রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই কার্ডিওলজি বিভাগে হার্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এর সাথে সাথে এই রোগে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। ইতোমধ্যে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনার চেয়ে বেশি রোগী সেখানে ভর্তি হয়েছে। এ অবস্থায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, হাসপাতালে কার্ডিওলজি বিভাগের ব্যবস্থাপনার চেয়ে তিনগুন বেশি রোগী সেবা নিচ্ছে। ওয়ার্ডে জায়গা না থাকায় চিকিৎসকদের হাঁটাচলার জায়গা থাকে না। দায়িত্বরত চিকিৎসক জানাচ্ছেন, বর্তমানে কার্ডিওলজি বিভাগে ৫৬ টি বেড রয়েছে। রোগী ভর্তি থাকে দেড় শতাধিক। করোনার প্রকোপ কমার পরে রোগী বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এই বিভাগে মোট রোগী ছিলো ১০৮ জন। বর্তমানে এই বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে মাত্র ৫ জন। সে কারণে অতিরিক্ত রোগীর চাপ নিতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। রোগীদের জন্য কমপক্ষে ১০ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দরকার। সঙ্কটাপন্ন রোগীদের জন্য সিসিই ইউনিট চালু রয়েছে। এই সিসিই ইউনিটে রোগীদের জন্য সিরিয়াল পার করে সেবা নিতে হচ্ছে।
কার্ডিওলজি বিভাগ ঘুরে দেখা যায়, ওয়ার্ডগুলোতে ছোট ছোট তেলেপোকার উপদ্রব থাকে। সার্বক্ষণিক রোগী বেশি থাকা ও রোগী-স্বজনদের খাবার রাখার কারণে পুরো ওয়ার্ডে সঠিক ভাবে পরিস্কার করা সম্ভব হয় না। বেশির ভাগ এসি নষ্ট হয়ে আছে। জায়গা সংকট থাকায় ফ্লোরে রোগীদের জন্য জায়গা করা হয়েছে।
তবে আশার বাণী- হাসপাতালে আগামী আড়াই বছরের মধ্যেই ক্যান্সার সেন্টারে নতুন ভাবে ১৭ তলা ভবন করছে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। যার কাজও শুরু হয়ে গেছে। মাটির নিচে দুইতলা ও উপরে ১৫ তলা। এর মধ্যে চারটি ফ্লোর হবে কার্ডিওলজি। তিনটি ফ্লোর হবে নেফ্রলজি, বাকি ৮ টি ক্যান্সার সেন্টার হবে। হার্টের ওয়ার্ডটি সেদিকে চলে গেলে এই ওয়ার্ডগুলো নতুন ভাবে অন্য ওয়ার্ডে রূপান্তিত হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, জয়পুরহাট ও কুষ্টিয়াসহ বিভন্ন জেলার রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। বেডের তুলনায় অতিরিক্ত রোগীর কারণে করোনার ওয়ার্ডেই অতিরিক্ত বেড বসিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডাবলিং বেড বসানো হয়।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই বিভাগে ভর্তি রয়েছে পুঠিয়া উপজেলার সেলিম উদ্দিন। তিনি জানান, আসার আগে আমার শরীরের অবস্থা অনেক খারাপ ছিলো। ভর্তি হওয়ার পরে ডাক্তার নার্স সার্বক্ষণিক সেবা দিচ্ছেন। তবে ওয়ার্ডে মানুষ বেশি থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছে। দুইটা এসি রয়েছে সেগুলো নষ্ট। গরমে কষ্ট হচ্ছে।
কার্ডিওলজি বিভাগের এক রোগীর স্বজন খাদিজা বেগম জানান, দুইদিন থেকে আমার স্বামীর চিকিৎসা চলছে। এখন তার অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখানে চিকিৎসা ভালো, তবে পরিবেশটা ভালো হলে ভালো হতো। কিছু ফ্যান নষ্ট, এসি নষ্ট- গরমে সমস্যা হচ্ছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, বেডের সমস্যা গোটা হাসপাতালেই। এই ওয়ার্ডে বেডের তুলনায় তিনগুন বেশি রোগী ভর্তি থাকে। সেই সাথে চিকিৎসক সংকট। আগামী আড়াই বছরের মধ্যেই ১৭ তলা ভবন হবে। সেখানে কিছু ইউনিট করা হবে কার্ডিওলজি বিভাগের জন্য। আশা করি কয়েক বছরের মধ্যেই আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
এদিকে আজ সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও বিশ্ব হার্ট দিবসটি যথাযোগ্য ভাবে পালন করবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তারা জানাচ্ছেন, কার্ডিওলজি বিভাগের আয়োজনে পুরো এক সপ্তাহব্যাপী রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগীদের জন্য ফরম পূরণ করা হবে। ৪০ উর্দ্ধে রোগিদের ডায়াবেটিক পরীক্ষা ও ৪০ এর নিচের বয়সী মানুষকে ব্লাড প্রেসার মাপার কার্যক্রম শুরু হবে। সাতদিনে সকল রিপোর্ট ঢাকায় পাঠানোর জন্য জানানো হয়েছে। আজকের তানোর