শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৫ pm
আর কে রতন : চাষাবাদে কম খরচ আর পতিত জমি ভুট্রা চাষে আগ্রহ বেড়েছে রাজশাহী অঞ্চলের চাষিদের। বাজারে ভাল দামে বিক্রি করতে পেরে অনেকে চাষি এ আবাদে ঝুঁকে অনেক কৃষক। এতে চাষিদের পরিশ্রমের সুফল পেতে শুরু করেছে। চলতি মুওসুমে আহাওয়া অনুকুলে থাকায় এ এলাকায় ভুট্টার আশানুরুপ ফলন হয়েছে বলে কৃষক জানান। ভুট্টা প্রক্রিয়াজাত শেষে পাইকারদের কাছে হতে ভাল দাম পেয়ে দারুন খুশি চাষিরা।
ফলে তাঁদের মুখে হাসি ফুটেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার রাজশাহীর বিভিন্ন চরের মাঠিতে ভুট্টার ফলন অন্য অঞ্চল হতে বেশি। ফলে চরের কৃষকেরা আরও খুশি। বিগত ২ সপ্তাহ হতে রাজশাহীর মাঠে মাঠে ভুট্টার নিয়ে কৃষদের মাঝে ব্যস্ততা চলছে। রাজশাহী জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের চেয়ে চলতি মুওসুমে ভুট্টা চাষ বেড়েছে। চলতি বছরে রাজশাহীর ৯টি উপজেলায় ভুট্টা চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি সাড়ে ৯ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের জমিতে হেক্টরপ্রতি ভুট্টার উৎপাদন ৮ হেক্টরের নিচে নামে না।
আর বরেন্দ্র এলাকার বিল এবং পদ্মা নদীর ওপারে চরের জমিতে উৎপাদন ১২ মেট্রিক টন পর্যন্ত হয়ে থাকে। রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ফুলপুর গ্রামের ভুট্টা চাষি শ্রী নারায়ন চন্দ্র সরকার ভ‚ট্রা রোদে প্রক্রিয়াকালে বলেন, জমি থেকে ভুট্টা তোলার পর হাত অথবা প্রযুক্তির তৈরী মেশিনের মাধ্যমে ভ‚ট্রার দানা আলাদা করে। এরপর ১দিন রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। শুকানো শেষ হলে বাজারে বিক্রির জন্য নেওয়াহয়। কিনি আরো বলেন, ভুট্টা শুকানোর সময় বাড়ী হতে ফড়িয়ারা কিনে নিয়ে যায়। গোদাগাড়ী উপজেলার রিশিকুল গ্রামের বুলবুল আহমেদ জানান, ভুট্টা অল্প সময়ে ফসলটি ঘরে তোলা যায় এবং এর চাষ খরচ তুলনা মুলক অনেক কম হওয়ায় লাভ ভাল হয়।
এবার ৫বিঘা জমিতে আমি ভ‚ট্রা চাষ করেছিলাম। ইতিমধ্যে মধ্যে কাটা মাড়াই এর কাজ মেষের দিকে। অনেক চাষি ব্যস্ত সময় পার করছে। তানোর উপজেলা রেজাউল ইসলাম বলেন, জমি থেকে ভুট্টা তোলা, মেশিনে ভুট্টা আলাদা করা, ভুট্টা সংগ্রহের পর গাছ কেটে পরিস্কার করাসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত সময় পার করছি। সাথে বাড়ির নারীরাও রোদে রোদে ভুট্টা শুকানো জন্য সহযোগিতা করছেন। কেউ কেউ বাড়ির সামনে রোদে শুকাচ্ছেন ভুট্টার ডগাগুলো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করানোর জন্য।
মোহনপুর উপজেলার বাকশিমইল গ্রাামের ভুট্টাচাষি জফির উদ্দিন জানান, ভুট্টার ফলন হয়েছে। দামও ভাল পাচ্ছি। সব খরচ বাদ দিয়ে ভিঘা প্রতি আশানুরুপ লাভ হচ্ছে তাতেই খুশি। তবে আরেকটু দাম বেশি হলে আরও ভাল হতো। আমরা আরও বেশি লাভ করতে পারতাম। জেলা কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোছা: উম্মে ছালমা বলেন, দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ ও গবাদিপশু লালন-পালন বেড়েছে। আর মাছের ও গবাদিপশুর খাবার তৈরিতে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন পড়ছে ভুট্টার।
এতে করে ভুট্টার চাহিদা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। যে কারণে দরও কুষকরা ভাল পাচ্ছে। ফলে চাষিরা লাভবান হয়ে ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। রাজশাহী জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কে জে এম আবদুল আউয়াল বলেন, রাজশাহীতে গত কয়েক বছর হতে ভুট্টা চাষ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। ফলে কৃষকরা যেন গুনগত উন্নতমানের বীজ জমিতে রোপন করে আরো বেশি লাভবান হন, সেজন্য কৃষি বিভাগ থেকে নিশ্চিত করা হয়। আর ভাল বীজের কারণে ভাল উৎপাদন হয়।
তিনি বলেন, স্বল্প সময়ে ভাল লাভ দেখেই চাষিরা ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন। এ বছরও ভুট্টার বাজার ভাল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উৎপাদনও হয়েছে ভাল। আমরা আশা করছি আগামী বছর ভুট্টা চাষ আরও বাড়বে। আজকের তানোর