সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:০০ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মধ্য শহর তালাইমারী এলাকা দিয়ে ফের অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। বন্ধের মাসখানের মধ্যেই প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বালুকারবারিরা গত দুইদিন ধরে সেখানে অবৈধভাবে বালু তুলছেন।
পদ্মাপাড়ের এই পয়েন্টটিতে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে ঘাটটি বন্ধ করেছিল জেলা প্রশাসন। সর্বশেষ গত ১১ সেপ্টেম্বর পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে তালাইমারি পয়েন্টে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করে। এর পর সেখানে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু মাস যেতে না যেতে সেখানে ফের শুরু হয়েছে অবৈধ বালুকারবার।
জানা গেছে, তালাইমারী ঘাট দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে একাধিক অভিযোগ দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ প্রশাসকের দপ্তরে। অভিযোগগুলিতে বলা হয়েছে, তালাইমারী পয়েন্টে কোন বৈধ বালুঘাট বা বালুমহাল নেই। এর পরও প্রশাসনের নাকের ডোগায় বালুদস্যুরা সেখানে অবাধে বালু উত্তোলন করছে। বুধবার বিকেলে সরজমিনে তালাইমারি ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, ড্রেজিং করে পাইপের মাধ্যমে সেখানে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। গত দুইদিন ধরে চলছে বালুদস্যুদের এই বালু লুটের মহোৎসব। নদীর ৬ কিলোমিটার ভাটিতে একটি বালুমহালের ইজারাদার নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন তার নির্ধারিত এলাকার বাইরে গিয়ে এভাবে বালু লুট করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
স্থানীয় পদ্মাপাড়ের বাসিন্দা আনার আলী জানান, তালাইমারী নগরীর মধ্য শহরের একটি পয়েন্ট। ঘন জনবসতিতে পূর্ণ। পদ্মার বাঁধ কেটে নিজেরা সড়ক বানিয়ে একদল বালুদস্যু কয়েক মাস আগে তালাইমারী দিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করেন। অভিযোগ পেয়ে জেলা প্রশাসন থেকে একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তা বন্ধ করা হয়। জেলা প্রশাসনের তরফে নোটিশ লাগিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে। কিন্তু কিছুদিন বন্ধ থাকার পর বালুদস্যুরা আবারও বালু লুটের কারবার শুরু করে দেয়।
তিনি বলেন, শুস্ক মৌসুমে পদ্মার বুকে রাস্তা করে ট্রাক নামিয়ে বালু তোলা হত। তবে বর্তমানে পদ্মায় পানি থাকায় বালু মজুদ করা হচ্ছে পাড়ে। এলাকাবাসী বাঁধা দিতে গেলে তাদেরকে হুমকি দেয়া হয়। বালুদস্যুরা প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী তাদের এখন বাঁধা দিতে সাহস পাচ্ছে না।
তালাইমারী ঘাট এলাকার আরেক বাসিন্দা মোহা. রমজান আলী অভিযোগে বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদীর বুক থেকে বালু তুলে জমা করছে পাড়ে। ভেক্যু দিয়ে ওই বালু ট্রাকে ভরছে। এসব বালু নগরীর বিভিন্ন সড়ক ধরে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। এভাবে শত কোটি টাকার বালু লুট হলেও প্রশাসন নীরব ভূমিকা নিয়েছে। এ কারণে এলাকাবাসী ও অন্য বালুমহালের ইজারাদাররা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসক ও পুলিশের কাছে এশাধিক অভিযোগ দিয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকা দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে ইতোপূর্বে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। বালু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন এই রিট করেছিলেন। উচ্চ আদালত তালাইমারীতে কোনো বালুঘাট না থাকায় তা বন্ধের আদেশ জারি করেন। কিন্তু সেই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে একদল চিহ্নিত বালুদস্যু উচ্চ আদালত ও স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করেই পদ্মার বুক থেকে অবাধে বালু লুট করছে। আজকের তানোর