রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:০৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
কৃষি গবেষণায় কৃষক পর্যায়ে দেশ গড়ার প্রচেষ্টায় নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে নূর মোহাম্মদ। নূর মোহাম্মদের বাড়ী রাজশাহীর তানোর উপজেলার গোল্লাপাড়া গ্রামে। বরেন্দ্র ভূমিতে প্রায় প্রতি বছরই খরায় নষ্ট হয়ে যেত ধান। সেই ধান রক্ষা করতেই কাজে লেগে যায় নূর মোহাম্মদ।
নিজের মাটির ঘরটাকে বানিয়ে ফেলেছে গবেষণাগার। দেশীজাতের উন্নতি ঘটিয়ে ধানের জীবন কাল কমিয়ে এনেছে। কোনটির ফলন বাড়িয়েছে। এতে ফসলে পানির প্রয়োজনীয়তা কম লাগে ও ফসল বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। খরা পিড়িত বরেন্দ্র অঞ্চলে কীভাবে কম পানিতে কম সময়ে ধান কেটে ঘরে তোলা যায় এ নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
উৎপাদন বৃদ্ধির স্বার্থে বহুজাতের ধানের জিন সংমিশ্রণ করে একটি আধুনিক উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করা হয়। তার উদ্ভাবন এবার দেশের সব চাইতে চিকন ধান। গত ছয় বছরের গবেষণায় এই ধান উদ্ভাবন করেছে নূর মোহাম্মদ। নাম দেওয়া হয়েছে ‘নূর ধান’। চিনি গুঁড়ার মতোই চিকন তবে চিনি গুঁড়ার চেয়ে লম্বা। দেশের ঐতিহ্যবাহী দাদখানী, রাধুনীপাগল, কালজিরা, বাঁশফুল, কাটারী ভোগের চেয়ে এ চাল অনেক চিকন।
নূর মোহাম্মদ বলেন, দেশের কোন চিকন ধান বিঘাপতি ১০-১২ মনের বেশি ফলন হয় না। তার উদ্ভাবিত এই ধানের গড় ফলন হবে আমন মৌসুমে বিঘা প্রতি ১৭ মন ও বোরো মৌসুমে বিঘাপ্রতি ২১ মন। আমন ও বোরো দুই মৌসুমেই এই ধানের চাষ করা যাবে। তবে, বোরো মৌসুমে ফলন বেশী। সুগন্ধি না হলেও এ চালের ভাত খেতে ভালো লাগবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে নিত্য নতুন প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে দ্রুত বাস্তবায়ন করে ও এলাকার কৃষকদের মাঝেও নিত্য নতুন প্রযুক্তি বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। কৃষক পর্যায়ে ধানের নতুন নুতন সারি উদ্ভাবন করায় এলাকার কৃষকরা বিভিন্ন মৌসুমে নতুন নতুন দেশী বিদেশী জাতের ধানের অবস্থা তাদের নিজ এলাকায় দেখার সুযোগ পেয়েছে। তারা তাদের পছন্দের জাত সমূহ চিহ্নিত করে বীজও সংগ্রহ করতে পেরেছে। সে জন্য এলাকায় উফশী জাতের সম্প্রসারণ ত্বরান্বিত হচ্ছে। খরা সহিষ্ণু সারিগুলোর জীবন কাল কম হওযায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ শুরুর আগেই ধান কেটে ঘরে তোলা যাবে। আগাম ওঠার কারণে সেচের খরচ কম হবে। ভালো বাজার মিলবে। সে কারণে সারিগুলো বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য উপযোগী। এবার আমন ২০২১ মৌসুমে তার গবেষণা মাঠে তার উদ্ভাবিত দুই জাতের ধান কাটা হয়েছে। একটি চিকন ‘নূর ধান’ অপরটি খরা সহিষ্ণু ধান। ধান কাটা মাড়াই ও ঝাড়াই শেষে শুকনা ওজনে চিকন ‘নূর ধান’ বিঘা প্রতি ১৭.৫ মণ ও খরা সহিষ্ণু ধান বিঘা প্রতি ২০ মণ ফলন পাওয়া যায়।
এসময় উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম, সহকারী পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ডিএফএম ইমদাদুল ইসলাম ও এলাকার কৃষকরাও উপস্থিত ছিলেন। আজকের তানোর