শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:১২ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আল সরকারকে আওয়ামী লীগ থেকে সামিয়কভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের জন্য সুপারিশ করে দলের কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার।
তিনি জানান, সোমবার বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপপতিত্ব করেন নগর নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় সর্বসম্মতি ক্রমে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ আলী সরকারকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। এর পর তার আওয়ামী লীগের সদস্য পদ থেকে সাময়িক বহিস্কার করে আদেশ জারি করা হয়েছে। তিনি নগরের ১৪ নং ওয়ার্ড (পূর্ব) আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন।
ডাবলু সরকার বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ও রাজশাহীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বাঁধা এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানকে দল থেকে সাময়িক বহিস্কার করা হয়েছে। এছাড়াও তাকে স্থানীয়ভাবে বহিষ্কারের জন্য সুপারিশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে প্রেরণ করা হয় বলে জানান তিনি।
এদিকে, নির্ধারিত স্থানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেওয়ায় প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় নগর ভবনের সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিটি রাজশাহীবাসীর প্রাণের দাবি। ভাষা সৈনিক, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসহ সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সোনাদীঘি সংলগ্ন সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিত্যক্ত স্থানে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। শহীদ মিনার নির্মাণে ইতোমধ্যে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে শুরুতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান একমত থাকলেও পরবর্তীতে তিনি তার অবস্থান বদলে ফেলেন। রাজশাহীর সর্বস্তরের মানুষের প্রাণের দাবি রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বাধা দিয়ে আটকানো যাবে না।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান খান আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মতিউর রহমান, এ্যাড. মোজাফফর হোসেন, প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার তাপু, মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক।
সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল এবং শহীদ মিনার নির্মাণে বাধাদানকারী ব্যক্তি আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থাকতে পারে না। পাকিস্তান আমলে শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেওয়া হতো। তেমনিভাবে রাজশাহীতে শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেওয়া হচ্ছে। রাজশাহী জেলা পরিষদের যেসব ছোট ছোট জায়গা আছে, সেগুলো যেন মিনি পাকিস্তান। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও শহীদ মিনার করতে দেওয়া হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বিরোধীতাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার বলেন, সকলের দাবি একটায় নির্ধারিত স্থানেই শহীদ মিনার হবে, হতেই হবে। এটি আমাদের প্রাণের দাবি, যেকোন ভাবেই বাস্তবায়ন করা হবে। যে ব্যক্তি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল এবং শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দেয়, তার আওয়ামী লীগের দলীয় পদে থাকার অধিকার কোন নেই। শহীদ মিনারের ব্যাপারে যিনি আদালতে রিট করেছেন, তাকে অনুরোধ করছি, স্বেচ্ছায় রিট প্রত্যাহার করে নেন। তা না হলে আপনাকে রাজশাহীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক বলেন, আমরা গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে ইতোমধ্যে রাজশাহী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি। সেই শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা এসেছে। যতই বাধা আসুক, সেখান থেকে শহীদ মিনার কেউ সরাতে পারবে না। সেখানেই প্রতীকি শহীদ মিনারে আমরা আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পুষ্পস্তবক অর্পণ করবো।
তিনি বলেন, শহীদ নিমার নির্ধারিত স্থানেই হবে। শহীদ মিনারের ব্যাপারে কোন আপোষ নেই। শহীদ মিনার নির্মাণে বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আহসানুল হক পিন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আসলাম সরকার, সাংষ্কৃতিক সম্পাদক কামারুল্লা সরকার, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর তানবিরুল আলম, কবি আরিফুল হক কুমার, মহানগর যুবলীগের সভাপতি রমজান আলী, সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসনে বাচ্চু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মমিন, মহানগর শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোহেল প্রমূখ। আজকের তানোর