শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:১২ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : হালকা শীত পড়েছে। তাই গায়ে গরম কাপড় জড়িয়েই কনস্টেবল নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা দিতে ঢুকেছিল ছেলেটি। বের হয়ে জ্যাকেটটি খুলে মায়ের হাতে দিতেই উদ্গ্রীব মায়ের প্রশ্ন—‘পরীক্ষা কেমন হলো বাপ?’ ছেলেটি বলল, ভাইভা তো না, যেন বিসিএস পরীক্ষা! বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, পদার্থ, রসায়ন—সব ধরেছেন।
পাশে থেকে আরেকজন বলল, ‘আমাকে তো ইতিহাস থেকেই বেশি প্রশ্ন করেছে। প্রথমেই ধরেছে, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন কে। আমি বলেছি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’ এই ছেলেটির পাশে থেকে আরেকজন চাকরিপ্রার্থী বলল, ‘আরে এ প্রশ্ন তো আমাকেও করা হয়েছিল। আমি বলেছি,৭ই মার্চের ভাষণেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন।’
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কনস্টেবল পদের চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইনসের প্রধান ফটকের সামনে এই কথোপকথন। একে একে চাকরিপ্রার্থীরা ভাইভা দিয়ে বের হয়ে আসছিল আর কাকে কী প্রশ্ন করা হয়েছে তাই নিয়েই চলছিল আলোচনা। বেশির ভাগ চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গেই ছিলেন তাদের বাবা-মা। সবাই চিন্তিত!
ভাইভা দিয়ে বের হয়ে একজন জানাল, তাঁর কাছে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের সংকেত জানতে চাওয়া হয়েছে; পেরেছে। তাঁকে আরও চারজনের সঙ্গে ভাইভা বোর্ডে পাঠানো হয়েছিল। সবাইকেই একসঙ্গে একই প্রশ্ন করা হয়েছিল। অন্য চারজনের উত্তরের বিষয়ে সে ভাইভা বোর্ডকে জানিয়েছে, তিনজনেরই উত্তর ভুল। একজন সঠিক উত্তর দিয়েছে।
সঠিক উত্তর দিয়ে ছেলেটি ‘গর্বিত’ হলেও চাকরি নিয়ে এখনো শঙ্কায় তাঁর সঙ্গে আসা খালা। তিনি বললেন, ‘সবই ঠিক আছে। শুধু ওজনটাই একটু বেশি। কী যে হয়!’ নিজে ‘ফরমাল পোশাক’ পরে না আসায় হতাশা প্রকাশ করল চাকরিপ্রার্থী আরেকজন। সে বলল, ‘আমার সঙ্গে যাঁরা ছিল, তাঁরা সবাই ফরমাল গেটআপে এসেছিল। আমিই শুধু সাধারণ পোশাক-আশাকে। ভাইভা ভালো দিয়েছি, তাও টেনশন লাগছে।’
রাজশাহী জেলা পুলিশ মোট ৫৪ জন কনস্টেবল নিয়োগ দেবে। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিল ৯ হাজার ৬৫৬ জন। পুলিশ সদর দপ্তর আবেদনে দেওয়া চাকরিপ্রার্থীদের তথ্য যাচাই-বাছাই করে। এতে বাদ পড়ে ৭ হাজার ৪৯৬ জন। বাকি ২ হাজার ১৬০ জন ডাক পায় শারীরিক পরীক্ষা জন্য।
নতুন নিয়মে কয়েকটি ধাপে শারীরিক পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় ৬২২ জন। তাঁরা লিখিত পরীক্ষাও দেয়। এ পরীক্ষায় পাস করে ১৫২ জন। এঁদেরই মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হলো সোমবার। ভাইভা দেওয়া ১৫২ জনের মধ্যে থেকে ৫৪ জনকে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হবে। এরপর মেডিকেল পরীক্ষায় উতরে গেলেই তাঁরা পাবে চাকরি নামের সোনার হরিণ। আজকের তানোর