শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:১৬ am

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
সিংড়ায় জানালাবিহীন ৪৮ দরজাবিশিষ্ট শতবর্ষী মাটির স্কুল!

সিংড়ায় জানালাবিহীন ৪৮ দরজাবিশিষ্ট শতবর্ষী মাটির স্কুল!

ডেস্ক রির্পোট : নাটোরের সিংড়ায় শতবর্ষী মাটির স্কুলঘরে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছে চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। চৌগ্রাম জমিদার বাড়িসংলগ্ন মাটির তৈরি এই স্কুল ঘরটি ১০৮ বছর আগে তৎকালীন রাজা রমণীকান্ত রায় তৈরি করে দিয়েছিলেন। টিনের চালার এই স্কুল ঘরের বৈশিষ্ট্য জানালাবিহীন দুইপাশে মোট ৪৮টি দরজা রয়েছে।

এখন সেই রাজাও নেই, নেই জমিদারি প্রথা। তবে এখনো পাঁজর সোজা করে দাঁড়িয়ে থেকে প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন জানান দিয়ে যাচ্ছে। তবে স্কুল ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। টিনের চালার ফুটো দিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে। এমতাবস্থায় স্কুলে একটি পাকা ভবন থাকলেও কক্ষ সংকট থাকায় ঝুঁকি নিয়ে মাটির ঘরেই পাঠদান করতে হচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী এই মাটির স্কুলটির ইতিহাস ধরে রাখতে সংস্কারের দাবি শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর।

স্কুল সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চৌগ্রাম জমিদার বাড়িসংলগ্ন এই স্কুলটিতে ছাত্রছাত্রীদের পাদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকে। নিভৃত পল্লী এলাকার ১০৮ বছরের এই চৌগ্রাম হাইস্কুলের ইতিহাস যেমন সমৃদ্ধ তেমনি বৃহৎ শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর কিয়দংশ তৈরির কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে।

বাংলাদেশের অনেক প্রথিতযশা গুণী ব্যক্তিত্ব গ্রামভিত্তিক এই স্কুল থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করেন। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার সর্বজন শ্রদ্ধেয় মাদার বখশ, আনবিক শক্তি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান হানিফ তালুকদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী রহমতুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান (গণিত) রমজান আলী সরদার, রাজশাহী জেলা বোর্ডের সাবেক সচিব আব্দুল জব্বার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ, বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন মীর গোলাম সবুরসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের অন্তত শতাধিক গুণী ব্যক্তি এই স্কুলের ছাত্র ছিলেন।

জনশ্রুতি আছে, চৌগ্রাম পরগনার প্রথম রাজা ছিলেন রাজা রসিক রায়। দ্বিতীয় রাজা তার পুত্র কৃষ্ণ কান্ত রায়, তৃতীয় রাজা পুত্র রুদ্র কান্ত, চতুর্থ রাজা তার দত্তক পুত্র রোহিনী রায় বাহাদুর এবং পঞ্চম রাজা দত্তক পুত্র রমণী কান্ত রায় বাহাদুর। রাজা রোহিনী কান্ত পর্যন্ত সবাই ছিলেন অত্যাচারী। প্রজাদের মঙ্গলের জন্য কোনো কাজ তারা করতেন না।

রাজা রমণী কান্ত হিন্দু-মুসলিম প্রজাদের ছেলেমেয়েদের জন্য ১৯০৩ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে নির্মাণ করেন এই চৌগ্রাম স্কুল। পরবর্তীতে ১৯১৩ সালে স্কুলটি তৎকালীন কলকাতা বোর্ড থেকে স্বীকৃতি পায় স্কুলটি; যা এখন চৌগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজ নামে পরিচিত।

কিন্তু কালের বিবর্তনে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে শতবর্ষী এই মাটির স্কুল ঘরটি। ইতোমধ্যে ঘরের কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে ইতিহাস ধরে রাখতে আশু সংস্কারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মীর সোলায়মান আলী।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেঘলা আকতার ও বৃষ্টি খাতুন জানায়, স্কুলে পাকা ভবন থাকলেও তারা মাটির ঘরেই পাঠদানে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। এই মাটির স্কুল নিয়েও গর্ববোধ করে তারা। দ্রুত ঘরটি সংস্কারের দাবি জানান তারা।

প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটার প্রদর্শক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, স্কুলটি নির্মাণের ১০৮ বছর পেরিয়ে গেলেও সংস্কারের অভাবে ব্যবহারের অনুপযোগী হতে বসেছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট আর প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রাখতে বেশ কয়েকটি ক্লাস মাটির ঘরেই নেওয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মীর সোলায়মান আলী বলেন, প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করে। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে মাটির ঘরে পাঠদান করাতে হচ্ছে। তবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মাটির ঘরগুলোর সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে শেষ করতে পারেননি।

চৌগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. জাহেদুল ইসলাম ভোলা বলেন, জানালাবিহীন ৪৮টি দরজা বিশিষ্ট মাটির তৈরি চৌগ্রাম স্কুল ঘরটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। দ্রুত স্কুল ঘরটি সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

সিংড়ার ইউএনও এমএম সামিরুল ইসলাম বলেন, শতবর্ষ পেরিয়ে এই মাটির স্কুল ঘর চলনবিলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের জানান দিচ্ছে। দ্রুতই স্কুল ঘরটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.