শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৮ pm
ডেস্ক রির্পোট :
বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে প্রতিবছর পহেলা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালিত হয়, যা মহান মে দিবস হিসেবে পরিচিত। ১৮৮৬ সালের পর থেকে ১৩৮ বছর পার হয়েছে; কিন্তু ন্যায্য মজুরি ও শ্রমিকদের মানবাধিকারসহ নানা দাবিতে লড়াই শেষ হয়নি আজও। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। অধিকারকর্মীরা বলছেন, দেশের শ্রমিকরা আজও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এখনো শ্রমিকদের জীবন মানের উন্নয়ন হয়নি। নিম্নমানের খাবার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের বসবাস করতে হচ্ছে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে শ্রমিকরা যে মজুরি পায় তাতে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের ফারাক অনেক। মাস শেষে ঋণের বোঝা ঘাড়ে চাপছে। সরকার শ্রমিকদের জন্য যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছে তা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয় বলে দাবি করে আসছেন শ্রমিক প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ বলছে, দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ ঋণ করে চলে। এই ৩০ শতাংশের সিংহভাগই শ্রমিক বলে মনে করা হয়।
গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু বলেন, বর্তমানে শ্রমিকের জন্য নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়। মূল্যস্ফীতির চাপে শ্রমিকরা দিশেহারা। তিনি বলেন, ১৩৮ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো শ্রমিকদের জীবন মানের উন্নয়ন হয়নি। শ্রমিকরা ঘিঞ্জির মধ্যে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করে। এ কারণে তারা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে শ্রমিকরা দাবি আদায়ে সোচ্চার হলে তাদের ওপর নেমে আসে মামলা, হামলা। এমনকি তাদের জীবন দিতে হয়। তারপরও দাবি আদায় হয় না। কর্মক্ষেত্রেও নেই স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ। গায়ে গায়ে লেগে কাজ করতে হয়।
মোশরেফা মিশু বলেন, শ্রমিকদের পক্ষ হয়ে সরকারের সঙ্গে যারা কথা বলবেন, অর্থাৎ শ্রমিক প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হয় মালিকদের পছন্দমতো। মালিকরাই প্রতিনিধি পছন্দ করেন। ওই শ্রমিক প্রতিনিধি শ্রমিকের স্বার্থ না দেখে মালিকের স্বার্থ দেখে। এ কারণে শ্রমিকরা আরও বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, বিশে^র সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশের শ্রমিকের মজুরি কম। এই মজুরিতে শ্রমিকের সংসার চলে না। চিকিৎসা করাতে পারে না। সন্তানদের পড়ালেখা করাতে পারে না। শ্রমিকের জীবন মান যেভাবে উন্নতি হওয়ার কথা ছিল তা কিন্তু হয়নি। তিনি শ্রমিকের মজুরি ২০০ ডলার এবং রেশনিং ব্যবস্থার দাবি জানান। একই সঙ্গে কর্মপরিবেশ উন্নত করারও দাবি জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানা ধরনের যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমান সরকার শ্রমিকবান্ধব সরকার। ‘শ্রমিক মালিক গড়ব দেশ; স্মার্ট হবে বাংলাদেশ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশে মহান মে দিবস উদ্যাপিত হবে। রা/অ