রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:০৫ am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জিকরুল্লাহ হাশিমি নামে তালেবানের এক মুখপাত্র বলেছেন, নারীরা মন্ত্রী হতে পারবেন না, তাদের কাজ জন্ম দেওয়া। তার এই মন্তব্যের পর মানবাধিকার ও নারী অধিকার রক্ষায় তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি তালেবানরা আসলেই মেনে চলবে কিনা তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সংশয় ও উদ্বেগ বেড়ে চলেছে। খবর: ডেইলি মেইল।
নতুন আফগান সরকারে কোনো নারী মন্ত্রী না থাকার কারণ নিয়ে আফগানিস্তানের টোলো নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তালেবান মুখপাত্র সৈয়দ জিকরুল্লাহ হাশিমির এই মন্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছে।
হাশিমি টোলো নিউজকে বলেন, ‘একজন নারী মন্ত্রী হতে পারবেন না, এটা এমন যে আপনি তার ঘাড়ে এমন কিছু রাখলেন যা তিনি বহন করতে পারবেন না। নারীদের মন্ত্রিসভায় থাকা আবশ্যক নয়- তাদের শুধু জন্ম দেওয়া উচিত। আর নারী আন্দোলনকারীরা আফগানিস্তানের সকল নারীর প্রতিনিধিত্ব করে না’।
সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী বলেন, ‘নারীরা সমাজের অর্ধেক’।
হাশিমি উত্তর দেন, ‘কিন্তু আমরা তাদের অর্ধেক মনে করি না। কোন ধরনের অর্ধেক? অর্ধেকটি এখানে ভুলভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অর্ধেকের অর্থ এখানে আপনি তাদের মন্ত্রিসভায় রাখবেন এবং এর বেশি কিছু নয়। কিন্তু আপনি যদি তার অধিকার লঙ্ঘন করেন, তাহলে কোনো সমস্যা নয়। গত ২০ বছর ধরে, এই মিডিয়া, আমেরিকা এবং আফগানিস্তানে তাদের পুতুল সরকার যা বলেছিল, তা কি অফিসে পতিতাবৃত্তি ছাড়া আর কিছু ছিল?’
আপনি সব নারীর বিরুদ্ধে পতিতাবৃত্তির অভিযোগ করতে পারেন না, সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী তাঁর মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন।
‘আমি সব আফগান নারীর কথা বলিনি। রাস্তায় বিক্ষোভ করছে যে দুচারজন নারী, তারা আফগানিস্তানের সব নারীর প্রতিনিধিত্ব করে না। আফগানিস্তানের নারী তারাই যারা আফগানিস্তানের মানুষকে জন্ম দেয় এবং তাদেরকে ইসলামিক নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা দেয়’, বলেন হাশিমি।
নারীরা মন্ত্রী হতে পারবে না, কেন তিনি এমনটা ভাবছেন, এর জবাবে হাশিমি বলেন, ‘একজন নারী যা করে, তাতে তিনি মন্ত্রণালয়ের কাজ করতে পারবেন না। মন্ত্রী বানালে আপনি তার ঘাড়ে এমন কিছু রাখবেন যা তিনি বহন করতে পারবেন না’।
তালেবানরা গত মঙ্গলবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেছে তাতে একজনও নারী নেই।
১৫ আগস্ট কাবুল দখল করার পর থেকে, ২০ বছর আগে নিপীড়নমূলক শাসনের জন্য কুখ্যাত হওয়া তালেবানরা এবার নারীদের কর্ম ও শিক্ষা থেকে বাদ দেওয়ার পুরনো নীতি থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের কথা এবং কাজের মধ্যে কিছু অমিল দেখা দিয়েছে।
তালেবানরা বলেছে, তাদের নতুন শাসনে নারীরা ‘ইসলামের নীতি অনুযায়ী’ কাজ করতে পারে। নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়াশোনা করতে পারবে তবে ছেলেদের সঙ্গে মিশতে পারবে না। ক্লাসরুমে ছেলে আর মেয়েকে আলাদা বসতে হবে। আর তাদেরকে অবশ্যই পুরো দেহ ঢেকে রাখার জন্য আবায়া পোশাক পরতে হবে এবং মুখের বেশিরভাগ অংশও নিকাব দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। সূত্র : অনলাইন