রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:২৭ am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা সংক্রমণ কমে আসায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলে আবারো স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। ভারত যাতায়াতে লাগছে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা দূতাবাসের ছাড়পত্র। থাকছে হচ্ছে না ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন। শুধু করোনা নেগেটিভ সনদ হলেই যাত্রীদের সুযোগ মিলছে ভারত গমন। এতে স্বস্তি ফিরেছে যাত্রীদের মধ্যে। যাতায়াতকারী এসব যাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশ রয়েছে চিকিৎসাসেবী, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী। তবে এখনো বন্ধ রয়েছে স্থলপথে ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত।
জানা গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর ভ্রমণ, চিকিৎসা, ব্যবসা আর শিক্ষাগ্রহণে প্রায় ১৮ লাখ যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করত। এতে সরকারেরও ভ্রমণ ক্ষাতে প্রায় একশ কোটি টাকা আয় হতো। গেল বছর মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিভিন্ন শর্ত জারি করে। এসে যাত্রী যাতায়াত প্রায় শূন্যের কোটায় দাঁড়ায়।
ফলে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করতে না পেরে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যাত্রীরা। তবে বর্তমানে করোনা সংক্রমণ কমে আসায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলে আবারো এ পথে পাসপোর্ট যাত্রী বাড়তে শুরু করেছে। আগে করোনার কারণে ভারত থেকে ফিরলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের ছাড়পত্র লাগতো। এতে ভোগান্তির যেমন শেষ ছিল না তেমনি অর্থদণ্ড গুনতে হতো। এখন কেবল করোনা নেগেটিভ সনদ হলেই ভারতে যাওয়ার সুযোগ মিলছে যাত্রীদের।
ভারত ফেরত পাসপোর্ট যাত্রী ঢাকার আমেনা বেগম জানান, আগে ভোগান্তির শেষ ছিল না। এখন ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাই থাকতে হয় না ও ছাড়পত্র কিছুই লাগছে না। কেবল করোনা নেগেটিভ সনদ হলে ভারত যাওয়া যাচ্ছে। যাত্রী আমিনুল বলেন, ভারতে যাওয়ার সময় একবার ফেরার সময় আরেকবার মোট দুইবার করোনা পরীক্ষা করাতে তিন হাজার টাকা লাগে। টিকার ডবোল ডোজ গ্রহনকারীরা করোনা পরীক্ষা ছাড়া যাতায়াতের সুযোগ হলে অনেকে উপকৃত হবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মোহাম্মদ রাজু জানান, সংক্রমণ কমে আসায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলে যাত্রী যাতায়াত বেড়েছে। যারা ভারতে যাচ্ছেন বা ফিরছেন অধিকাংশই চিকিৎসা সেবি। দ্রুত যাত্রীরা যাতা তাদের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম শেষ করতে পারে আন্তরিক হয়ে কাজ করছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। বর্তমানে মেডিকেল, বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় যাত্রীরা যাতায়াত করছে। ভারতে যাওয়ার সময় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর থেকে পরীক্ষা করানো করোনা নেগেটিভ সনদ লাগছে। ভারত থেকেও একইভাবে আনতে হবে করোনা নেগেটিভ সনদ। ট্যুরিস্ট ভিসায় স্থলপথে যাত্রী যাতায়াত এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) সঞ্জয় বাড়ৈ জানান, করোনা নেগেটিভ সনদ হলেই যাওয়া যাচ্ছে ভারতে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করছে। ৬ মাস আগে যাত্রীর পরিমাণ ছিল দিনে ৪০ থেকে ৫০ জন। এখন তা বেড়েছে দিনে দেড় হাজারের মতো। যাত্রী সেবাই ইমিগ্রেশনের পাশাপাশি কাজ করছে বন্দর।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২৬৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। ভারত থেকে পাসপোর্ট যাত্রী ফিরেছে ৭শ’ জন। ভারতে গেছেন ৮৪৫ জন। ৬ মাস আগে দিনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দিনে ২ হাজারের বেশি। মৃত্যু ৪০ থেকে ৫০ জনের মধ্যে। ভারত থেকে যাত্রী আসা কমে দাঁড়িয়েছিল দিনে ৫০ জনের মধ্যে।
এদিকে কলকাতাভিত্তিক আনন্দবাজার পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আট হাজার ৪৮৮ জন। মারা গেছে ২৪৯ জন। ছয় মাস আগে ভারতে প্রতিদিন গড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখের বেশি। মৃত্যু দিনে ৪ হাজার ছাড়িয়েছিল। সূত্র : পদ্মাটাইমস