বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২১ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই
ভুয়া বিলে পৌর তহবিলে মেয়র আব্বাসের ‘ডাকাতি’

ভুয়া বিলে পৌর তহবিলে মেয়র আব্বাসের ‘ডাকাতি’

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভা থেকে গত ৩ মে ৫৪ হাজার ২৫০ টাকা উত্তোলন করা হয়। এই টাকা খরচের খাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ‘ঢাকায় আম পাঠানো’। ৬ জুন ঢাকায় লিচু পাঠানোর জন্য পৌরসভার তহবিল থেকে তোলা হয় ১ লাখ ২০ হাজার ৩৫০ টাকা।

শুধু ‘উপঢৌকনের’ আম ও লিচু পাঠানোই নয়; কাটাখালী পৌর মেয়র আব্বাস আলী এমন নানা খাতে পৌরসভার টাকা ব্যয় করেছেন। এমনকি ব্যক্তিগত চেম্বারের সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামতেও টাকা নিয়েছেন পৌরসভা থেকে। কিছু কিছু খাতে পাওয়া গেছে অস্বাভাবিক ব্যয়ের চিত্র। এসব টাকা উত্তোলন করেছেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী জহুরুল ইসলাম ওরফে লিটন।

মেয়র আব্বাস জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কাটাখালী পৌর শাখার আহ্বায়ক ছিলেন। পরপর দুবার তিনি নৌকা নিয়ে মেয়র হয়েছেন। সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে তাঁর বিতর্কিত বক্তব্যের অডিও ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে থানায় মামলা হয়। আব্বাসকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আত্মগোপনে থাকা আব্বাসকে বুধবার ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পৌরসভায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত পৌরসভার ব্যয়ের হিসাবের খাতা থেকে অতিথি আপ্যায়ন, মনোহারিসামগ্রী ক্রয়, ঢাকায় উপঢৌকন পাঠানো, সভা করাসহ বিভিন্ন খরচের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গত ৩ মে আম কেনা বাবদ ৫৪ হাজার ২৫০ টাকা তুলেছেন মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী জহরুল ইসলাম। খরচের খাত হিসেবে লেখা রয়েছে ‘ঢাকায় আম পাঠানো’।

এছাড়াও ১৭ জুন ৪৪ হাজার ৫৬০ টাকা ও ২৮ হাজার ৩৪০ টাকা এবং ২২ জুন ৮ হাজার ৮২০ টাকা তোলা হয়েছে। ৬ জুন ঢাকায় লিচু পাঠানোর জন্য তোলা হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৩৫০ টাকা। গত ২৮ জুন ব্যক্তিগত সহকারীর নামে ৫০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। এই টাকার জন্য কোনো খরচের খাত উল্লেখ করা হয়নি।

মেয়রের ব্যক্তিগত চেম্বারের সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামত বাবদ ৩৩ হাজার ৩৩৮ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে পৌরসভার তহবিল থেকেই। খরচের খাতায় তা উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া পৌরসভার ব্যয়ের খাতায় বিভিন্ন খাতে অস্বাভাবিক বিলও পাওয়া গেছে।

১৯ এপ্রিল একটি হোটেলের আপ্যায়ন বিল পরিশোধ করা হয়েছে ৭৯ হাজার ৩১০ টাকা। একই তারিখে একই হোটেলের আপ্যায়ন বিল ২৭ হাজার ১৩০ টাকা। ১৫ এপ্রিল ‘ফুটবল খেলার খবর দেখানো’ বাবদ তোলা হয়েছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৩২৪ টাকা।

ঈদে ত্রাণ কেনার খরচ দেখানো হয়েছে ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এই টাকা তোলা হয়েছে গত ১৫ এপ্রিল। একই তারিখে চাল-ডাল কেনার খরচ দেখানো হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। ৮ এপ্রিল অটোচালকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের ব্যয় দেখানো হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার ৪১১ টাকা।

পৌরসভার অতিথি আপ্যায়নের নামে সব বিল পরিশোধ দেখানো হয়েছ ‘একতা হোটেল’ নামের একটি খাবারের হোটেলের নামে। কাটাখালী বাজারের এই হোটেলের মালিক মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী এবং তাঁর ছোট ভাই মনিরুল ইসলাম। তাঁরা মেয়র আব্বাসের চাচাতো ভাই।

অস্বাভাবিক বিলগুলো এসেছে ‘মমতাজ লাইব্রেরি অ্যান্ড স্টেশনারি’ নামের একটি দোকানের নামে। এই দোকানের মালিক জাহিদ-উল-হাসান জুয়েল। তিনি মেয়রের খালাতো ভাই। পৌরসভার সব মনোহারিসামগ্রী কেনা হয়েছে এই দোকান থেকেই। পৌরসভার হিসাবের খাতায় একতা হোটেল ও মমতাজ স্টেশনারির বিলের ছড়াছড়ি দেখা গেছে।

পৌরসভার কাউন্সিলর মনজুর রহমান বলেন, শুধু এই দুই প্রতিষ্ঠান না, ভুয়া বিল তৈরিতে আরও প্রতিষ্ঠানের নাম আছে। অনেক জিনিস নাকি নেই, শুধু বিল করা হয়েছে তারও প্রমাণ রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে ভুয়া বিল দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মমতাজ স্টেশনারির মালিক ও মেয়রের খালাতো ভাই জাহিদ-উল-হাসান। তবে বিভিন্ন পণ্যের বেশি দাম ধরার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেননি।

তিনি বলেন, ‘মালামাল দিয়ে টাকা পাওয়া যেত না। তিন-চার মাস পরপর বিল হতো। দিনের পর দিন আমার টাকা আটকে থাকত। তাই ক্ষতি পোষাতে একটু বেশি করে বিল ধরা হতো।’

এসব বিষয়ে পৌরসভার হিসাবরক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার কিছু করার ছিল না। মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী বিল এনে দাখিল করলে তা পরিশোধ করতেই হতো। কোনো উপায় ছিল না। মেয়রের নির্দেশেই সব বিল দিতে বাধ্য হয়েছি।’ আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.