রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:২৬ am
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে বিসিআইসি’র সারডিলার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে এমওপি (পটাশ) সারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে আগাম জাতের আলু চাষিরা (কৃষক) ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায় পড়েছেন। কৃষকদের অভিযোগ, উপজেলার অসাধু এক কৃষি কর্মকর্তার যোগসাজশে তারা এই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। এতে এলাকার প্রান্তিক কৃষকগণ অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখানে ওই সিন্ডিকেটের কথায় আইন। তারা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অধিক মুনাফার আশায় নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো ব্যবসা পরিচালনা করছেন। ফলে এখানকার সাধারণ কৃষকগণ এমওপি ও ডিএপি সার সংকটে পড়েছেন।
এনিয়ে তানোর পৌর এলাকার জিওল গ্রামের আলু চাষি কৃষক ওমর হাজী জানান, শিবনদের বুকে রহিমাডাংগা মৌজায় বন্যার পানি নেমে যাবার পর তারা আগাম জাতের আলু রোপন করে থাকেন। প্রতি মৌসুমের ন্যায় সম্প্রতি এবারো প্রায় ৫ শতাধিক কৃষক ৫ হাজার বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপনের জন্য জমি চাষাবাদে নেমেছেন। কিন্তু বীজ ও জমি প্রস্তুত থাকলেও এমওপি (পটাশ) ও ডিএপি সার সংকটে আলু বীজের চারা রোপন করতে পারছেন না তারা। তবে, দুয়েকজন কৃষক বিভিন্ন কৌশলে বেশি দামে সার সংগ্রহ করে আলুর চারা রোপন করছেন। কিন্তু প্রায় কৃষক এখনও কোন অবস্থায় সার সংগ্রহ করতে পারেননি। এনিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসারকে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না তারা।
ওমর হাজী অভিযোগে আরও জানান, আলুর জমিতে যখন সার প্রয়োগের সময় তখন ডিলাররা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অধিক মুনাফার আশায় এমওপি ও ডিএপি সার মজুদ করে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি দেখান। ফলে কৃষকদের মধ্যে সার নিয়ে হাহাকার শুরু হয়। এসুযোগে সরকারি মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করে অধিক মুনাফা পেয়ে থাকেন ডিলাররা। অপরদিকে, প্রান্তিক কৃষকরা ডিলারের চাহিদা মত টাকা না দিলে সার নেই বলে তাড়িয়ে দেন। এতে অনেকেই অধিক মূল্যে এমওপি ও ডিএপি সার কিনতে বাধ্য হচ্ছে।
এদিকে, খোলাবাজারে ইউরিয়া টিএসপি সার পাওয়া গেলেও পটাশ ও ডিএপি সার সহসায় মিলছে না। ডিলারদের কাছে এসব সার কিনতে গেলে তারা সাপ্লাই নেই বলে ডিএপি’র বদলে টিএসপি সার নেয়ার জন্য কৃষকদেরকে বাধ্য করছেন। এছাড়াও সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সার বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তবে, চলতি মৌসুমে কৃষি কর্মকর্তা ডিলারদের মধ্যে বরাদ্দ সার বিভাজনের পরিমান জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন। এক্ষেত্রে সার মনিটরিং কমিটির কোনো কার্যকরি পদক্ষেপ না থানায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।
এই সিন্ডিকেটের সাথে সরাসরি তানোর গোল্লাপাড়া বাজারের প্রাইম ট্রের্ডাস প্রোপাইটার প্রণব সাহা, কামারগাঁ বাজারের বিকাশ চন্দ্র, মোল্লা ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার মোহাম্মাদ আলী বাবু ও সুমন ট্রের্ডাসের প্রোপাইটার সুমন শীল জড়িত থেকে তানোর পৌর এলাকার ছাড়াও কামারগাঁসহ পুরো উপজেলায় এমওপি ও ডিএপি সার সংকট সৃষ্টি করছেন। এছাড়াও ওই অসাধু ডিলাররা বাফা’র গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নীচে দীর্ঘদিন থেকে পড়ে থাকা গুণাগুণ নষ্ট হওয়া সার কম দামে কিনে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করছেন।
এব্যাপারে উপজেলা সারডিলার সমিতির সভাপতি মোহাম্মাদ আলী বাবু বলেন, সিন্ডিকেট নয় এমওপি (পটাশ) সার এখন সরবরাহ নেই। কিন্তু ডিএপির বদলে টিএসপি দিয়ে কৃষকদের চাহিদা মেটানো হচ্ছে। তবে বেশি মূল্যে নয়, সরকার নির্ধারিত মূল্যে সব ধরণের সার বিক্রি করা হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার শামিমুল ইসলাম বলেন, ডিলারদের মধ্যে সার বরাদ্দ বিভাজনের তথ্য তার জানা নেই। আর এমওপি (পটাশ) ও ডিএপি সার চাহিদামত সরবরাহ নেই। এজন্য সাময়িক সার সংকট সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দুয়েক দিনের মধ্যে চাহিদামত বরাদ্দ পেয়ে যাব। তবে, সংকট দেখিয়ে কৃষকের কাছে সারের বেশি দাম নেয়ার প্রমান পাওয়া গেলে ডিলারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানান তিনি।
এব্যাপারে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি ইউএনও পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজকের তানোর