রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:১৬ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, পত্নীতলা : নাম রফিকুল ইসলাম, তিনি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কৃর্তপক্ষ (বিএমডিএ) নওগাঁর পত্নীতলা জোনের সরকারী কোষাধ্যক্ষ। মুখে ইয়াবা সেবনের জন্য সিগারেট আকৃতির নল। নিচের দিক থেকে একজন ইয়াবা রাখার রাং ধরে আছেন। সেটাতে লাইটার দিয়ে আগুন দেওয়া হচ্ছে। তার পর সেই রাং থেকে নলের মাধ্যমে ইয়াবা গ্রহণ করছেন। যিনি ইয়াবা সেবন করছেন তিনি সাধারণ কোন মাদকসেবী নন। একজন সরকারি কর্মকর্তা।
সরকারি দপ্তরের এই হিসাব রক্ষকের ইয়াবা সেবনের ছবি পাওয়া গেছে । তাতে দেখা যায়- তিনি রাতের বেলা একটি বন্ধঘরে ইয়াবা সেবন করছেন। ইয়াবা সেবনে তাকে এক ব্যক্তি সহায়তা করছেন। তবে সহায়তাকারীর নাম পরিচয় জানা যায়নি।
সেবনকারী ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত হতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি কৃষি মন্ত্রনালয়ের অধিন্যাস্থ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কৃর্তপক্ষ পত্নীতলা জোনের সরকারী কোষাধ্যক্ষ হিসেবে প্রায় ৮ বছর যাবৎ কর্মরত।
সেই দপ্তরের একাধিক কর্মচারীর সাথে কথা হলে নাম প্রকাশে না করা শর্তে তারা বলেন, রফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক গ্রহণের সাথে যুক্ত। তার চলাফেরা অন্যরকম। তাকে দেখলেই বোঝা যায় তিনি একজন নিয়মিত মাদকসেবী। তবে কেন যে তার বিরুদ্ধে দাপ্তরিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি সেটা উর্দ্ধতন কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন। আমরা অফিসের যারা ছোট পদের কর্মচারী তারা তো সরাসরি তাকে সচেতন করা বা কিছু বলতে পারিনা।
তবে অফিসের অনেকেই জানে তিনি মাদক গ্রহণ করে থাকেন। দয়া করে আমাদের নাম যেন প্রকাশ না করা হয়। তাহলে চাকরির সমস্যা হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া তিনি মাদকসেবী চলাফেরাও খুব বেশি স্বাভাবিক নয়। একজন মাদকসেবীর আচার-আচরণ কেমন হয় তা তো আপনি জানেন।
মোবাইল ফোনে কথা হলে ইয়াবা সেবনকারী বিএমডিএর পত্নীতলা জোনের সরকারী কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি আর ইয়াবা সেবন করিনা। আমার মনে হয় আপনার কাছে যে ছবি আছে সেটা কিছুদিন আগের। পরিচিত কয়েকজনের পাল্লায় পড়েছিলাম। তারা আমাকে এক প্রকার জোড় করেই ইয়াবা সেবন করাইছে। যারা আপনাকে ইয়াবা সেবন করতে বাধ্য করেছেন বা যারা আপনার সাথে ইয়াবা সেবন করেছেন তাদের নাম বলুন।
এমন প্রশ্ন করা হলে রফিকুল বলেন, আমি তাদের নাম আপনাকে বলতে পারবোনা। আর এটা নিয়ে আপনি সংবাদ প্রকাশ না করলে খুশি হবো। একজন সরকারি দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থেকে এমনভাবে মাদক সেবন কিভাবে করতে পারেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ইয়াবা গ্রহণ করিনা আর করবো না আপনি আমার সাথে দেখা করুন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে নিয়ে কথা হলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কৃর্তপক্ষের পত্নীতলা জোনের সহকারী প্রকৌশলী মো. ইন্তেখাফ আলম বরেন, আমি যতদূর জানি রফিকুল আলম মাদক গ্রহণ করতো। তবে আমার জানা মতে এখন আর করেনা হয়তো। তবুও আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো। যদি সে মাদকের সাথে জড়িত থাকে তবে দাপ্তরিকভাবে নিয়ম অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নওগাঁ মাদক বিরোধী সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি মাষ্টার হাফিজুর রহমান বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যখন সরকারি, বেসরকারি সংগঠনসহ সমাজের সচেতন মহল এক সাথে কাজ করে যাচ্ছে। তখন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তার এমন মাদক গ্রহণ সত্যিই চরমভাবে ব্যথিত করে। একজন মাদকসেবী কিভাবে এমন পোষ্টে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে। মাদক গ্রহণ করলে তো তার কাজ-কর্ম বা আচরণ স্বাভাবিক থাকেনা।
সেই দপ্তরের যারা প্রধান তারা কি করে বুঝলাম না। এমন মাদকসেবী কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। মনে রাখতে সেবাদানকারী প্রতিষ্টান খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্টান সেখানে যদি সেবা দাতারাই মাদক গ্রহণ করে তাহলে সেখান সাধারণ মানুষ কি সেবা পাবে। এমন কাজের সাথে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। আজকের তানোর