রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:৫৪ am
আশরাফুল ইসলাম রনজু, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে দলীয় মনোনয়ন হারিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠজন। উপজেলার কলমা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে চেয়ারম্যানপদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী। তিনি রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক সহচর ও তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
রোববার তাঁর মনোনয়নপত্র সংগ্রহের খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তার বাড়ি কলমার চৈরখৈর গ্রামে। এই গ্রামেই সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর বাড়ি। খাদেমুন নবী সম্পর্কে সাংসদের চাচাতো ভাই। এ পর্যন্ত কলমা ইউনিয়নের বেশির ভাগ চেয়ারম্যান এই গ্রাম থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।
কলমা ইউপি নির্বাচনে এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাইনুল ইসলাম স্বপন। মাইনুলের দাবি তিনিও সম্পর্কে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর ফুফাতো ভাই।
ওমর ফারুক চৌধুরীর একটি বিরোধীপক্ষ রয়েছে তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলায়। অভিযোগ রয়েছে ‘সেভেন স্টার’ নামে আত্মপ্রকাশ করে তাঁরা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাংসদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। এর আগে দুটি উপজেলার চারটি পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যে দুটিতে বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন আর দুটিতে সাংসদের অনুসারীরা মনোনয়ন পাননি।
প্রক্ষারান্তরে ‘সেভেন স্টার’ গ্রুপের অনুসারীরাই জয়লাভ করেছেন। পরে অবশ্য একটি পৌরসভার নির্বাচিত প্রার্থীর মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে সাংসদের অনুসারী এবং নৌকার প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। এসব কারণে এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তানোর উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের বিষয়ে খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরী বলেন, তিনিই দলীয় মনোনয়ন পাবেন, এটাই এলাকাবাসীর প্রত্যাশা ছিল। তার মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়টি এলাকার জনগণ মানতে পারছেন না। তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্যই মূলত তিনি নির্বাচন করতে চাচ্ছেন।
মাইনুল ইসলাম স্বপন ২০১৯ সালে উপনির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করে প্রথমবার চেয়ারম্যান হন। এবারও তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন। খাদেমুন নবী চৌধুরীর মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার ব্যাপারে তিনি বলেন, তারা ছয়জন একসঙ্গে ঢাকায় গিয়েছিলেন। কথা ছিল যে দলীয় মনোনয়ন পাবেন, সবাই তার পক্ষে কাজ করবেন। তবে তিনি আশাবাদী, শেষ পর্যন্ত খাদেমুন নবী হয়তো থাকবেন না।
সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, দু-চারবার বাদে বরাবরই তার নিজের গ্রাম চৈরখৈর থেকেই কলমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। তাই গ্রামের অনেকেই একবার চেয়ারম্যান হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। খাদেমুন নবী বাবু চৌধুরীকেও তিনি স্থানীয় সুপারিশ দিয়ে কেন্দ্রে পাঠিয়েছিলেন। এখন প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করেছেন, তাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি ঢাকায় আছেন। ফিরে এ নিয়ে কথা বললে ঠিক হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর তানোর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হবে ২০ অক্টোবর। প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা যাবে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত। পরদিন ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দ। আজকের তানোর