শনিবর, ২১ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪৩ am

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
দুই দশক ধরে শিক্ষকতা পেশায়, তবুও বর্গা চাষী আনোয়ারুল

দুই দশক ধরে শিক্ষকতা পেশায়, তবুও বর্গা চাষী আনোয়ারুল

ডেস্ক রির্পোট : আনোয়ারুল ইসলাম দুই দশকের বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করেন। ফলে এটাই তাঁর পেশা এবং আয়ের উৎস। কিন্তু তিনি এখন সংসার চালাতে বর্গা চাষ করছেন। রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুবইল উচ্চবিদ্যালয়ের এই শিক্ষক চারজনের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন রীতিমতো।

রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুবইল উচ্চবিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই শিক্ষকতা করেন আনোয়ারুল ইসলাম। কিন্তু ধাপে ধাপে প্রতিষ্ঠানটি নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্তরে এমপিওভুক্ত হলেও এখনো তাঁর পদ এমপিওভুক্ত হয়নি। ফলে তাঁর চাকরি ও প্রতিষ্ঠানের বয়স একই হলেও এখন তাঁর পেশা থেকে উপার্জন প্রায় শূন্য বলা যায়।

ছয় ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আনোয়ারুল ইসলাম তৃতীয়। বাবা আলতাব হোসেন ছিলেন কৃষক। তাঁদের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের ইসলামপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মী নারায়ণপুরে। বিঘা সাতেক ধানি জমি থেকে সংসার চলত তাঁদের। বাবা-ভাইদের সঙ্গে তিনিও কাজ করতেন খেতে। তাতে সংসারের চাকা সচল ছিল। তবে সর্বনাশা পদ্মার পেটে চলে গেছে সহায়-সম্বল। বাস্তুচ্যুত হয়ে ভাইয়েরা যে যার মতো ঠিকানা গড়েছেন। তিনিও আবাস গড়েন রাজশাহীর তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের যোগিশো এলাকায়। সরকারি খাস জমিতে গড়েছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। ১৯৯৯ সালে এলাকায় প্রতিষ্ঠা পায় দুবইল নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়। আনোয়ারুল সেখানে যোগ দেন সহকারী শিক্ষক হিসেবে।

আনোয়ারুলের আশা ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে সঙ্গে একদিন তাঁরও ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। ২০১০ সালে বিদ্যালয়টির নিম্নমাধ্যমিক স্তর এমপিওভুক্ত হলে আশা জাগে। সর্বশেষ ২০২০ সালে এর মাধ্যমিক স্তরও এমপিওভুক্ত হয়। কিন্তু এমপিও বঞ্চিত রয়ে যান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম। এ জন্য অবশ্য নিজের কপালকেই দুষছেন তিনি।

আনোয়ারুলের ভাষ্য, সরকারি বিধি মোতাবেক ২০০৩ সালে তিনি সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পান। শুরু থেকেই ওই পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। এরই ফাঁকে ২০০৯ সালে তিনি পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সমাজবিজ্ঞান (সহকারী শিক্ষক) বিষয়ে উত্তীর্ণ হন। এর পর ২০১১ সালের ৯ আগস্ট সরকারি বিধি মেনে মাধ্যমিক স্তরে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তাঁকে সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হিসেবে এমপিওভুক্তির আবেদন পাঠান প্রধান শিক্ষক। কিন্তু ডিগ্রি স্তরে ইংরেজি বিষয়ে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৩০০ না থাকায় সেই আবেদন বাতিল হয়ে যায়। পরে এমপিওভুক্তির জন্য আনোয়ারুলের আগের নিয়োগ সামনে এনে এমপিও আবেদন পাঠান প্রধান শিক্ষক। ফলে দুই দফা দুই রকম তথ্য দিয়ে আবেদন করায় সেবারও তাঁর আবেদন আটকে যায়।

আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, তিনি একেবারেই ভূমিহীন। মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রীও অসুস্থ। সামান্য জমি বর্গা চাষ করে কোনো রকমে সংসার চালান। সন্তানদের পড়ালেখা, পরিবারের ভরণপোষণ করা এখন তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনা মহামারি সংকট আরও বাড়িয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছেন দুবইল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, শুরু থেকেই তিনি বিদ্যালয়টিতে দায়িত্ব পালন করছেন। মাধ্যমিক স্তরে তাঁর সর্বশেষ নিয়োগ থাকায় নিম্নমাধ্যমিক স্তরে তাঁকে শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়নি। আবার তাঁর সেই নিয়োগের এমপিও শর্ত পূরণ না হওয়ায় বাতিল করে দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক উপপরিচালক। পরের দফায় তাঁর আগের নিয়োগ সামনে এনে আবেদন করা হয়। ওই নিয়োগের সময় এমন কোনো শর্ত ছিল না। কিন্তু দুবার পৃথক আবেদনের কারণে সেটিও বাতিল হয়ে যায়। তাঁর জন্য অনেক চেষ্টা করেও কিছুই করা যায়নি।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রাজশাহী অঞ্চলের উপপরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী জানান, সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) হিসেবে এমপিওভুক্তির জন্য তাঁর শর্ত পূরণ না হওয়ায় আবেদনটি বাতিল করা হয়েছে। এর পর তিনি পুরোনো নিয়োগ দেখিয়ে ফের এমপিওভুক্তির আবেদন করেন। কিন্তু দুবার দুই রকম তথ্য দিয়ে আবেদন করায় বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। ওই শিক্ষক বিষয়টি নিয়ে এসেছিলেন। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মতামত পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। সূত্র : আজকের পত্রিকা

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.