রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৫ am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ব্রিটিশ রাজপরিবার, যারা তাদের ইতিহাস এক হাজার বছরেরও বেশি পুরনো বলে বর্ণনা করেন, দুই প্রজন্মের মধ্যে শেষ হয়ে যেতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ লেখক হিলারি ম্যান্টেল। শনিবার ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে দুইবার বুকার পুরস্কার জয়ী প্রথম নারী ঔপন্যাসিক ম্যান্টেল একথা বলেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তাদের ইতিহাস ১০৬৬ সালে উইলিয়াম দ্য কনকোয়ারের ইংল্যান্ড আক্রমণের সময় থেকে শুরু হয় বলে ব্রিটিশ রাজপরিবারের ভাষ্য। তবে এর আগে থেকেই পরবর্তীতে যা ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও ওয়েলস হয়ে উঠেছে সেসব অঞ্চলে বিস্তৃত বিভিন্ন রাজ্য ও রাজত্বের সঙ্গে তাদের মিত্রতাও ছিল বলে দাবি করে তারা। ম্যান্টেল তার ‘উলফ হল’ ট্রিলজির জন্য সমধিক পরিচিত। এই উপন্যাস ত্রয়ীতে কামারের ছেলে টমাস ক্রমওয়েলের ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরির মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠা এবং তার পতন ও মৃত্যুদ-ের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।
ম্যান্টেল জানিয়েছেন, তিনি বর্তমান ব্রিটিশ রানি এলিজাবেথ ও উত্তরাধিকারী যুবরাজ প্রিন্স অব ওয়েলস চার্লসের রাজতন্ত্রের প্রতি আনুগত্যকে শ্রদ্ধার চোখে দেখেন। “আমি মনে করি একজনের পক্ষে যতটা সম্ভব তারা ততটাই ভালো করছে, একজনের পক্ষে যতটা গুরুত্বসহকারে নেওয়া সম্ভব ততটাই নিয়েছে,” টাইমকে বলেন ৬৯ বছর বয়সী এ লেখক। কিন্তু যখন জিজ্ঞেস করা হয়, রাজতন্ত্র আর কতোদিন টিকে থাকবে বলে মনে করেন, উত্তরে ম্যান্টেল বলেন, তার হিসাবে আর মাত্র দুই প্রজন্ম। “আধুনিক বিশ্বে যখন মানুষকে শুধু সেলিব্রেটি হিসেবে দেখা হয় তখন রাজতন্ত্রের অন্তরালে কী চিন্তাভাবনা চলছে তা বোঝা খুব কঠিন,” বলেন তিনি।
রটার্স বলছে, ম্যান্টেলের দৃষ্টিভঙ্গী যদি সঠিক হয় তাহলে এলিজাবেথের পুতি প্রিন্স জর্জ (৮), যে তার দাদা চার্লস (৭২) ও বাবা প্রিন্স উইলিয়ামের (৩৯) পর সিংহাসনের লাইনে তৃতীয় স্থানে আছে, আর রাজা হবেন না। চলতি মাসের প্রথমদিকে ইতালীয় দৈনিক লা রিপাবলিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যান্টেল ইংল্যান্ডকে একটি ‘বিবর্ণ ও ক্লান্ত স্থান’ বর্ণনা করে এটি ‘ক্ষমতার স্মৃতির’ ওপর চলছে বলে মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্যে ব্রিটেনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বের হয়ে যাওয়ার পক্ষে যারা (ব্রেক্সিটিয়ার্স) তাদের অপরিণত ও প্রায়ই হাস্যকর সুবিধাবাদী বলে বর্ণনা করেছেন তিনি।
বিভিন্ন জরিপে ধারণা পাওয়া গেছে, এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্রিটিশরা রাজতন্ত্রের পক্ষে এবং তারা বিশেষভাবে রানিকে শ্রদ্ধা ও তার প্রশংসা করে; কিন্তু মে-তে করা এক মতামত জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটেনের তরুণ নাগরিকরা এখন নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানই পছন্দ করবে। এসব বিষয়ে মন্তব্যের জন্য বাকিংহাম প্যালেসের একজন মুখপাত্র রয়টার্সের জানানো অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সূত্র : এফএনএস