রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৪৩ pm
আশরাফুল ইসলাম রনজু, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে সমাজসেবা অফিসের ভবন ও প্রবেশপথ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এতে অফিস স্টাফ ও সেবাপ্রার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অপরদিকে, জনবল সংকটে কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে সেবা প্রার্থীরা প্রতিনিয়ত হয়রানি ও বিড়ম্বনায় পড়ছেন। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তার জুরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সেবাপ্রার্থীরা।
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা গেছে, তৎকালিন সময়ে উপজেলা পর্যায়ে কোর্ট বিলুপ্ত হবার পর সেই পরিত্যক্ত কোর্ট ভবনেই তানোর উপজেলা সমাজসেবা অফিস কার্যক্রম চালু করা হয়। তানোর-তালন্দ সড়কের পাশে পরিত্যক্ত জরাজীর্ণ উপজেলা কোর্ট ভবনে অবস্থিত এই কার্যালয়। মেইন সড়ক থেকে মাত্র দেড়শ গজ দূরে অফিস পথ। এই পথে যেতে রয়েছে সেই কালের ইট সোলিং রাস্তা। এই রাস্তার ইট উঠে ও ভেঙ্গে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু স্থাপনের দীর্ঘ ৪২ বছরেও আর সংস্কার হয়নি।
বর্তমানে এই অফিসটি সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩ ফিট উচু। এছাড়া অফিসে প্রবেশ রাস্তার ইট উঠে বিভিন্ন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিবন্ধীরা হুইল চেয়ার কিংবা ট্রাইসাইকেল নিয়ে প্রবেশ করতে পারেন না। এতে সেবা নিতে আসা বিশেষ করে প্রতিবন্ধী, বয়স্ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়াও বিধবারা হয়রানি ও বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
সরজমিনে দেখা যায়, বেশ কয়েক স্থানে ভবনের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে। বর্তমানে ভবনটির বীমে ফাটল ধরে রড বেরিয়ে গেছে। দরজা জানালা ভেঙ্গে রয়েছে। ভারী বৃষ্টিতে ছাদ চুয়ে পানি পড়ে। এছাড়া সামান্য জড় বৃষ্টি হলে সব গুটিয়ে বসে থাকতে হয়। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া একমাত্র টয়লেট তাও একেবারেই লাজুক। তবে, প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা টয়লেট কিংবা কমোটের ব্যবস্থা নেই। এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই জরাজীর্ণ ভবনে প্রতিনিয়ত চলছে তানোর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের কার্যক্রম। এনিয়ে আতঙ্কে দিন কাটছে সমাজসেবা অফিস কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সেবাপ্রার্থীদের।
তানোর সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রবিউল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি তিনি এই অফিসে যোগদান করেছেন। জনবল এবং অবকাঠামো সংকটেও প্রায় ৩০ হাজার মানুষের তারা বিভিন্ন ভাবে সেবা দিয়ে থাকেন। এরমধ্যে ১৫ হাজার ৮৭ জন সরাসরি বিভিন্ন ভাতাভোগী রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, অফিসে সৃষ্টপদ ১২ জন। কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৬ জন। অর্ধেক পরিমান জনবল সংকটেও সেবার কমতি নেই। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল ৯টায় আসলেও কাজের চাপে ৫টার পরিবর্তে যেতে হয় ৮টায়।
সেবা গ্রহিতা আস্থা নামক প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি সামশুল আলম বলেন, স্বাধীনতার এতো বছরেও তানোরে সমাজসেবা অফিসের নিজস্ব ভবন হয়নি। ফলে তৎকালিন সময়ের পরিত্যক্ত উপজেলা কোর্ট ভবনে ঝুঁকি নিয়ে চলছে সমাজসেবা অফিসের কার্যক্রম। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এই অফিসটি সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩ ফিট উচু। এছাড়া অফিসে প্রবেশ রাস্তার ইট উঠে বিভিন্ন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিবন্ধীরা হুইল চেয়ার কিংবা ট্রাইসাইকেল নিয়ে সরাসরি অফিসে যেতে পারেন না। এতে সেবা নিতে আসা বিশেষ করে প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের হয়রানি ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অবিলম্বে তিনি এই সমস্যার পরিত্রাণ চান তারা।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মাদ হোসেন খাঁন বলেন, ‘লিখিতভাবে বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে একাধিকবার জানানোর পাশাপাশি উপজেলার মাসিক সমন্বয় কমিটি সভায় ভবনটির কথা তুলে ধরা হলেও এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
তবে এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, উপজেলা পরিষদ চত্বরের রাস্তাঘাট, ড্রেন ও কালভার্ট মেরামত ও নির্মাণ পৌর কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসের লাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। অবিলম্বে জেলা প্রশাসক ও এমপি মহোদয়কে জানিয়ে সমাজসেবা অফিসের রাস্তা মেরামত ও নাজুক পরিস্থিতি থেকে উন্নতি করার চেস্টা করা হবে।
তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, এই বিষয়ে ইউএনও ভালো বলতে পারবেন। তবে, ওই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কার্যক্রম স্থানান্তর করাটা দরকার বলে তিনি মনে করেন। আজকের তানোর