যানবাহনচালক ও যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক ধরে রাজশাহী থেকে পুঠিয়া পর্যন্ত সাধারণত বাসভাড়া ৪০ টাকা। অন্য দিন একই ভাড়া দিয়ে যাত্রীরা লেগুনাতে করেও পুঠিয়ায় যান। কিন্তু বাস চলাচল না করায় এখন লেগুনায় ভাড়া নেওয়া হচ্ছে জনপ্রতি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এ পথে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া লাগছে ১০০ টাকা। রাজশাহী থেকে নাটোরের বাসভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। এ পথে সাধারণত লেগুনা চলাচল করে না। তবে বাস না চলায় আজ লেগুনাও যাচ্ছে। তবে ভাড়া গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা করে। একসঙ্গে কয়েকজন যাত্রী পেলে সিএনজিচালিত অটোরিকশাও যাচ্ছে। তবে তাতে জনপ্রতি ভাড়া লাগছে ২০০ টাকা। একইভাবে রাজশাহী থেকে অন্য পথেও চলাচল করতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
সরকারের উচিত ছিল তেলের দাম ও গাড়ির ভাড়া সমন্বয় করে সবকিছু করা। কিন্তু সরকার হঠাৎ তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। মো. মকবুল ইসলাম, সাধারণ যাত্রী পুঠিয়ার ঝলমলিয়া এলাকা থেকে সকালে মাকে চিকিৎসক দেখাতে নিয়ে এসেছিলেন রাশেদুল ইসলাম। চিকিৎসক দেখানো শেষে নগরের সাহেববাজার এলাকা থেকে প্রয়োজনীয় ওষুধ কিনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এখান থেকে তিনি তালাইমারী অথবা রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় যাবেন। সেখান থেকে যাবেন পুঠিয়াতে। রাশেদুল জানান, বাসে প্রতি সপ্তাহে মাকে নিয়ে রাজশাহীতে আসেন। আজকে পরিবহন ধর্মঘট থাকাতে তিনি সকাল বেলা বের হয়েছিলেন। অটোরিকশায় করে ভেঙে ভেঙে তিনি রাজশাহীতে এসেছেন। সকালের দিকে চাপ কম ছিল। কিন্তু অসুস্থ মাকে নিয়ে তো মানুষের চাপের মধ্যে যাওয়া যাবে না, ভাড়াও বেশি। তাই চিন্তা করছেন কীভাবে পুঠিয়া যাবেন।
ঢাকার গাজীপুরের একটি কারখানায় রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের সবেদা বেগম কাজ করেন। গত সোমবার তিনি বাড়িতে আসেন। আজ কর্মস্থলে ফেরার জন্য প্রথমে রাজশাহীর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়েছিলেন। সেখানে ট্রেনের টিকিট না পেয়ে নগরের শিরোইল বাস স্টেশন এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। গাজীপুরে যাওয়ার গাড়ি মিলছে না তাঁর।
নগরের ভদ্রা এলাকায় গাড়ির অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন মো. মকবুল ইসলাম। তিনি নাটোর যাবেন, তবে গাড়ি পাচ্ছিলেন না। তিনি জানান, সরকারের উচিত ছিল তেলের দাম ও গাড়ির ভাড়া সমন্বয় করে সবকিছু করা। কিন্তু সরকার হঠাৎ তেলের দাম বাড়িয়ে মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। যানবাহনের আশায় দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলোতে ঘুরছেন এক যাত্রী। আজ রাজশাহী নগরের শিরোইল ঢাকা বাস টার্মিনাল এলাকায় নাটোর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় এখানে নামেন নরেন চন্দ্র নামের এক ব্যক্তি। সঙ্গে ছেলেসন্তান ও তাঁর স্ত্রী। তাঁরা যাচ্ছেন এক বিয়ের অনুষ্ঠানে। তিনি বলেন, আগে থেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। এ পরিস্থিতির মধ্যেও আসতে হল। রাস্তায় অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন, গাড়ি পাচ্ছেন না তাঁরা। সবাই অটোরিকশা, লেগুনা আর সিএনজিতে রাজশাহীর দিকে আসছেন-যাচ্ছেন।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা ভাড়া বাড়ানোর জন্য কোনো পরিবহন ধর্মঘট দেননি। এর আগেও ভাড়া বাড়িয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা যায়নি। যাত্রীদের সঙ্গে ঝগড়া করে ভাড়া আদায় করতে চান না তাঁরা। তাঁদের দাবি, তেলের দাম আগের অবস্থায় ফেরত আনতে হবে। তিনি বলেন, তেলের দাম না কমালে এ ধর্মঘট চলবে। তাঁদের নেতাদেরকে কাল রোববার আলোচনায় ডাকা হয়েছে। দেখা যাক, সেখানে কী সিদ্ধান্ত আসে। আজকের তানোর