সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৪৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : এক বছরেও কুল কিনারা হয়নি রাজশাহী কলেজের মেধাবি ছাত্র শাহিন আলম শুভর (২৫) মৃত্যুর ঘটনার। গত বছর ৪ ডিসেম্বর রাজশাহী নগরের নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত ‘হাইড আউট ক্যাফে’ নামের একটি রেস্তোরার শুভর রুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজশাহীর এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ীর মেয়েকে আদালতে বিয়ের ২৬ দিন পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলা এখন সিআইডির হিমঘরে বলে অভিযোগ তুলেছেন তার পিতা মাহবুর রহমান।
শাহিন আলম শুভর বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার নুরপুর গ্রামে। শুভ রাজশাহী কলেজে ইতিহাস বিভাগের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। দিনমজুর মাহবুর রহমানের ছেলে শুভ লেখাপাড়ার পাশাপাশি হাইড আউট ক্যাফেতে প্রধান শেফ পদে কর্মরত ছিলেন।
মাহবুর রহমান বলেন, রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ড্যাস কালেকশনের মালিক আলমগীর হোসেনের মেয়ে এহিদিন নেসা গত বছরের ৪ নভেম্বর আমার ছেলেকে নিয়ে গিয়ে নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ে বিয়ে করে। এর ২৬ দিন পর হাইড আউট ক্যাফের শুভর রুমে তাকে হত্যা করা হয়। ওই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে ক্যাফে বন্ধ ছিল।
মাহবুর রহমানের দাবি, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে আলমগীর ও তার লোকজন জোর তৎপরতা চালায়। প্রথমে এটি আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করলেও এক মাস আটদিন পর গত ১২ জানুয়ারি হত্যা মামলা নেয় পুলিশ। মামলায় আসামী করা হয়েছে শুভর স্ত্রী এহিদিন নেসা, হাইড আউট ক্যাফের সেফ কাওসার ও মালিক সায়েমকে।তবে মামলার বাদি এজাহারে এহিদিনের পিতা আলমগীর নাম দিলেও পরে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তাকে বাদ দিয়ে মামলা রেকর্ড করে। দরিদ্র কৃষক ঘরের সন্তান শুভকে বিয়ে করায় এহিদিনের বাবা আলমগীর পরিকল্পিতভাবে শুভকে হত্যা করে বলে দাবি করেন মাহবুর রহমান।
মাহবুর রহমান আরও বলেন, এহিদিনের বাবা আলমগীর চিকিৎসককে ম্যানেজ করে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনও তাদের পক্ষে নেয়ার চেষ্টা করেছেন। এ কারণে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ ও ধরণ নির্ণয় করা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের অধ্যাপক জামান নিশাত এ প্রতিবেদন দেয়।
মাহবুর রহমান আর বলেন, ঘটনার দিনের হাইড আউট ক্যাফের সিসি টিভির ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু সিসিটিভির হার্ডডিক্সে এক ঘন্টার ফুটেজ উধাও হয়ে গেছে। ওই ফুটেজ পাওয়া গেলে হত্যার সঙ্গে কারা জড়িত সেটি পাওয়া যেত বলে দাবি করেন মাহবুর রহমান।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাজশাহী সিআইডির পরিদর্শক শাজাহান আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। সংগ্রহ করা আলামতগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। তবে এখনো জানানোর মত কোন অগ্রগতি হয়নি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ মামলার তিনজন আসামীর মধ্যে কাওসার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে কাওসারসহ তিন আসামী হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। তবে তাদের কল রেকর্ডগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।