- রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের নিষ্ক্রিয় সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে ফের তৃণমুলের নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। এলাকায় বিরাজ করছে অসন্তোষ ও ক্ষোভের কালো ছায়া, জনমনেও দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। দেখা দিয়েছে জনগণের ভিন্ন-ভিন্ন অভিমত, তাদেরকে নিয়ে উঠেছে সমালোচনার তিব্র-ঝড়, প্রশ্ন উঠেছে তাদের রাজনৈতিক আদর্শ, নীতিনৈতিকতা ও অবস্থান নিয়েও!
- সত্যি কি তারা আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাসী? না আওয়ামী লীগ ছাড়লেন তারা? না কি নেপথ্যে ভিন্ন কিছু রয়েছে?
তানোর উপজেলার মুণ্ডমালা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আমির হোসেন আমিনের মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও দাখিল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মাঠে নামেনি রাব্বানী ও মামুন। বরং নৌকার বিজয় ঠেকাতে ও নির্বাচনকে বিতর্কিত করতে তাদের একান্ত ঘনিষ্ঠ সহচর সাইদুর রহমানকে বিদ্রোহী প্রার্থী করেছেন।
এছাড়াও নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধন, জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদ কর্মসুচিতেও রাব্বানী-মামুনের দেখা মেলেনি। দেশের ক্লান্তি লগ্নে করোনা কালীন সময়েও জনগণের পার্শ্বে ছিলেন না তারা, ফলে এসব কারণে তাদের নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে ক্ষোভ-অসন্তোষ ও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি এবং গুঞ্জনের সুত্রপাত হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
প্রশ্ন হলো : নৌকা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার অনুকুলে। তাহলে রাব্বানী- মামুন কোন নৌকার বিরোধীতা করছে? যারা নৌকার বিরোধীতা বা নৌকার বিজয় ঠেকাতে বিদ্রোহী প্রার্থী দেন, তারা কোন আওয়ামী লীগ করেন? আসলেই কি তারা এখন আওয়ামী লীগে রয়েছেন? না ভিন্ন রুপী…
স্থানীয়রা বলছেন, মুণ্ডুুমালা মেয়রপদে নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর কাছে দুরত্ব থেকে বা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী-সমর্থকসহ সারাদেশের মানুষ যখন বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে একের পর এক প্রতিবাদ কর্মসুচি দিয়ে চলেছে। করোনা ভাইরাসে সরকারী ত্রাণ সমুহ প্রতিটি ইউনিয়নে ও পৌরসভায় প্রদত্ত হয়, তা বিতরনের কোন ভূমিকা না রেখে তখানো এই দুই নেতা ঘরে কাঁথামুড়ি দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় ফর্মুলা ওয়ান দেখে সময় কাটাচ্ছেন।
এইসকল কর্মসূচীতে তাদের অনুগতদেরও দেখা না মিললেও মুণ্ডুমালা পৌরসভায় সরকারী ত্রাণ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদেরকে বঞ্চিত করে রাব্বানীর সেই সহচর সাইদুরকে দিয়ে সাইদুরের নিজ নামে নির্বাচনী কৌশল হিসেবে বন্টন করিয়েছেন। সরকারী কোন দিবস পালনের তাদের সক্রিয়তা বা উদ্দ্যোগ ছিলনা।এমনকি এরা প্রতিবাদ কর্মসূচীতো পরের কথা; নিন্দা জানিয়ে একটি লিখিত প্রতিবাদলীপি বা বিবৃতিও দেননি। জনসাধারণের প্রশ্ন; কেন তাদের এই নিরবতা?
যাদের রক্তে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ রয়েছে বা যারা আদর্শিক আওয়ামী লীগ, তারা তো নিরব থাকতে পারে না। তাহলে নিরবতার সম্মতি লক্ষনে এই ক্ষেত্রেও সেটা কি? এসব হাজারো প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মাঝে আলোচনার-সমালোচনার ঝড় তুলেছে।
স্থানীয়রা বলছেন; কদিন আগেই আদর্শিক ও মূলধারার নেতা দ্বাবী করে সরকার বিরোধীদেরকে সাথে নিয়ে মায়াকান্নায কচুয়া, উৎকুড়াহরিসপুর, হরিদেবপুরসহ বিভিন্ন এলাকার আনাচে-কানাচে বহিরাগত আঁচু-পাঁচু নেতা ও ভাড়াটিয়া মানুষ এনে দলীয় কর্মসূচীর নামে স্থানীয় সাংসদের বিরুদ্ধে বিষোদাগার করে বেড়িয়েছেষ বলে একাদিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন। তাদের এসব দেখে মনে হচ্ছে পৌর-নির্বাচন এবং জাতীর পিতার অবমাননা তাদের কাছে কোন ঘটনাই না।
তাদের সম্পর্কে জানতে চাইলে, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফ খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। তাই এই দল ও দলের দ্বায়ীত্বশীল নেতাদের দায়বদ্ধতাও অনেক বেশী। কিন্তু যারা দ্বায়ীত্বশীল পদ ব্যবহার করে সম্পদের পাহাড় গড়েন, আবার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস এবং দলের কেন্দ্রীয় কোনো কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন না, তারা নেতা তো পরের কথা, তাদের সদস্য হবার যোগ্যতাও রাখে না। ভবিষ্যতে তাদের এই দলের সভাপতি সম্পাদক হওয়াতো দুরের কথা সদস্যপদে থাকারও কোন যোগ্যতা থাকে না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের জৈষ্ঠ নেতারা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (দ্বায়ীত্বহীন) গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে উধাও, তারা ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসসহ কোন কর্মসূচীতেই তারা উপস্থিত হয় না।
এমনকি জাতীয় শোক দিবসসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো কর্মসুচী পালন করা তো দুরের কথা তাদেরকে দেখাই যায় না। অথচ তারা নিজেদের সভাপতি-সম্পাদক দ্বাবী করে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে আঁতাত করে এমপির বিরোধীতা করার নামে আওয়ামী লীগ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।
তারা নিজেরা তো দলের জন্য কিছুই করেননা, অন্যদেরকেও কিছু করতে দেয় না।
এমনকি জাতীয় সংসদ, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকার বিরোধীতা করে জামায়াত-বিএনপির বি-টিম হয়ে কাজ করেছেন। লেখক : এম, শামসুল আলম উপদেষ্টা, আজকের তানোর , ০১৭১৩-৭২০৫৩৭।