রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:২৩ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, দুর্গাপুর : চোখ জুড়ানো ফসলের মাঠ। মাঠজুড়ে আমনখেতে সবুজের সমারোহ। মাঠে একটু পরপর দাঁড়িয়ে আছে আম কিংবা লিচুর গাছ। এ দৃশ্য দেখা গেল দুর্গাপুর উপজেলার চৌপুকুরিয়া গ্রামের একটি ফসলের মাঠে।
স্থানীয় কৃষক আকছেদ আলী তাঁর দুই বিঘার লিচুবাগানে রোপণ করেছেন আমন ধান। তাঁর মতোই একই এলাকার দুই ভাই মিলে প্রায় পৌনে তিন বিঘা জমির আমবাগানে বোরো ধান চাষ করেন। এবার সেখানে রোপণ করেছেন আমন ধান। লিচু ও আমবাগানের এসব ধানের খেত এখন পরিপক্ক হয়ে শীষ গোজাতে শুরু করছে। একই জমিতে মিশ্র ফসল করে লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। ফলে উপজেলায় কৃষিতে নতুন এক সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
চৌপুকুরিয়া গ্রামের কৃষক আকছেদ আলী বলেন, তিনি ফিড মিলের একজন শ্রমিক। মিলের পাশেই তাঁর দুই বিঘা জমি রয়েছে। লাভের জন্য লিচু বাগান করেন। একই জমিতে লিচুর সঙ্গে ধান, আলু ও পেঁয়াজ চাষ করেন। ফলে বছরে চার ধরনের খেত থেকে তিনি টাকা পান।
রৈপাড়া এলাকার কৃষক রিপন ও খোকন সম্পর্কে আপন ভাই। তাঁদের পারিবারিক জমি ভাগ হয়ে যাওয়ায় কমে গেছে কৃষিজমি। তাই তাঁরা অল্প খরচ ও অল্প জমিতে বেশি ফসল পাওয়ার চিন্তা করতে থাকেন। এভাবেই আমবাগানে তিন ফসল করার কথা ভাবেন। আমবাগানে আমন ধানের আগে বোরো ধান ছিল তাঁদের। বোরো ধানের আগে চাষ করা হয়েছিল মসুর ডাল। তাতে বাম্পার ফলন হয়েছে। মসুর দেরিতে ওঠায় বোরো ধান রোপণ করতে দেরি হয়েছিল। তাঁরা বলেন, আম এ অঞ্চলের লাভজনক ফসল। ফলে ফসলি জমিতে আমগাছ লাগানো হয়েছে। জমিতে আমগাছ লাগানোর ১০ বছর পর্যন্ত মিশ্র আবাদ করা যায়। পাশাপাশি বাগান থেকে আমও পাওয়া যায়।
কলনটিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, তাঁর মূল ফসল পেয়ারা। এর সঙ্গে এক বছরের ফসল পেঁপে লাগান। এরপর জমির ধার দিয়ে আদা ও কচু লাগিয়েছেন।
দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ অঞ্চলের মাটি খুবই উর্বর। এক জমিতে বছরে তিন থেকে চারটি ফসল ফলে থাকে। এরপরও কৌশলী কৃষকেরা এক ফসলের ভেতর দুই থেকে তিন রকম ফসল চাষ করেন। এতে তাঁরা বেশি লাভবান হন। উপজেলার নওপাড়া, শ্যামপুর, শিবপুর, উজানখলসী, কানপাড়া, রসুলপুর, দাওকান্দি, মোহাম্মাদপুর, শালঘরিয়া, দেবীপুর, চুনিয়াপাড়া ও বাজুখলসীসহ বিভিন্ন গ্রামে একই জমিতে মিশ্র ফসল চাষ করতে দেখা গেছে। দুর্গাপুর এলাকার মাটি কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু, ধান, আদা, কচু, হলুদসহ নানা কৃষি ফসল চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। আম, পেয়ারা, লেবু ও সবজি চাষের সঙ্গে সাথি ফসল চাষের পদ্ধতি বেশি প্রয়োগ করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাজিয়া সুলতানা ‘আজকের তানোর’কে বলেন, দিন দিন এ অঞ্চলে কৃষিজমি কমছে। জমি কম হওয়ায় কৃষকেরাও বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার শুরু করেছেন। কৃষকেরা বেশি লাভে মিশ্র আবাদে ঝুঁকছেন। এ পদ্ধতিতে চাষের ফলে কৃষকেরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। আজকের তানোর