর কয়েক মাস আগে ওই মহল্লার সামাদের মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে আমাকে দাওয়াত পর্যন্ত দিতে দেয়নি। আমার কোরবানীর মাংস সমাজে (ব্যাটিতে) জমা নেয়া হয় না। শুধু তাই নয়, সপ্তাহ খানেক আগে এক রাতে আবু নঈম লিংকনসহ কতিপয় মাতবর গ্রামে এক বৈঠক করে। ওই বৈঠকে সীদ্ধান্ত নেয় একঘরে পরিবারের সদস্যদের সাথে কেউ যদি মেলামেশা করে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত মাতবর আবু নঈম সরকার লিংকন বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ আওয়ামীলীগ নেতা। আমারা এই এলাকায় অত্যন্ত সম্মানিত। বরং অভিযোগকারিরা বিভিন্ন জায়গায় আমার এবং আমার বাবার বিরুদ্ধে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাঁরা অসামাজীক। সমাজের সীদ্ধান্তের সাথে কখনোই তারা একমত পোষণ করেনা। এজন্য সমাজের মানুষও তাদের পছন্দ করে না। তাদের মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে আমিও ইউএনও অফিসে অভিযোগ করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্রাবণী রায় অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সামাজ সেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এরপর এবিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়ার সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল এসপি) নাজরান রউফ বলেন, সমাজচ্যুত করা অত্যন্ত খারাপ কাজ। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য যাবো এবং দুপক্ষের সাথে কথা বলে সমাধানের চেষ্টা করবো। অন্যথায় দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আজকের তানোর