মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:২৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় রাজশাহীর বাগমারায় প্রায় ৫০ টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে। ইট তৈরীর মৌসুমে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম দ্বিগুন হওয়ায় ইট ব্যবসায়ী ও ভাটার মালেকেরা বিপাকে পড়েছেন।
পর্যাপ্ত পরিমানে কয়লা আমদানী না থাকায় ইট পোড়ানোর অভাবে কোন কোন ইটভাটার মালিক ইট তৈরীর কাজ বন্ধ রেখেছেন বলে জানা গেছে। এমন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর আলম হেলাল। কিছু কিছু ইটভাটার মালিক ও ব্যবসায়ী ইট পোড়ানোর জন্য কাঠ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাগমারা উপজেলায় ছোট, বড় প্রায় ৫০ টি ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটার মালিক ও ব্যবসায়ীরা মৌসুমের শুরু সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবর থেকে ইট তৈরীর কার্যক্রম শুরু করেন। চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানো কয়লা সংকটের কারনে ্ইট তৈরীর কার্যক্রম এখনো শুরু করতে যাচ্ছে না ইটভাটা মালিক ও ইট ব্যবসায়ীরা। কোন কোন ইটভাটা মালিক ও ব্যবসায়ীরা ইট পোড়ানোর জন্য কাঠ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আবার কোন কোন ইটভাটার মালিক লোকসানের শস্কায় ইট তৈরীর কার্যক্রম থেকে বিরত থাকছেন বলেও জানা গেছে।
কয়লার দাম বৃদ্ধির কারনে গত নভেম্বর বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ইটভাটা গুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন। এমন সিদ্ধান্তের পর পরই বাগমারাসহ রাজশাহী অঞ্চলের ভাটা গুলোতে ইটের দাম বেড়ে যায়। দাম বাড়ার কারনে বিপাকে পড়েন সরকারী ও বে-সরকারী নির্মান সংস্থা গুলো। ইটের অভাবে থেমে গেছে সরকারী বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের কাজ। এ ছাড়াও বেকার হয়ে পড়েছে ইটভাটায় কর্মরত লক্ষ লক্ষ শ্রমিক।
বাগমারা উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীল আলম হেলাল জানান, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিন আফ্রিকাসহ কয়লা উৎপাদনকারী দেশ গুলো আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম দ্বিগুন বেড়ে গেছে। কয়লার দাম বৃদ্ধির সাথে যোগ হয়েছে জাহাজ ভাড়া, ভ্যাটসহ আমদানী শুল্ক। সব মিলে গত বছর আমদানিকৃত কয়লার দাম ছিল নয় থেকে দশ হাজার টাকা টন। এবার দাম বেড়ে একই কয়লা দাড়িয়েছে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা টন। কয়লার এমন দাম বৃদ্ধির কারনে কোন কোন ভাটা মালিক কাঠ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কয়লার চাইতে কাঠের দাম কম হওয়ায় ভাটা মালিক গুলো কাঠ সংগ্রহের জন্য মাছে নেমেছেন।
কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হলে পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হবে বলে মনে করেন ইটভাটা মালিক সিমিতর সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীল আলম হেলাল। তিনি বলেন, ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হলে বাতাসে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিবে। যার কারনে ভাটা এলাকার লোকজনের ব্যাপক সমস্যার সৃষ্টি হবে। এছাড়াও এলাকার গাছ গুলো কেটে ছয়লাভ করবে ভাটা মালিকেরা। এমন কর্মকান্ডের সুযোগ নিয়ে কিছু টাউট বাটপার সরকারী রাস্তার গাছ গুলো কেটে ছয়লাভ করবে বলে তিনি মনে করেন। যার কারনে তিনি ভাটা মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কয়লার দাম কমানোর জন্য দাবী জানিয়েছেন।
বাগমারায় ইট প্রস্তুত কারক মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব জাহাঙ্গীল আলম হেলাল জানান, একটি ইট ভাটায় ইট তৈরীতে সর্বনিম্ন ১৫০ থেকে ১৮০ জন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। এছাড়াও ইট ভাটা মালিকদের প্রতি মৌসুমে সরকারকে সাড়ে ৪ লক্ষ টাকা ভ্যাট প্রদান করতে হয়।
এর বাইরেও অনেক খরচ ভাটা মালিককে করতে হয়। বর্তমানে ইটের বাজার ৭ থেকে ৮ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। যার কারনে ভাটা মালিককেরা তাদের ব্যবহৃত মূলধন হারাতে বসেছে। অনেকেই ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে ইটভাটা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বর্তমানে কয়লার দাম বৃদ্ধির কারনে তারা ইট তৈরী থেকে বিরত থাকবেন বলে জানা গেছে। আজকের তানোর