শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৯ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গত নির্বাচনে বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছেলেকে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যার বিরুদ্ধে নৌকা প্রতীক ভাঙচুরের অভিযোগ রয়েছে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ওই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী ছিলেন মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক সুরঞ্জিত কুমার সরকার।
সে সময় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খলিলুর রহমান। এবার দলীয় নির্দেশনা রয়েছে, বিদ্রোহী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া যাবে না। তবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থীর ছেলে বাবলু হোসেনকে। তার মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও গত নির্বাচনে যে মনোনয়ন পেছিলেন তিনিও সংবাদ সম্মেলন করে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত কুমার সরকার জানান, আমার পক্ষে ক্ষুব্ধ জনগণ বিক্ষোভ করছেন। তারা এই মনোনয়ন মেনে নিতে পারছেন না। আমিও সংবাদ সম্মেলন করেছি। আমিও এই মনোনয়ন মেনে নিতে পারছি না। তিনি বলেন, যে ছেলেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, সেই ছেলে ২০১৬ সালের ইউপি নির্বাচনে আমার সামনে নৌকা ভেঙেছেন। ওই নির্বাচনে তার বাবা খলিলুর রহমান ছিলেন বিদ্রোহী প্রার্থী। তাকে মনোনয়ন না দিয়ে এবার তার ছেলেকে দেওয়া হয়েছে। এই ছেলেকে কেউ কোনো দিন কোনো দলীয় কর্মসূচিতে দেখেননি। তার দলীয় কোনো পদ নেই। দলে তিনি ছাড়াও অনেক যোগ্য লোক রয়েছে। তাদের বাদ দিয়ে এ রকম এক ছেলেকে মনোনয়ন দেওয়ার কারণেই ক্ষোভ ও প্রতিবাদ হচ্ছে।
সুরঞ্জিত কুমার সরকার আরও বলেন, গত নির্বাচনে আমি বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে প্রায় ৬০০ ভোটে হেরেছিলাম। এর কারণ স্থানীয় সাংসদ প্রকাশ্যে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। নেতা-কর্মীদেরও সেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন। নির্বাচনের পর আমি সেটা জেলা কমিটির সভায় তুলেছিলাম।
তিনি বলেন, গত নির্বাচনের পরে খলিলুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। রাজশাহীর পবা ও মোহনপুর আসনের সাংসদ আয়েন উদ্দিনের ইচ্ছায় তাকেই আবার আহ্বায়ক করে ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হয়। খলিলুর রহমানকেই আবার সভাপতি করা হয়। এটা করা হয়েছে শুধু আমাকে মনোনয়ন না দেওয়ার পূর্বপরিকল্পনা থেকে। আগে থেকেই সেই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। আমাকে সুকৌশলে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের কাছে আমার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেছি।
সুরঞ্জিত বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ করি। দলের বাইরে যেতে পারব না। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে নৌকাতেই ভোট দেব। তবে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করিনি। আমি আশাবাদী, মনোনয়ন বোর্ড আমার আবেদন বিবেচনা করবে।
সুরঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিন আমার প্রতি হিন্দু বিদ্বেষ মনোভাব দেখিয়েছে। উনি (এমপি) বলেছেন, তোরা হিন্দু জাত; তোরা ক্রিমিনাল। গত বার তোর নৌকার বিরোধীতা করেছি তুই জেলা আওয়ামী লীগের মিটিংয়ে বলেছিস কেন; তোকে মনোনয়ন দিবো না, দিবো না, দিবো না। তুই যা করতে পারিশ করে লিস। এভাবে এমপি আমাকে হুমকি দেয়। যার কথোপকথনের স্বংক্রিয়ভাবে রেকর্ড রয়েছে বলে জানান তিনি। গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীক ভাঙার বিষয়টি অস্বীকার করে বাবুল হোসেন বলেন, সুরঞ্জিত একজন জনবিছ্ন্নি নেতা। তার কোন সমর্থন নেয়। সংখ্যালঘু ইস্যু তুলে করুনা নিয়ে দলীয় মনোনয়ন নেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু মনোনয়ন না পেয়ে স্থানীয় এমপি ও আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন।
তবে হুমকি দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে এমপি আয়েন উদ্দিন বলেন, সুরঞ্জিতকে কোন হুমকি ধামকি দেয়া হয়নি। যদি কোন রেকর্ড থেকেও থাকে তা তৈরী করা। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হুমকি বা গাল মন্দ করার প্রশ্নই আসে না বলেন এমপি আয়েন। আজকের তানোর