নিজস্ব প্রতিবেদক, নওগাঁ : নওগাঁ শহরের আরজি-নওগাঁ এলাকায় পুকুরে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে দুই ভাই-বোনসহ চার শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে শহরের আরজি-নওগাঁ এলাকার শেরপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
মারা যাওয়া আর শিশু হলো, ওই এলাকার টুকু ম-লের মেয়ে সুরাইয়া আক্তার (১০) ও ছেলে ফরহাদ হোসেন (৬), টুকু ম-লের ভাই সালাম ম-লের মেয়ে খাদিজা আক্তার (৮) ও একই এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে আশা (৮)।
পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১টার দিকে স্বজনদেন অজান্তে নিহত ওই চার শিশু বাড়ির পাশে একটি পুকুরে গোসল করতে নামে। গোসল নেমে ওই চার শিশু তলিয়ে যায়। দীর্ঘক্ষণ পরেও শিশুরা বাড়িতে না ফেরায় স্বজনরা আশপাশের এলাকা ও প্রতিবেশিদের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। এক পর্যায়ে প্রতিবেশি শিশুদের মাধ্যমে স্বজনরা জানতে পারে ওই চার শিশু পুকুরে গোসল করতে নেমেছিল।
এ খবর পেয়ে স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দপ পুকুরে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে খোঁজাখুঁজির পর ওই চার শিশুকে উদ্ধার করে। তাদের উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের চারজনকেই মৃত ঘোষণা করেন। পরে নিহতের স্বজনদের বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাদের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসে।
বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় চার শিশুর এক সঙ্গে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার খবর শুনে আশপাশের এলাকার হাজার হাজার মানুষ মারা যাওয়া শিশুদের দেখতে নিহতের বাড়িতে ভিড় জমায়। এ সময় প্রাণহীন তরতাজা শিশু চারটিকে দেখে কেউই চোখের পানি সংবরণ করতে পারেননি। নিহত শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আজ সন্ধ্যার পর-পরই মৃত শিশুদের পারিবারিক কবরস্থানে কবর দেওয়া হবে।
নওগাঁ পৌরসভার আরজি-নওগাঁ শেরপুর মহল্লার বাসিন্দা সাইদুর রহমান, ‘আমার পঞ্চম শ্রেণি পড়–য়া মেয়েও ওই শিশুদের সঙ্গে দুপুরের টুকু ও সালাম ম-লের বাড়ির সামনে খেলছিল। খেলতে খেলতে প্রতিবেশি টুকুর এক ছেলে ও এক মেয়ে, টুকুর ভাই সালামের মেয়ে ও আরেক প্রতিবেশি আনোয়ার হোসেনের মেয়ে পুকুরে গোসল নামে। কিন্তু আমার মেয়ে ও আরেক শিশু পুকুরে গোসল করতে না নেমে বাড়িতে চলে আসে। গোসল নেমে পানিতে ডুবে ওই চার শিশুই মারা যায়। ওরা পুকুরে নেমেছিল প্রায় ১টার দিকে। তাদের পুকুরে নামার খবর পাওয়া যায় তার প্রায় আরও ২০-২৫ মিনিট পরে। তাদের পুকুরে নামার খবর পাওয়ার পর উদ্ধার করতে করতে আরও ৩০-৪০ মিনিট লেগে যায়।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশুদের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার আগেই স্বজন ও এলাকাবাসী উদ্ধার করে। নিহত শিশুদের স্বজন ও এলাকাবাসীর অনুরোধে লাশের ময়নাতদন্ত না করেই মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্য মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এটি দুর্ঘটনা না হত্যা তা তদন্তের পরেই জানা যাবে।