শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:০৩ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
ক্লিনিকে না গেলে ডাক্তাররা খাবে কী ! গুরুদাসপুর টিএইটও

ক্লিনিকে না গেলে ডাক্তাররা খাবে কী ! গুরুদাসপুর টিএইটও

ডেস্ক রির্পোট : চিকিৎসায় অবহেলা, অর্থ আদায়, রোগী ও রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, রোগী বাণিজ্য করে প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও প্যাথলজি থেকে নানা উপঢৌকন গ্রহণ করছেন চিকিৎসকরা।

এসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামকে জানালে তিনি তাদের ওই ভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান। তিনি আরও বলেন, ক্লিনিকে না গেলে ডাক্তাররা খাবে কী!

এমনই নানা অনিয়ম আর রোগী বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে ঢিমেতালে চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে (টিএইচও) জানিয়েও মিলছে না সুফল। কারণ তিনি নিজেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।

টাকা নেওয়ার কোনো নিয়ম না থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের নির্দেশে আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে ১১০ টাকার স্থলে নেওয়া হচ্ছে ২৫০ টাকা। সেখানে ১৪০ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে। সিজারিয়ান রোগীকে আড়াই হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এমনকি সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য অতিরিক্ত ওষুধ আনিয়ে সরিয়ে সেগুলো ফেলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে গ্রামাঞ্চল থেকে চিকিৎসা নিতে আসা ডায়াবেটিস রোগীদের টিকিটের নামে নেয়া হয় ৩০ টাকা করে। গত ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে আইসিডিডিআরবির কর্মকর্তারা এসে টাকা নিতে নিষেধ করলেও থেমে নেই ওই বাণিজ্য। রোগীর বিভিন্ন টেস্টের নামে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ চিকিৎসা নিতে আসা সাধারণ রোগীদের।

অ্যাম্বুলেন্সেও নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। গুরুদাসপুর হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দূরত্ব ৯০ কিলোমিটার। নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া ১ হাজার ৮০০ টাকা। অথচ সেখানে নেয়া হচ্ছে ২ হাজার ২০০ থেকে আড়াই হাজার টাকা। ইতোপূর্বে ৩ হাজার টাকা নেয়া হতো।

এ বিষয়ে যুগান্তরে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ১ হাজার ৮০০ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়। আবার আস্তে আস্তে তা বেড়েই চলেছে। স্থানীয় দুলালের কাছে ড্রাইভার ভাড়া চেয়েছেন ২ হাজার ২০০ টাকা। তিনি বাহিরের গাড়ি নিয়েছেন বলে তিনি জানান।

আউটডোরের দায়িত্বে থাকা ফার্মাসিস্ট মুকুল কখনই আউটডোরে বসেন না। তার স্থলে ওষুধ সরবরাহ করেন ওই হাসপাতালের জুনিয়র মেকানিক সীমান্ত, কম্পিউটার অপারেটর সাহাব উদ্দিন ও অফিস সহায়ক (পিয়ন) কামাল হোসেন। ফার্মাসিস্ট মুকুলের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ায় তার অফিস করতে হয় না বলে জানা যায়।

বর্তমানে আবাসিক চিকিৎসকের দায়িত্বে রয়েছেন টিএইচও নিজেই। অথচ তিনি নাটোর সদরে থাকেন। অফিসে এসে তিনিসহ ডাক্তাররা বিভিন্ন ক্লিনিকে চলে যান।

উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, তার স্ত্রীর পেটের পীড়ার কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলেন। সেখানে ২৫০ টাকা দেওয়ার পর আল্ট্রাসনোগ্রাম করেছেন। সরকারি হাসপাতালে টাকা এত কেন দিতে হবে জানতে চাইলে তার সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন বলে তিনি জানান।

কোনো অপারেশন করা লাগলে পার্শ্ববর্তী ক্লিনিকগুলোতে পাঠানো হচ্ছে। অফিস টাইমে সেখানে গিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসকরা অপারেশন করেন।

এমনকি অফিসে এসেই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম নিজেও বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা সেবাসহ অপারেশন করেন। আবাসিক চিকিৎসক ছাড়াই চলছে হাসপাতালটি। অফিসিয়ালি টিএইচও নিজেই আবাসিক চিকিৎসক। কিন্তু তিনি বেলা ১টার পূর্বেই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। পর্যাপ্ত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসেবা মুখথুবড়ে পড়েছে।

হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য কোনো রোগী চিকিৎসা নিতে আসলে খরচ দিতে পারবে কিনা জেনে সিজার করেন। সেখানে প্রত্যেক সিজারিয়ান রোগীকে গুনতে হচ্ছে আড়াই হাজার টাকা। এরপরও সিজারে সহযোগিতা করার জন্য দিতে হয় বকশিশের নামে পাঁচ-সাতশ টাকা।

করোনাভাইরাসের টিকা নিতে আসা মানুষদের বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ক্যাডার বাহিনী দিয়ে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে বলে শত শত মানুষের অভিযোগ।

সরেজমিন মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা মানুষের ভিড়। হাসপাতালে কর্মরত না এমন লোক টিকা নিতে আসা মানুষের সঙ্গে অশালীন আচরণ করছেন। অশালীন আচরণ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামকে জানালে তিনি তাদের ওইভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, বিভিন্নভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে। মাস্টার রোলে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের বেতনের জন্য ওই টাকা নেয়া হয়। আগে নিলেও বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্সে কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে না। ড্রাইভার নিয়ে থাকলে তার দায়দায়িত্ব তারই। অফিসের সময় ক্লিনিকে যান- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্লিনিকে না গেলে ডাক্তাররা খাবে কী? সারা দেশের চিত্র একই, লিখে লাভ কী। সূত্র : যুগা্ন্তর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.