রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:০৬ pm
ডেস্ক রির্পোট : বিচিত্র এই সমাজে নানা মনের মানুষের বসবাস। কখন কার মনে কি যে ইচ্ছা জাগে তা বলাই বাহুল্য। এমনি এক মানুষের বাড়ীতে রোববার দুপুরে গিয়ে দেখা যায় বিচিত্র এক দৃশ্য। সেই মানুষটির নাম আব্দুল বাকি। বাবা-মা, স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করেন কালাই পৌরশহরের থানা পাড়া মহল্লায়। তার বাড়ীতে দেখা যায় এই সমাজের সবচেয়ে বেশী অবহেলিত সম্প্রদায়ের প্রায় ৭ জন তৃতীয় লিঙ্গ হিজরাকে।
বাড়ীর আঙ্গিনায় চেয়ারে বসতে দেওয়া হয়েছে তাদের। সেখানে তাদের জন্য দুপুরের খাবার তৈরিও করা হয়েছে। সাদা পোলাও, সবজি, সালাত, মাছের দো-পেয়াজি, মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসির মাংস। আছে আরও বগুড়ার দই, মিস্টি এবং পেপসি-সেভেনাপের মত ঠান্ডা পানি। এসব খাবার দেখে হিজড়ারাওও বেশ খুশি। আবার তাদের চেহারা হাস্যেজ্জল দেখতে প্রত্যককে দেওয়া হয়েছে একটি করে লাল রংগের গামছা। এসবকিছু মিলে সবাইকে নিয়ে আব্দুল বাকির পরিবারও বেশ খুশি। আজ যেন তার বাড়ীতে ঈদের আনন্দ বইছে।
এসব খাবার, উপহার এবং আব্দুল বাকির পরিবারের অন্যান্য সদস্যেদের ভালবাসা পেয়ে হিজরাদের সরর্দার রিয়া রুবেল বলেন, জন্মের পর যখন থেকে জ্ঞান-বুদ্ধি হয়েছে তখন থেকে আমরা পরিবার-পরিজন থেকে বিতারিত। সব সময় শুধু ঘৃনাই পেয়েছি। সমাজের কেউ যেন আমাদের সহ্য করতে পারেনা। কখনও কখনও মনে হয় এভাবে আর কতদিন। কখনও কোন কিছু নিয়ে ভাবতেও পারিনা। মনে হয় এই সমাজ বড় কঠিন জায়গা। আমাদেরও মন আছে আর আমরাও অন্য মানুষের মতই। অনেক কিছুই এই মনে জাগ্রত হয় কিন্তু নিরুপায় আমরা।
সমাজ কখনওই আমাদের স্বীকৃতি দেয়না। তাইতো আমরা মানুষ সমাজে চলাচল করেই জীবন অতিবাহিত করি। তিনি আরও বলেন, এই সমাজে অনেক বড় বড় মানুষ বসবাস করে আসছে। কোনদিন কেউ একবেলা খাবারের কথা বলাতো দুরের কথা পেটের খুদা মিটাতে তাদের কাছে সাহায্যে নিতে গেলেই তারা আমাদের সাথে পুকুরের মত আচরণ করেন। যত তাড়াতাড়ি তাদের কাছ থেকে চলে গেলেই যেন তারা বেচেঁ যান। আজকে বাকি ভাইয়ের বাড়ীতে খাবার খেয়ে আমরা সবাই আনন্দিত। মনে হচ্ছে আমরা সবাই বাবা-মার বাড়িতে খাবার খেলাম। সমাজ যদি এমন হত, তাহলে আমরাও জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতাম এভাবেই।
আরেক হিজড়া বাবলি বলেন, বেশ কিছুদিন আগে বাকি ভাই আমাদের সবাইকে দাওয়াত করেছে। সেইদিন থেকে আমার মনে খুব আনন্দ বইছে। আজ মনে হচ্ছে যেন আমরা কোন আত্মীয়ের বাড়ীতে দাওয়াত খেতে এসেছি। বাকি ভাইয়ের বাড়িতে খাবার খেয়ে আমি খুশি। পেট ভরে অনেকদিন ধরে খাইনি, আজ ইচ্চে মত খেয়েছি। সাথে উপহার হিসেবে লাল রংঙ্গের একটা গামছাও পেয়েছি।
আব্দুল বাকি বলেন, অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল তাদেরকে একবেলা খাওয়াবো। আজ আমার সেই স্বপ্ন পূরুন হলো। ওরা সমাজে সবচেয়ে বেশী অবহেলিত তাই ওদের কথা মাথায় নিয়ে আমি পরিবারের সাথে আলাপ করেই ওদের দাওয়াত করেছিলাম। ওদের পেয়ে আজ আমরা বেশ আনন্দিত। প্রতি বছর এ উপজেলার সব হিজরাদের একবেলা যেন পেট ভরে খাওয়াতে পারি এমনটা আমার আশা। আজকের তানোর