রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৪৪ pm
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা ছেলেকে হত্যার অভিযোগে পুলিশের এক সহকারী কমিশনার ও এসআইসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী।
রাজধানীর ভাটারা এলাকায় নাগরিক সাফায়েত মাহবুব ফারাইজি নামের এক যুবককে হত্যার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনারসহ (এসি) আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তার মা।
বুধবার ঢাকা মহানগর হাকিম আরাফাতুল রাকিবের আদালতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সাফায়েত মাহবুব ফারাইজির মা শামিমুন নাহার এ আবেদন করেন।
এদিন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাতুল রাকিব বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। পরে আগামী ৯ মার্চের মধ্যে তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলার আরজিতে বলা হয়, গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে আসেন ফারাইজি। তিনি সেখানকার নাগরিকত্বও পেয়েছিলেন। দেশে আসার পর বান্ধবী সুজানা তার সঙ্গে দেখা করতে তাদের রামপুরার বাসায় আসতেন। অন্য বন্ধুরাও আসতেন। সবাই মিলে সাফায়েতের বাসায় নেশা করতেন। এসব তথ্য জানার পর সাফায়েতের মা শামিমুন নাহার সুজানাসহ অন্যদের বাসায় আসতে নিষেধ করেন। পরে সুজানাসহ অন্য আসামিরা সাফায়েতের মাকে মারধর করেন। ২৩ নভেম্বর শামিমুন ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়।
এরপর গত ১০ ফেব্রুয়ারি শামিমুন নাহার এবং তার ছেলে গুলশান থেকে বাসায় ফেরার পথে আসামিরা তাদের উপর আক্রমণ করে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। পরে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফেরেন।
ওইদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড্ডা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার তয়াছির জাহান এবং ভাটারা থানার এসআই মশিউর বাসায় সুজানাকে নিয়ে আসেন বলে নাহার জানান।
মামলার আবেদনে বলা হয়, পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা সুজানার সঙ্গে ফারাইজিকে যোগাযোগ ও সম্পর্ক রাখতে বলেন। অন্যথায় ফারাইজি দেশে থাকতে পারবে না বলে হুমকি দেন।
মামলার আরজির বিবরণ অনুযায়ী, সুজানা এসময় ফারাইজিকে তাদের বাসায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য বলেন। তার অনুরোধে ফারাইজি আসামিদের সঙ্গে বেরিয়ে যাওয়ার পর আর বাসায় ফেরেননি।
ফারাইজির কোনো হদিস না পেয়ে ভাটারা থানায় গিয়ে এসি তয়াছির জাহানের কাছে সুজানার ঠিকানা জানতে চেয়েছিলেন মা শামিমুন নাহার। তার ভাষ্য অনুযায়ী, তখন তয়াছির ঠিকানা তিনি জানেন না বলে জানিয়েছিলেন।
দুদিন পর ২৭ ডিসেম্বর শামিমুন নাহারের কাছে ভাটারা থানা থেকে ফোন করে বলা হয়, তার ছেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ১ জানুয়ারি ময়নাতদন্ত শেষে ফারাইজির লাশ হস্তান্তর করা হয়।
এসব ঘটনায় ৩ জানুয়ারি ফারাইজির মা শামিমুন নাহার ভাটারা থানায় মামলা করতে গেলে এসি তয়াছির জাহান ও এসআই মশিউর মামলা না করার হুমকি দেন বলে মামলার আবেদনে বলা হয়।
হত্যাকাণ্ডের ৪৫ দিন হয়ে গেলেও থানায় কোনও অভিযোগ না নেওয়ায় আদালতে মামলা করেন বলে জানিয়েছেন ফারাইজির মা শামিমুন নাহার।