শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:১১ am
ডেস্ক রির্পোট : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার জন্মদিন আজ সোমবার। ১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্ম তার। এবার তিনি ৬৬ বছর পূর্ণ করলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার জন্মদিনে তাকে সোশাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন অনেকে। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে শেখ রেহানার ছবি, শেখ রেহানার বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং জন্মদিন উপলক্ষে তাকে নিয়ে তৈরি করা পোস্টারও স্থান পেয়েছে ফেইসবুকে আসা শুভেচ্ছা বার্তায়। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কাছে তিনি ‘ছোট আপা’ হিসেবেই পরিচিত।
পঁচাত্তর ট্রাজেডির পর বড় বোন শেখ হাসিনার মতো শেখ রেহানার জীবনেও ঝড় বয়ে যায়, সেই দুঃসময় সামলে উঠেই চলছেন তিনি জীবনের পথে। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সেনাবাহিনীর একদল কর্মকর্তা ও সৈনিকের হাতে সপরিবারে জীবন দিতে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ও তৎকালীন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে।
বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান। বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময় বেলজিয়ামে ছিলেন শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল ছিল জার্মানির কার্লসরুয়েতে।
১৯৮৩ সালে সাপ্তাহিক চিত্রবাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ রেহানা বলেছিলেন, “১৫ অগাস্ট আমি মরে গেলেই ভালো হত। বাবা নেই, মা নেই, ভাই নেই। আমার আর বাঁচতে ইচ্ছা করে না। আমি কী নিয়ে বাঁচব? কী আছে আমার? রাসেল কী অপরাধ করেছিল? ও তো রাজনীতি করত না। আমার মা তো রাজনীতি করত না। কেন ওরা তাদের হত্যা করল?
“খোদা তায়ালার কাছে বলছি, আমার মতো যেন কাউকে তিনি শাস্তি না দেন। আমি এতিম বড় অসহায়। আমি মেয়ে হিসেবে বাঙালি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চাই।”
তখন জার্মানি থেকে পরে ভারতে চলে গিয়েছিলেন দুই বোন। তাদের নির্বাসিত জীবনের অনেকটা কাল কাটে সেখানে। শেখ রেহানা পরে লন্ডনে চলে যান এবং সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। আর শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। তার নেতৃত্বে চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
চিত্রবাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ রেহানা ১৫ অগাস্টের পরের ঘটনা তুলে ধরে বলেছিলেন, “প্রথমে আমি বিশ্বাসই করতে পারিনি। ফাঁসির মঞ্চ থেকে বঙ্গবন্ধু ফিরে এলেন, পাকিস্তানিরা তাকে মারল না। অথচ বাংলা-বাঙালির অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য যিনি জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছেন, সেই বাঙালির হাতেই তাকে প্রাণ দিতে হল! সবকিছু মনে হল একটা কারবালা। আমরা এতিম হলাম।”
তিনি আরও বলেছিলেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যায় সাম্রাজ্যবাদী শক্তির হাত তো অবশ্যই আছে, এদেশীয় এজেন্টরাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল। কথায় আছে ঘরের শত্রু বিভীষণ, ঘটনাটা ঠিক সেরকম। বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যার বিচারের দাবিতে এ দেশের নেতৃবৃন্দের যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকা দরকার ছিল, সে ব্যাপারে অনেকেই পিছিয়ে রয়েছেন। এমন অভিযোগ প্রচুর।”
রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও শেখ রেহানা নানাভাবে নানা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেন বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বিভিন্ন সময় বলেছেন। শেখ রেহানার স্বামী ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। তাদের তিন ছেলে-মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একজন এমপি।
ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক একটি আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত এবং আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ট্রাস্টি। ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী লন্ডনে ‘কন্ট্রোল রিস্কস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস সম্পাদক হিসেবে কর্মরত।