সমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:৩৬ am
নিজম্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে প্রান্তিক কৃষকদের আলুর জমি লিজের টাকা গভীর নলকূপ (ডীপ) ও ব্যক্তি মালিকানা অপারেটরা প্রজেক্ট করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে নিয়ে নিজেদের পকেট ভরছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কৃষকরা চাষাবাদ করতে চাইলেও অপারেটরদের বাধার মুখে তা পেরে উঠতে পারছেন না নিরীহ বিপুল সংখ্যক কৃষক। ফলে নিরুপাই হয়ে জমি লীজের টাকা চাইলেও তা পাচ্ছেন না তারা।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, প্রজেক্ট আলু চাষিরা প্রকৃত জমির মালিকের কাছ থেকে জমি লীজ না নিয়ে অপারেটরদের সাথে চুক্তি করেন। এতে করে কৃষকরা নিজের জমি থেকেও পারছেন না আলু চাষ করতে। এছাড়াও মিলছে না লীজের পুরো টাকা। ফলে কৃষকদের নিয়ে চলছে চরম অরাজকতা। অথচ এই কৃষকদের রক্ত ঘামে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আর তাদের নিয়েই এত চিনিমিনি কেন?
জানা গেছে, তানোর উপজেলায় প্রচুর আলু চাষ হয়। উপজেলার বিভিন্ন মাঠে আলুর বিশাল প্রজেক্ট করা হয়। মৌসুমী আলু চাষিরা জমিতে রোপা আমন ধান রোপনের পরপরেই শুরু হয় জমি লীজের কার্যক্রম। যারা প্রজেক্ট বা গভীর নলকূপের আওতায় একশো, দেড়শো, দুইশো ও আড়াশো থেকে তিনশো বিঘা জমি আছে। সেচ যোগাযোগের ব্যবস্থা ভালো। ওইসব ডীপের অপারেটরদের সাথে চুক্তি করে লীজ সেচ বাবদ কয়েক লাখ টাকা দিয়ে দেন। আর অপারেটর টাকা নিয়ে ইচ্ছেমত জমির মালিক প্রান্তিক চাষিদের দেন। কিন্তু কোনভাবেই জমির মালিকরা জানতে পারেন না, কত টাকায় লীজ হয়েছে তার জমি। এমনকি বুঝতেও দেওয়া হয়না। যখন চাষাবাদের জন্য প্রস্তুতি নেয় তখন অপারেটর কিছু টাকা দিয়ে জমিতে আলু চাষ হবে, লীজ হয়ে গেছে বলে উঠিয়ে দেন। আর নিয়ম দীর্ঘদিনের। এসব কিছু সহনীয় বিএমডিএ কৃষি দপ্তরের এক প্রকার অসাধু কর্মচারীরাও জড়িত এমন অভিযোগ খোদ কৃষকের।
উপজেলার কামারগাঁ ইউপির ছাঔড় হরিপুর এলাকায় নয়শো বিঘা আলুর প্রজেক্ট করছেন এগ্রি কনসার্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তার মালিক ড. শেখ আব্দুল কাদের। গত ২৫ নভেম্বর তানোর চৌবাড়িয়া রাস্তার ছাঔড় বালিকা স্কুলের উত্তরে রাস্তার পশ্চিমে একটি পাকা ঘরের সামনে ট্রাক থেকে সার নামানো হচ্ছিল। সেখানে বসে ছিলেন এক ব্যক্তি। তার পরিচয় জানতে চাইলে কোন ধরনের পরিচয় না দিয়ে নিজেকে কৃষিবিদ দাবি করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান নয়শো বিঘা জমিতে আলু চাষ করছে। এসব সার তো বিসিআইসির ডিলারদের কাছে থাকে। আপনি কিভাবে পেলেন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন টাকা থাকলে সব মিলে। চুরি করে আনছি না। যেভাবেই হোক টাকা দিয়েই আনছি। ওই সময় ওই এলাকার কৃষক এসে বলা শুরু করে আমাদেরকে বলা হচ্ছে সার নেই। তাহলে এরা ট্রাকের ট্রাক সার কিভাবে পাচ্ছে।এমনকি এরা যে সব ডীপ এলাকায় আলু করছে লীজের টাকা জমির মালিকদের না দিয়ে অপারেটর কে দেন। তারা আলু চাষের নামে প্রান্তিক চাষিদের শোষণ করছে। এসব বিষয়গুলো বিএমডিএ’র মিস্ত্রিরা ও কৃষি অফিসের বিএসএফ বা মাঠে যারা কাজ করে তারা জানলেও নিরবে থাকে।
যেসব গভীর নলকূপের আওতায় আলুর প্রজেক্ট হচ্ছে, তারা কিভাবে জমি লীজ পেল। পানি সেচের হার ও কিভাবে এতো সার পেল এসব বিষয়ে জোরালো ভাবে সরেজমিনে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুই দপ্তরকে আহবান জানান সচেতন আলু চাষিরা। আর এজন্যই গভীর নলকূপ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। টাকা যত হোক ডীপ চাই। কারণ এই আলুর মৌসুমে অপারেটররা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর বিএমডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান জানান, এসব ঘটনায় কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণকরা হবে বলে জানান তিনি। আজকের তানোর