সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৩৮ pm
ডেস্ক রির্পোট : তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হোসেন একসময় ছাত্রদলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তাঁকে জামালপুরের ‘ভুঁইফোড় ডাক্তার’ বলেও অভিহিত করেছেন ফখরুল।
আজ সোমবার বিকেলে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা হয়। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সামরিক শাসক প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদ পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে বিএনপি এদিনকে ‘স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হোসেন একসময় ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে যখন মির্জা ফখরুল ইসলাম তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করে তখন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের দ্বিতীয় তলায় যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক গোলাম মাওলা শাহিন দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘মুরাদ ছাত্রদল করে নাই।’ এ সময় মহাসচিবের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন ওই তরুণ।
মির্জা ফখরুল তাঁকে থামিয়ে বলেন, ‘ইউ ডোন্ট নো। তুমি বাজে কথা বলবে না। তুমি জানো না। আমি জানি বলে বলছি। এই দাঁড়াও, কী?…চুপ করো। তুমি জানো না। ইউ ডোন্ট নো। ইউ ডোন্ট নো। ইউ ডোন্ট নো… । এই দাঁড়াও, বাজে কথা বলবা না। এই ছেলে কে তুমি। তুমি এদিক দিয়ে বেরিয়ে আসো। তুমি জানো না সেটা, সে জন্য এ কথা বলছ। তুমি জানো না… । আমি জানি বলে বলছি। এই বেয়াদব! চুপ…চুপ বেয়াদব। এদিকে আসো। এদিকে আসো…। তুমি এদিকে আসো।’
মঞ্চে থাকা নেতাদের দিকে তাকিয়ে মির্জা ফখরুল জিজ্ঞেস করেন, ‘কে এটা? হু ইজ দিজ বয়?’ এরপর সামনের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘কে? তুমি কে? এদিকে আসো তো। এদিকে আসো… । তুমি এগুলো জানো না।’
এরপরও শাহিন মহাসচিবের সঙ্গে তর্ক না থামালে পুরো মিলনায়তনে কর্মীরা ক্ষুব্ধ হন। এ সময় মহাসচিব তাঁকে চুপ করতে বলে নিচে নেমে মঞ্চে আসার জন্য বলেন। এ সময় মিলনায়তনে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে মুহুর্মুহু স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময়ে মঞ্চে থাকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ, দক্ষিণের আবদুস সালাম হাত উঠিয়ে ওই যুবদল নেতাকে চুপ করতে বলেন।
বিএনপি মহাসচিব এ পর্যায়ে সবাইকে শান্ত হয়ে বসার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের, দুর্ভাগ্য আমাদের যে একসময়ে সে ছাত্রদল করেছে, পরবর্তীতে সে ছাত্রলীগের নেতা হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছে। এটা দুর্ভাগ্য আমাদের, এই রকম একটা ছেলে ওই সময়ে ছাত্রদলে ছিল। দিজ দ্য মোস্ট আনফরচুনেট।’
ফখরুল বলেন, ‘এ জন্যই বলছি, বড় কথা সেটা নয়, বড় কথা আজকে আমাদের ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে, ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই জালেম, এই ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে হবে।’
এই সরকার রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। যে কারণে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে অত্যন্ত জঘন্য, নিকৃষ্ট প্রচার চালানো শুরু করেছে। কাকে দিয়ে করাচ্ছে? ভুঁইফোড় ডাক্তার, জামালপুর, সরিষাবাড়ির এবং এটাও শুনেছি যে সে নাকি ছাত্রদল করত একসময়। সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক ছিল। পরবর্তীকালে সে ছাত্রলীগে জয়েন করেছে।’
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের শেষের অংশটিকে ‘মারাত্মক’ বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সে বলেছে, যা কিছু করছি, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে করছি।’
ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুল হক মিলনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নব্বইযের সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে আসাদুজ্জামান রিপন, হাবিবুর রহমান হাবিব, খায়রুল কবির খোকন, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি।
আরও ছিলেন- সাইফুদ্দিন মনি, খন্দকার লুতফুর রহমান, আসাদুর রহমান খান, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মুস্তাফিজুল করীম মজুমদার, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ বক্তব্য দেন। সূত্র : আজকের পত্রিকা