রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:২৩ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে ডাবল হত্যার রহস্য উম্মোচন করেছে তানোর থানা পুলিশ। মাকে হত্যার ঘটনায় নিহতের একমাত্র ছেলে তালাসকে (১৭) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর ঘটনায় স্ত্রীর প্রেমিক শ্রী জিতেন চন্দ্র পন্ডিত (৪৬) ও তার ভাই শ্রী জয় চন্দ্র পন্ডিত (২১) কেউ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
পৃথক এ দুটি ঘটনায় তানোর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতরা হলেন-মনিরুল ইসলাম (৩৮) ও গৃহবধূ তহুরা বেগম (৩৯)। আজ শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তানোর থানার ওসি রাকিবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পরকীয়া প্রেমের দায়ে মনিরুল ইসলামকে (৩৮) হত্যা করা হয়। মৃতের পিতা মৃত শুকুর উদ্দিন মোল্লা। বাড়ি উপজেলার কামারগাঁ ইউপির দূর্গাপুর গ্রামে।
আর ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে একমাত্র ছেলেকে পড়তে বসতে বলাই মা তহুরা বেগমকে (৩৯) হত্যা করে লাশ বাড়ির বাইরে ফেলে রাখে ছেলে তালাস। নিহত তহুরা বেগম বর্তমানে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার টকটকিয়া মহল্লার বাসিন্দা। তিনি আহম্মদ হাজীর মেয়ে। প্রায় ১৮ বছর আগে তানোর পৌর এলাকায় বুরুজ মহল্লার বাসিন্দা কাইয়ুম মিয়ার সঙ্গে তহুরার বিয়ে হয়।
পুলিশ জানায়, তহুরার স্বামী কাইয়ুম মিয়া তিন বছর আগে হেরোইনসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে আছেন। এরপর থেকে তহুরা তাঁর একমাত্র ছেলে তালাসকে নিয়ে বাপের বাড়িতে ছিলেন। প্রতিদিনের মতো বাড়ির সবাই গত ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ঘুমাতে যান। পরদিন সকালে বাড়ির পাশে মাটিতে তহুরার লাশ দেখতে পান পরিবারের লোকজন। এ ঘটনায় ওই দিনই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে নিহত তহুরার বাবা আহম্মদ হাজী মামলা দায়ের করেন।
মামলার সূত্র ধরে ওসি জানান, মৃত তহুরা ও তাঁর ছেলে এক ঘরে ঘুমাত। তাঁর ছেলে গত বছর এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ফেল করে। ঘটনার রাতে তহুরা তাঁর ছেলেকে পড়তে বসতে বললে সে শুয়ে পড়ে। এতে তাঁর মা তাকে ধমক ও থাপ্পড় দেয়। আরেকটা থাপ্পড় মারতে গেলে ছেলে মাকে ধাক্কা দেয়। এতে পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তহুরা। ঘটনার আকস্মিকতায় ছেলে বিভ্রান্ত হয়ে মায়ের মরদেহ বাইরে রেখে আসে।
অপর ঘটনা নিয়ে ওসি আরও জানান, উপজেলার কামারগাঁ ইউপি’র দূর্গাপুর গ্রামের শ্রী জিতেন চন্দ্র পন্ডিতের স্ত্রী শ্রীমতি কামনা রানী বেশ কয়েক মাস আগে একই গ্রামের নিহত মনিরুলের পরকীয়া প্রেমে আবদ্ধ হন। এহেন ঘটনা পরিবারের লোকজন জানতে পাই। পরে কামনা রানীর ঘরে মনিরুলকে দেখে জিতেন ও তার ভাই জয় পন্ডিত ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে তারা গ্রামের পার্শ্বে তানোর-চৌবাড়িয়া সড়কের ধানক্ষেতে ড্রেনের ভিতরে নিহতের লাশ ফেলে আসে।
তবে, সার্বিক বিবেচনায় দুটি ঘটনায় মৃতের পরিবারকেই সন্দেহ হতে থাকে। ফলে ৩১ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সনাতন চক্রবর্তী, গোদাগাড়ী সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান ছাড়াও আমি এবং তদন্ত কর্মকর্তাসহ তানোর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল বারী মৃত তহুরার ছেলেকে আর অপর ঘটনায় জিতেন চন্দ্র পন্ডিতকে ডেকে নিয়ে সকলে মিলে জেরা করলে হত্যা ঘটনা স্বীকার করে।
পরে রাজশাহীর বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় তারা। আজকের তানোর